প্রকাশ : ২২ নভেম্বর ২০২১, ০০:০০
(৪র্থ পর্ব ॥ পূর্ব প্রকাশিতের পর)
সকালবেলা খালি পেটে সমতল স্থানে চিৎ হয়ে শুয়ে নাভীর উপর আঙ্গুল দ্বারা চাপ দিলে যদি হৃদকম্পনের মতো অনুভব হয়, তাহলে বুঝতে হবে অন্ত্রগুচ্ছ ঠিক আছে। অতিরিক্ত বায়ুর চাপে অথবা অতিরিক্ত ওজন তুললে অন্ত্রগুচ্ছ স্থানচ্যুত হয়। যাদের পাকস্থলী ও লিভারে সমস্যা এবং পিত্তের দোষ আছে তাদেরও নাভিচক্র সঠিক স্থানে থাকে না। এই অবস্থা স্পন্দন নাভীর মধ্যে না হয়ে আশপাশে হয়।
অন্ত্রগুচ্ছ সরে গেলে কি কি সমস্যা হয়
* অন্ত্রগুচ্ছ উপরে সরে গেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হয়। দীর্ঘদিনের কোষ্ঠকাঠিন্যের ফলে অর্শ্ব, মলদ্বারে গ্যাজ এমনকি মলাশয়ে ক্যান্সার সৃষ্টি হয়।
* অন্ত্রগুচ্ছ নিচে সরে গেলে পাতলাপায়খানা উদরাময় ঘটায়। ঔষধ দ্বারা এটির সাময়িক উপশম হয় কিন্তু স্থায়ী নিরাময় সম্ভব নয়।
* মেয়েদের মাসিকের সময় তলপেটে ব্যথা হয়।
দীর্ঘদিন অন্ত্রগুচ্ছ সঠিক স্থানে না থাকলে বুকে-পিঠে ব্যথা হতে পারে যাকে হৃদযন্ত্রের ব্যথা বলে অনেক সময় ভুল করা হয়।
অন্ত্রগুচ্ছের অন্যান্য পরীক্ষা ও ঠিক করার উপায়
* রোগীকে চিৎ করে শুয়ে দিন। দু হাত শরীরের দু পাশে সোজা করে রাখুন। পায়ের আঙ্গুলিগুলো খাড়া করে উপরের দিকে রাখুন। যদি উভয় পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুল বরাবর থাকে তবে অন্ত্রগুচ্ছ সঠিক আছে। যদি বৃদ্ধাঙ্গুলি দুটি ছোট বড় হয় তাহলে অন্ত্রগুচ্ছ সঠিক স্থানে নেই (চিত্র-২৩)।
২৩নং চিত্র অনুযায়ী এক হাতে রোগীর পায়ের গোড়ালীতে চাপ দিয়ে অপর হাত দ্বারা বৃদ্ধাঙ্গুল দুটি সমান করে ধরে উপরের দিকে টান দিন। এ পদ্ধতি কয়েক বার পুনরাবৃত্তি করেন যতোক্ষণ উভয় পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলি বরাবর না হয়।
* ২৪নং চিত্রে যেভাবে দেখানো হয়েছে সেভাবে হাতের তালু দুটি পাশাপাশি রেখে ১নং রেখাগুলো মিলান। যদি ৪নং রেখাগুলো মিলে যায় তবে অন্ত্রগুচ্ছ সঠিক আছে। যদি ৪নং রেখাগুলো না মিলে তাহলে অন্ত্রগুচ্ছ সঠিক স্থানে নেই (চিত্র-২৪)।
২৫নং চিত্রের মতো আপনার ডান হাতের তালুটি বাম হাতের কনুইয়ের জোড়ায় উপরে রেখে সেখানে চেপে ধরুন। তারপর এক ঝাপটায় বাম হাতটি উপরে তুলে বৃদ্ধাঙ্গুলটি কাঁধ স্পর্শ করার চেষ্টা করেন। একইভাবে ডান হাতেও করুন। এই প্রক্রিয়াটি প্রতিদিন সকালবেলা খালি পেটে পাঁচবার করে করুন (চিত্র-২৫)। অত্যধিক গ্যাসের কষ্ট হলে অথবা অন্ত্র দুর্বল হলে অন্ত্রগুচ্ছ ঠিক করলেও বারবার সরে যায়। এই ক্ষেত্রে ২৬নং চিত্রের অনুরূপ উভয় পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলে সেলাই করার সুতার চেয়ে একটু মোটা সুতা হালকাভাবে সাত-আট পাক পেচিয়ে গিঁট দিয়ে রাখুন। তিনদিন রেখে দিলে অন্ত্রগুচ্ছ ঠিক হয়ে যাবে। তবে অত্যধিক ব্যথা হলে খুলে ফেলুন (চিত্র-২৬)।
অধ্যাপক কে. এম. মেছবাহ্ উদ্দিন : বিভাগীয় প্রধান, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ফরিদগঞ্জ বঙ্গবন্ধু সরকারি ডিগ্রি কলেজ। ফরিদগঞ্জ, চাঁদপুর।
[পরের পর্ব আগামী সংখ্যায় প্রকাশিত হবে]