প্রকাশ : ২৩ জুলাই ২০২৩, ০০:০০
পিতার নৈতিক আদর্শ, অনুপ্রেরণা সর্বোপরি তাঁর রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডের পদাঙ্ককে অনুসরণ করে মানবসেবায় নিজেকে বিলিয়ে দিতে আগ্রহী। ইতিমধ্যেই পিতার নামে ফাউন্ডেশন গঠন করে কাজ শুরু করেছেন। বলছিলাম, ফরিদগঞ্জ পৌরসভার মেয়র, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং ফরিদগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের পাটওয়ারীর একমাত্র কন্যা অ্যাডঃ নাজমুন নাহার অনির কথা।
নাজমুন নাহার অনি এ. কে. পাটওয়ারী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান। এছাড়াও অ্যাডভোকেট, ঢাকা বার অ্যাসোসিয়েশন, সভাপতি, ফরিদগঞ্জ উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগ, মহিলা সম্পাদিকা ফরিদগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগ, সাবেক সহ-সভাপতি আওয়ামী আইন ছাত্র পরিষদ, কেন্দ্রীয় কমিটি, সাবেক সভাপতি আওয়ামী আইন ছাত্র পরিষদ, ধানমন্ডি ল’ কলেজ এবং পরীক্ষক জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।
তাঁর স্বামী গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার গিমাডাঙ্গা গ্রামের। স্বামী শেখ আরাফাতুর রহমান গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক। দাদা শ্বশুর মরহুম শেখ আব্দুল হালিম মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। ফলে তিনি বাবার পরিবার এবং স্বামীর পরিবার আদর্শগতভাবে একস্থানে থাকায় নির্ভার হওয়ার জায়গাটা খুঁজে পেয়েছেন।
অ্যাডঃ নাজমুন নাহার অনি তাঁর পিতার কথা বলতে গিয়ে বলেন, আবুল খায়ের পাটওয়ারী একজন জীবন্ত কিংবদন্তি। পিতা হিসেবে নয়, তাঁর জীবনচরিত পর্যলোচনা করলেও আমার মতো সকলেই এমনটি বলবেন। তিনি ফরিদগঞ্জ থানা ছাত্রলীগ (১৯৭০ খ্রিঃ)-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, ফরিদগঞ্জ থানা যুবলীগ (১৯৭৩ খ্রিঃ)-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, ১৯৭২ সালে দেশ পুনর্গঠনের সময়ে গঠিত রিলিফ কমিটির স্থানীয় চেয়ারম্যান ছিলেন। স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সময়ে সেনাবাহিনীর চাকুরি ছেড়ে দিয়ে দেশসেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেন। মুক্তিযুদ্ধে তিনি ফরিদগঞ্জে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। একইভাবে স্বাধীনতা যুদ্ধ পরবর্তী সময়েও তিনি দেশ পুনর্গঠনে নিজেকে বিলিয়ে দেন। সুযোগ ছিলো নিজের জন্যে অনেক কিছু করার। কিন্তু কখনোই কিছু করেননি। ফলে একজন আদর্শবান রাজনীতিবিদের সন্তান হিসেবে আমি তাঁর আদর্শকে বুকে ধারণ করে এগিয়ে চলছি। কারণ আমার পিতা জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহচর্য পেয়ে আজ ফরিদগঞ্জ পৌরসভার মেয়র। ইতিমধ্যেই তিনি পৌরসভাকে প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত করেছেন। ইউজিআইআইপি প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। তাঁর মেয়াদকালেই পৌরবাসী পূর্ণ নাগরিক সুবিধা লাভ করবে।
নাজমুন নাহার অনি বলেন, আমার মা তানিয়া খাতুন ফরিদগঞ্জ বঙ্গবন্ধু সরকারি ডিগ্রি কলেজের লাইব্রেরিয়ান। একমাত্র ভাই রাহুল পাটওয়ারী বাংলাদেশ পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত। আমিও আমার স্বামী ও দুই কন্যা সন্তান নিয়ে ভালো আছি। যেহেতু রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য আমি, তাই রাজনীতি ছাড়তে পারিনি। রাজনীতির হাতেখড়ি পিতার হাত ধরে। তাঁর অনুপ্রেরণায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার আদর্শে ছাত্রজীবন থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলাম। জামায়াত-বিএনপির নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে সবসময় মাঠে সোচ্চার ছিলাম। ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে পরিচালিত গ্রেনেড হামলার প্রতিবাদে রাজপথে সোচ্চার ছিলাম।
তিনি জানান, রাজনীতি করার ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালে উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব আমাকে দেয়া হয়। ইতিমধ্যেই আমি নেতা-কর্মীদের উজ্জীবিত করে উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করেছি। ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদগঞ্জ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী, ২০১৯ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দল মনোনীত প্রার্থী এবং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থীদের বিজয় নিশ্চিত করতে নেতা-কর্মীদের নিয়ে মাঠে ছিলাম। একইভাবে ২০২১ সালের পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় মেয়র প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করতে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান নির্বাচনী পর্যবেক্ষক হিসাবে নিরলসভাবে কাজ করে বিজয় লাভ করি। অদ্যাবধি সাংগঠনিক ধারাবাহিকতায় ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
রাজনীতির পাশপাশি অ্যাডভোকেট হিসেবে নাজমুন নাহার অসহায় ও দুঃস্থ মানুষজনকে আইনী সেবা দেয়ার চেষ্টা করছেন চাঁদপুরে এবং ঢাকায়। এছাড়া সামাজিক কর্মকাণ্ড করার জন্যে তার পিতার নামে এ. কে. পাটওয়ারী ফাউন্ডেশন স্থাপন করে ইতিমধ্যে কাজও শুরু করেছেন। আার্থিক অনুদান, বস্ত্র বিতরণ, খাদ্য সহায়তা প্রদান অব্যাহত রয়েছে। তিনি বলেন, মেয়র পিতাকে সহযোগিতা করার মানসে আমার নেতা-কর্মীদের মাধ্যমে পৌরসভায় আসা ভিজিএফ, টিসিবিসহ সকল ধরনের সহযোগিতা পৌর এলাকার সাধারণ মানুষজনের হাতে হাতে পৌঁছানোর কাজটি নিশ্চিত করেছি। ফলে যেসব এলাকার মানুষ কখনোই সরকারি সুযোগ-সুবিধা পায়নি, তারাও নিজেরাই এখন প্রাপ্তির বিষয়টি স্বীকার করছে।
তিনি বলেন, কাজ করতে গেলে ভালো-মন্দ অনেক কিছুরই মুখোমুখি হতে হয়। কিন্তু উদ্দেশ্য মহৎ হলে এবং নীতিতে অটল থাকলে দিনশেষে কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া নিশ্চিত। তাই আমি নিরলস কাজ করে চলেছি। আশা করছি, মানবসেবার যেই ব্রত নিয়ে রাজনীতি ও সমাজ সেবায় নেমেছি, একদিন সফলতার মুখ দেখবো।