প্রকাশ : ২৪ মে ২০২৩, ০০:০০
চাঁদপুর মুখে আনলেই চাঁদ সওদাগরের কথা মনে পড়ে যায়। কত ইতিহাস, কত বৈচিত্র্যপূর্ণ গল্প মনের আঙ্গিনায় দোল খেলে। চোখের সামনে ভেসে বেড়ায় চাঁদপুর প্রেসক্লাবের পেছনের দৃশ্যকল্পের কথা। বেঁদে পরিবারের সারি সারি ডিঙ্গির বহর জানান দেয় কত শত ইতিহাস। মনে পড়ে ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ উপন্যাসের কথা। আহা জীবন। আহা চরিত্র। মনে হয়, লেখক বুঝি চাঁদপুরের বেঁদে পরিবার আর বড় স্টেশন, হরিণাঘাট জেলে পরিবারের কথা লিখেছেন!
চাঁদপুরের সবচেয়ে ভালো লাগে আমার কাছে ত্রি-নদীর মোহনা। বড় স্টেশনের নদীর ছলাৎ ছলাৎ সুর আমাকে প্রেমে পড়তে হাত বাড়িয়ে ডাকে। অতঃপর বালুচর। গরিবের কক্সবাজার। আসা-যাওয়ার ক্ষণে কার না চোখে পড়ে জেলেরা জাল থেকে মাছ বের করে! জীবন্ত রূপালি ইলিশের দুই একটা লাফ সৌভাগ্যবান মানুষ দেখে। বাজারের দাম থেকে দ্বিগুণ চওড়া দামে কিনেও কেউ কেউ।
চাঁদপুরের বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান থাকলেও আমি শুধু ফরিদগঞ্জের লোহাগড়ের মঠ, কড়ৈইতলী বাবু বাড়ি, রূপসার জমিদার বাড়ি, সাহেবগঞ্জের নীলকুঠি, ভাটিয়ালপুরের জিনগাছের উপর শত শত বছরের তাল গাছ, কালিবাজারের খাজুর গাছের সাত মাথা ভ্রমণ করেছি। আমার কাছে সবচেয়ে রহস্যজনক এবং ভালো লেগেছে জিনগাছের উপর তাল গাছ এবং নীলকুঠিরের সুড়ঙ্গ পথ।
রাত্রিকালীন ভ্রমণের জন্য হাইমচরের বিকল্প কিছু আছে কি না আমার জানা নেই। চাঁদের অকৃপণ আলো আর নদীর তীরের সারি সারি নারিকেল গাছ। আহা কী মনোহর দৃশ্য! বাতাসে নারিকেল পাতার বাহারী নাচ চোখ জুড়িয়ে যায়। নদীর আছড়েপড়া ঢেউ যেনো বাঁশির সুর তোলে। আবার পথের দুপাশে একটু পর পর পান পাতার বরক বা পানবাগানের দৃশ্য দেখলে কার না মনে থাকে! অবশ্য অমাবস্যার রাতে একটু ভয় লাগে। চারদিকে নিঝুম নীরবতা আপনাকে আল্লাহর নাম, জ্বীন, শয়তান, ভূত-পেত্নীর নাম স্মরণ করিয়ে দিবেই।