প্রকাশ : ১৯ জুলাই ২০২২, ০০:০০
চাঁদপুরে বাড়ছে করোনার প্রকোপ, ১৫ দিনে শনাক্ত ১১৩
নিয়মিত মাস্ক ব্যবহার ও ভ্যাকসিন নেয়ার উপর গুরুত্ব দিতে হবে : সিভিল সার্জন
চাঁদপুরে ৮ দিনে ৫৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ২০.৭২ শতাংশ। ৯ জুলাই শনিবার থেকে ১৬ জুলাই শনিবার পর্যন্ত ৮ দিন মোট ২শ’ ৭৫ জনের করোনার স্যাম্পল পরীক্ষা করে এ ৫৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়। বাকি ২শ’ ১৮ জনের রিপোর্ট হয় নেগেটিভ। উক্ত ৮ দিনে করোনা শনাক্তশূন্য ছিলো হাইমচর, মতলব উত্তর ও কচুয়া উপজেলা। এর আগের সপ্তাহে ২শ’ ৬০ জনের করোনার স্যাম্পল পরীক্ষা করে ৫৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়। শনাক্তের হার ছিলো ২১.৫৩ শতাংশ। অর্থাৎ গত ১৫ দিনে করোনা আক্রান্ত হন ১১৩ জন। নমুনা পরীক্ষা করা হয় ৫৩৫ জনের। শনাক্তের হার ২১.১২ শতাংশ।
|আরো খবর
ভাষাবীর এমএ ওয়াদুদ আরটি পিসিআর ল্যাব এবং রেপিড অ্যান্টিজেন টেস্টসহ এ ৮ দিনের প্রাপ্ত রিপোর্ট হলো, ৯ জুলাই শনিবার ১ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এদিন মোট ১১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। বাকি ১০টি রিপোর্ট হয় নেগেটিভ। আক্রান্ত ব্যক্তির বাড়ি চাঁদপুর সদর উপজেলায়। ১০ জুলাই রোববার ছিলো পবিত্র ঈদুল আজহা। এদিন নমুনা পরীক্ষার তথ্য বিজ্ঞপ্তিতে পাওয়া যায়নি। ১১ জুলাই সোমবার ১৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তবে কারো করোনা শনাক্ত হয়নি। ১২ মঙ্গলবার ২২ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এদিন ৬২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। বাকি ৪০টি রিপোর্ট হয় নেগেটিভ। আক্রান্ত ২২ জনের মধ্যে চাঁদপুর সদর উপজেলার ১৯ জন, মতলব দক্ষিণ উপজেলার ১ জন, হাজীগঞ্জ উপজেলার ১ জন ও শাহরাস্তি উপজেলার ১ জন। ১৩ জুলাই বুধবার ১৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এদিন ৬৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। বাকি ৫০টি রিপোর্ট হয় নেগেটিভ। পজিটিভ ১৫ জনের মধ্যে চাঁদপুর সদর উপজেলার ১১ জন, মতলব দক্ষিণ উপজেলার ১ জন, ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১ জন ও শাহরাস্তি উপজেলার ২ জন। ১৪ জুলাই বৃহস্পতিবার ১০ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এদিন ৫২ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়। বাকি ৪২টি রিপোর্ট হয় নেগেটিভ। আক্রান্ত ১০ জনের মধ্যে চাঁদপুর সদরে ৬ জন, হাজীগঞ্জ উপজেলার ২ জন, ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১ ও শাহরাস্তি উপজেলার ১ জন। ১৫ জুলাই শুক্রবার ১৫ জনের করোনার স্যাম্পল পরীক্ষা করা হয়। এদিন কারো করোনা শনাক্ত হয়নি। ১৬ জুলাই শনিবার ৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এদিন ৫৪ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়। বাকি ৪৫টি রিপোর্ট হয় নেগেটিভ। আক্রান্ত ৯ জনের মধ্যে চাঁদপুর সদর উপজেলার ৮ জন ও ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১ জন। চাঁদপুর সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সূত্র থেকে আরো জানা যায়, ১৬ জুলাই শনাক্ত হওয়া ৯ জনসহ জেলায় এ পর্যন্ত করোনায় মোট আক্রান্ত হয়েছে ১৭ হাজার ৫শ’ ৩৩ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছে ১৭ হাজার ১শ’ ৭৯ জন। চাঁদপুরে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা ২শ’ ৪৬ জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে। সুস্থ এবং মৃত্যুর সংখ্যা বাদ দিয়ে বাদবাকি ১শ’ ৮ জন বর্তমানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন।
চাঁদপুর সিভিল সার্জন অফিস থেকে ১৬ তারিখ পর্যন্ত প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে জেলায় করোনায় আক্রান্ত এবং মৃতের উপজেলাভিত্তিক সংখ্যা হচ্ছে : চাঁদপুর সদর উপজেলায় আক্রান্ত ৭ হাজার ৬শ’ ৮১ জন, মৃত্যু ১শ’ ১ জন। হাইমচর উপজেলায় আক্রান্ত ৯শ’ ৯ জন, মৃত্যু ৭ জন। মতলব উত্তর উপজেলায় আক্রান্ত ৯শ’ ৬৫ জন, মৃত্যু ১৪ জন। মতলব দক্ষিণ উপজেলায় আক্রান্ত ১৪শ’ ৪ জন, মৃত্যু ১৮ জন। ফরিদগঞ্জ উপজেলায় আক্রান্ত ২ হাজার ২৩ জন, মৃত্যু ৩৫ জন। হাজীগঞ্জ উপজেলায় আক্রান্ত ১৭শ’ ৪৮, মৃত্যু ২৭ জন। কচুয়া উপজেলার আক্রান্ত ৯শ’ ৪২ জন, মৃত্যু ১৩ জন ও শাহরাস্তি উপজেলায় আক্রান্ত ১৮শ’ ৬১ জন, মৃত্যু ৩১ জন।
চাঁদপুরের সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ সাহাদাৎ হোসেন বলেন, চাঁদপুরসহ সারা দেশেই করোনার প্রকোপ বেশি। তবে চাঁদপুরে করোনা পরীক্ষার হার কম। এখন সাধারণ মানুষ জ্বর-সর্দিতে বেশি ভুগলেই করোনা পরীক্ষা করতে আসেন। কিন্তু হালকা জ্বর-সর্দি হলে আসেন না। এজন্যে পরীক্ষা বাড়লে শনাক্তের হার কমে ১০/১২ শতাংশে নেমে আসবে।
তিনি আরো বলেন, করোনা থেকে রক্ষা পেতে হলে প্রত্যেককেই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। যারা এখনো বুস্টার ডোজ নেননি, তাদের বুস্টার ডোজ নিতে হবে। ভ্যাকসিন দিলে সুরক্ষিত থাকা যাবে। আগে শনাক্তের হার ২০/২১ শতাংশ হলে বহু রোগী হাসপাতালে ভর্তি থাকতো। এখন ভ্যাকসিন দেয়াতে খুবই কম সংখ্যক রোগীকেই হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। তাই আমি বলবো, নিয়মিত মাস্ক ব্যবহার ও ভ্যাকসিন নেয়ার উপর গুরুত্ব দিতে হবে। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন মজুদ আছে। তিনি সকলকে ভ্যাকসিন নেয়ার অনুরোধ জানান।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৩০ এপ্রিল চাঁদপুরে প্রথম কোনো ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। জানা যায়, ওই বছর ৫ এপ্রিল ওই তরুণ চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় শ্বশুরবাড়িতে আসেন। পরে নমুনা পরীক্ষায় তার করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়।
২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম ৩ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ওই বছরের ১৮ মার্চ দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।