বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫  |   ২১ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ১৬ জুন ২০২৪, ০০:০০

শ্বেতপ্রদর রোগের কারণ ও প্রতিকার

হাকীম মোঃ মিজানুর রহমান
শ্বেতপ্রদর রোগের কারণ ও প্রতিকার

আমাদের মা-বোন-মেয়েরা এসব রোগ হলে কারও কাছে বলতে চায় না। লুকিয়ে রাখতে চায়। কিন্তু এসব রোগে ভুগতে ভুগতে যখন শেষ পর্যায়ে চলে যায় তখন তাদের স্বাস্থ্যগত দিকটা অনেক খারাপের দিকে চলে যায়। তাই এসব রোগ হলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন এবং দ্রুত চিকিৎসা নিবেন।

শ্বেতপ্রদর স্ত্রী যৌনাঙ্গের একটি উপসর্গ। মাসিক ঋতুস্রাব ব্যতীত যে কোনও বয়সে স্ত্রীদের যোনিপথে গাঢ় সাদা আঠালো তরল পদার্থ নির্গত হওয়াকে শ্বেতপ্রদর বলা হয়। বয়সভেদে এ রোগ কয়েক প্রকার হতে পারে।

অল্প বয়সে শ্বেতপ্রদর : সাধারণত পেটের ক্রিয়া খারাপ হওয়া, তীব্র ও ঊষ্ণ প্রস্রাব এবং জরায়ুতে চুলকানি ইত্যাদি কারণে অল্প বয়সে শ্বেতপ্রদর হতে পারে।

অবিবাহিত মেয়েদের শ্বেতপ্রদর : সাধারণত দুঃখ-কষ্ট, ভয় এবং দুর্বলতার কারণে হায়েজের পূর্বে শ্বেতপ্রদর দেখা দেয়।

বিবাহিত বা জন্মদাত্রির শ্বেতপ্রদর : সাধারণত জরায়ুর চুলকানি, ক্ষত বা ফাটা এবং পুরাতন গনোরিয়ার কারণে শ্বেতপ্রদর হয়ে থাকে।

নবাবিবাহিত নারীদের শ্বেতপ্রদর : এ ধরনের শ্বেতপ্রদর সাধারণত জরায়ু প্রদাহ হতে সৃষ্টি হতে পারে।

বৃদ্ধদের শ্বেতপ্রদর : এ ধরনের শ্বেতপ্রদর সাধারণত জরায়ুর ক্যান্সার, অর্বুদ (টিউমার) ও প্রদাহের কারণে হয়ে থাকে।

শ্বেতপ্রদর-এর রস নিঃসরণ স্থানভেদে কয়েকপ্রকার হয়ে থাকে

যোনিদ্বারের প্রদর : এতে যোনিদ্বারের বাহ্যিক অংশ হতে রস নিঃসরণ হয়ে থাকে।

যোনিপথের প্রদর : এতে যোনিপথের অভ্যন্তরীন অংশ হতে রস নির্গত হয়।

জরায়ুর ঘায়ের প্রদর : এতে জরায়ুর ঘার বা মুখ হতে রস নির্গত হয়ে থাকে।

জরায়ুর প্রদর : এতে জরায়ু হতে সরাসরি রস নির্গত হয়ে থাকে।

কারণ

শ্বেতপ্রদর সাধারণত জরায়ু এবং তার পার্শ্ববর্তী অঙ্গসমূহের কারণে সৃষ্টি হয়ে থাকে। যৌবন প্রাপ্ত হওয়া অর্থাৎ গর্ভ ও ঋতুস্রাবের পূর্বাবস্থা, জরায়ু, যোনিদ্বার ও ডিম্বকোষের এস্তেকা, অর্বুদ, ফোড়া, প্রদাহ, ফুসকুড়ি, পুঁজ ও অর্শের কারণে এবং রক্তহীনতা, যক্ষা, ক্রোনিক নেফ্রাইটিজ ও সাধারণ দুর্বলতা ইত্যাদি কারণে শ্বেতপ্রদর হয়ে থাকে। সিফিলিস, গনোরিয়ার জীবাণু দ্বারা সারভিস্ক ও ভ্যাজাইনা আক্রান্ত হওয়া, সন্ধিবাত, দুঃখ-কষ্ট, রাগ-ক্ষোভ, ভয়-ভীতি ইত্যাদি কারণে শ্বেতপ্রদর হয়ে থাকে।

ট্রাইকোমোনাস ভ্যাজাইনালিস নামক জীবাণু দ্বারা ভ্যাজাইনা আক্রান্ত হওয়া, ভ্যাজাইনাটিস বা অধিক বয়স্কদের ভ্যাজাইনার প্রদাহ, প্রোলাপস বা গর্ভপাতের জন্য পেশারী ও কড়া এন্টিসেপটিক লোসন ও গর্ভনিরোধ বড়ি এবং ডুস দেওয়াজনিত ভ্যাজাইনার প্রদাহ, আখলাত বা ধাতুরস বৃদ্ধির কারণে এবং অল্প বয়সে বিবাহ, অত্যাধিক সহবাস ইত্যাদি কারণে শ্বেতপ্রদর হয়ে থাকে।

লক্ষণসমূহ

সাধারণত পাতলা এবং গাঢ় হলুদ বা সাদা বর্ণের পূঁজের মতো রস নির্গত হয়ে থাকে। যোনিপথ চুলকায়, মুখমণ্ডল হলুদ বর্ণ হয়, দেহ দুর্বল ও অলস হয়ে থাকে। কোমর, ঊরুদেশ এবং মাথা ব্যথা হয়। হাতপা জ্বালাপোড়া করে। পরিপাকশক্তি দুর্বল হয়ে কখনও কোষ্ঠ ও দাস্ত দেখা দেয়। প্রস্রাবের বেগ বার বার ও অনিয়মিত হয়। মিযাজ খিটখিটে হয় এবং স্থানভেদে স্রাব বিভিন্ন প্রকার হয়ে থাকে। যেমন-

* যোনিদ্বার থেকে নির্গত হলে স্রাব পিচ্ছিল, সাদা এবং সামান্য চিকচিকে ভাব ও গন্ধযুক্ত হয়।

* জরায়ু হতে নির্গত হলে ডিমের শ্বেতাংশের মতো হয় এবং কোন কোন সময় হলুদ হয়ে থাকে।

* যদি জরায়ু ঘার হতে স্রাব নির্গত হয় তবে পরিস্কার লবণাক্ত ডিমের শ্বেতাংশের মতো হয়। জরায়ু রসের চেয়ে জরায়ু ঘারের রস বেশি পিচ্ছিল হয়। এ ধরনের স্রাব সন্তান জন্মদাত্রীদের বেশি দেখা যায়।

* ক্যান্সারের কারণে হলে প্রথমে স্রাব পানির মতো তরণ এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে নির্গত হয়। অতপর মাংস ধোয়া পানির মতো লাল বর্ণ ধারণ করে।

* জরায়ুতে ফোড়া বা দানার কারণে হলে স্রাবের পরিমাণ কম হয়। যন্ত্রণা ও চুলকানির কারণে অস্থির হয়ে যায়।

* গনোরিয়ার কারণে হলে স্রাব গাঢ় হয় এবং পূঁজ মিশ্রিত ও দুর্গন্ধযুক্ত হয়। এ ছাড়া রোগিনীর জরায়ু ও বস্তিদেশে ব্যথা অনুভব হয়।

* অর্শের কারণে হলে বলি দেখা যায় এবং স্রাবের রং লাল বা কালো হয়ে থাকে।

* জরায়ু থেকে স্রাব নিঃসরণ হলে স্রাব পর্যাপ্ত পরিমাণে বের হয় এবং কোনও জ্বালা যন্ত্রণা হয় না।

প্রতিকার

* হাইজিন মানে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকাটা সবচেয়ে বড় প্রতিকারের উপায়।

* বেশি করে পানি খেতে হবে

* প্রতিবার প্রস্রাবের পরে জায়গাটা ভালোমতো ধুয়ে নিতে হবে

* শুকনা রাখতে হবে

* ভিজা রাখা যাবে না

* ছত্রাক সংক্রমণ এ লিউকোরিয়া তৈরি করে। যেমন ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজাইনোসিস। ১৫ থেকে ৪৫ বয়সি নারীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঘটে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়