রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৫ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০

অলিম্পিক নিয়ে প্রত্যাশা

সুধীর বরণ মাঝি

অলিম্পিক নিয়ে প্রত্যাশা
অনলাইন ডেস্ক

খেলাধুলা সুখ আনে, সম্মান আনে, ধন আনে, খ্যাতি, আনে অনেক কিছুই। ক্রীড়াতেই বিশ্ব জয়, ক্রীড়াতেই শক্তি। সদ্যসমাপ্ত হলো বিশ্বের সর্ববৃহৎ ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অলিম্পিক গেমস্। ১৮৯৬ সালে যার আধুনিক যাত্রা শুরু হয় ব্যারেন পিয়ারে দ্য কুবার্তিন। ১৮৯৬ সালে ১৩ দেশের ৩১১ জন ক্রীড়বিদের ৯টি ইভেন্টের ক্রীড়া প্রতিযোগিতার মাধ্যমে যার শুভসূচনা হয় গ্রীসের রাজধানী অ্যাথেন্সে। প্রতি চার বছর পর পর এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। ক্রীড়াজগতের এই মহাযজ্ঞে আমাদের অংশগ্রহণ শুরু হয় ১৯৮৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের লসঅ্যাঞ্জেলস্ অলিম্পিকে অ্যাথলেটিকসের সাইদুর রহমান ডনের অংশগ্রহণের মাধ্যমে। ১৯৮৪ সাল থেকে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অলিম্পিক গেমস্ অংশগ্রহণ শুরু হয় এবং বর্তমানে প্রতিটি অলিম্পিকে অংশগ্রহণ করে যাচ্ছি। কিন্তু পদক অধরাই রয়ে গেছে। আমারা অলিম্পিকের প্রতিটি আসরেই দেখি আমাদের থেকে কম জনসংখ্যাার এবং দরিদ্র দেশও অলিম্পিকে অংশগ্রহণ করে পদক জয় করে নেয়। ওরা যদি পারে তবে আমরা কেনো পিছিয়ে।

বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে মনে হয় আমরা অনেকটাই পিছিয়ে। এতো এতোর পরও আমরা কেনো বারবার ব্যর্থ হাতে ফিরছি। এক ক্রিকেট ছাড়া আমাদের বড় কোনো সাফল্য আছে বলে মনে হয় না। তবে আর্চারী এবং শুটিংয়ের ক্ষেত্রেও আমাদের কিছু সাফল্য রয়েছে এবং তা-ও আবার অনিয়মিত। জনপ্রিয় ফুটবল আজ প্রায় মৃত। ফুটবল ফেডারেশনসহ অন্যান্য ফেডারেশন মৃতপ্রায়। তারা নামকাওয়াস্তে কিছু টুনার্মেন্ট আয়োজন করেই ক্ষান্ত থাকে। কয়েক বছর পর্যন্ত ট্যালেন্টহান্ট দেখি কিন্তু এর বড় কোনো সাফল্য চোখে পড়ে না।

আমাদেরকে সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে এগুতে হবে এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে। এমনটা যেনো না হয়, পরিকল্পনা করার পর পরী ডানা মেলে উড়ে চলে গেলো আর কল্পনা একাকী বসে থাকলো। তাহলে কিন্তু ফলাফল পদকশূন্যই থেকে যাবে!

ক্রীড়াক্ষেত্রে আমাদের বাজেটও পর্যাপ্ত। বাজেট আছে তার ব্যবহারও আছে তবে ফলাফল কেনো শূন্য এই প্রশ্নের মূল্যায়ন করতে হবে। আমরা কেনো পারলাম না, আমাদের ব্যক্তিগত ও দলীয় ঘাটতি খুঁজে বের করতে হবে। কীভাবে কাজ করলে আমরা পদক পেতে পারি। ব্যর্থতার গ্লানি এবং আগামীদিনকে জয় করার প্রত্যয় নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। দেশকে নিয়ে ভাবতে হবে, দেশের সম্মান নিয়ে ভাবতে হবে। শুধুমাত্র নিজেকে নিয়ে ভাবলেই চলবে না।

মিডিয়ার কল্যাণে আমরা বিভিন্ন সময়ে দেখেছি ফেডারেশনের সাথে সম্পৃক্ত কর্তব্যক্তিদের দুর্নীতি, লুটপাট আর স্বজনপ্রীতির খবর। ফেডারেশনের কর্তাব্যক্তিরা নিজের এবং স্বজনদের বাইরে কোনো কিছু চিন্তা করতে পারে না বলেই আজকে আমাদের এ অবস্থা। জেলা ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থাগুলোতে দলাদলী, কোন্দল, আত্মীয়করণ, স্বেচ্ছাচারিতা প্রভৃতি লেগেই আছে। ফেডারেশন এবং জেলা ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থাগুলোতে অতি তোষামদকারী একশ্রেণির লোক সবসময় ঘুরঘুর করতে দেখা যায়। ক্রীড়ার উন্নতি এবং সাফল্যের জন্যে এসব তোষামদকারী থেকে সাবধান হতে হবে। নিরাপদ দূরত্বও বজায় রাখতে হবে।

আমাদের খেলার মাঠগুলো বিভিন্নভাবে দখল হয়ে যাচ্ছে। তৃণমূল পর্যায়ে নিয়মিত লেখাধুলার কোনো ব্যবস্থা নেই। নেই পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা এবং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। আমাদের এ দৈন্যদশা ঘোচাতে হলে ফেডারেশনগুলোকে ঢেলে সাজাতে হবে। যারা সত্যিকারের ক্রীড়ানুরাগী তাদেরকে নিয়ে কাজ করতে হবে। আমরা যদি শতভাগ সততা এবং নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে মাঠ পর্যায় থেকে খেলোয়াড় বাছাই করতে পারি তবে সেদিন হয়তো খুব বেশি দূরে নয় যেদিন আমরা বড় কোনো আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা থেকে স্বর্ণপদক নিয়ে দেশে ফিরবো। কর্তাব্যক্তিরা যদি আমি এবং আমার এই ভাবনা থেকে ঊর্ধ্বে উঠতে না পারেন তবে যতোই পরিকল্পনা করা হোক, যতোই বরাদ্দ দেয়া হোক কাজের কাজ কিছুই হবে না। দেশের প্রতি অগাধ ভালোবাসা, গভীর দেশেপ্রেম এবং দায়িত্ব নিয়ে কাজ করলে সুফল আসবেই।

খেলোয়াড় বাছাই ক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতি পরিহার করতে হবে। খেলাধুলায় বাজেটের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। সাধ্যের মধ্যে মানসম্মত প্রশিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে। প্রশিক্ষকদের কাজের স্বাধীনতা যেমন দিতে হবে তেমনি জবাবদিহিতাও থাকতে হবে। খেলোয়াড়দের নিয়মিত শারীরিক এবং মানসিক পরিচর্যা করতে হবে। যেখানে যতোটুকু সম্ভব খেলোয়াড়দের আর্থিক দায়িত্ব নিতে হবে। খেলতে হবে দেশের জন্যে, সফলতা আসবে নিজের জন্যে। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নিয়মিত খেলাধুলার আয়োজন করতে হবে। খেলোয়াড়দেরকেও সর্বোচ্চ উজার করে দিয়ে খেলার কমিটমেন্টের জায়গায় নিতে হবে।

* সুচিন্তা বিভাগে লিখুন আপনিও...

প্রিয় পাঠক, সুচিন্তা বিভাগে লিখুন আপনিও। সমসাময়িক বিষয়াবলি নিয়ে লেখা পাঠান আমাদের ঠিকানায়।

লেখা পাঠানোর ই-মেইল : [email protected]

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়