প্রকাশ : ৩০ আগস্ট ২০২১, ০০:০০
বাঙালির কীর্তিমান সন্তান সুকুমার রায় ফোঁড়া নিয়ে নেশ রসিকতা করেছেন ‘পাকাপাকি’ কবিতায়। কিন্তু যার ফোঁড়া হয় সে-ই জানে পাকা ফোঁড়ার টনটনে ব্যথার তাণ্ডব কেমন। ফোঁড়া হলো ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণজনিত কারণে সৃষ্ট প্রদাহ ও ক্ষত যাতে পুঁজ হয় এবং আক্রান্ত অংশ লালচে হয়, ব্যথাযুক্ত হয়, গরম হয়ে যায়, ফুলে যায় এবং নাড়াচাড়া করানো কঠিন হয়। ফোঁড়ার তাণ্ডবে কেঁপে কেঁপে জ্বর আসে। দীর্ঘদিনের ফোঁড়া হলে জ্বর নিম্ন তাপমাত্রার হয় এবং সদ্যজাত ফোঁড়ার কারণে তীব্র ও উচ্চমাত্রার জ্বর হয়। স্টেপটোকক্কাস ও স্ট্যাফাইলোকক্কাস জাতীয় ব্যাক্টেরিয়া ফোঁড়ার জন্যে দায়ী।
ফোঁড়ার ধরন
ফোঁড়ার ধরন দুই রকমের। স্কিন বা ত্বকের ওপর ফোঁড়া বা বাহ্যিক ফোঁড়া, শরীরের অভ্যন্তরীণ অঙ্গের ফোঁড়া যা খালি চোখে বুঝা যায় কিন্তু দেখা যায় না। আবার ফোঁড়ার অবস্থান অনুযায়ী ফোঁড়া বিবিধ রকম হতে পারে। যেমন : ব্রেইন অ্যাবসেস, ব্রেস্ট অ্যাবসেস, লিভার অ্যাবসেস, বার্থোলিন গ্ল্যান্ড সিস্ট, অ্যানাল অ্যবসেস, পেরিনিয়াল অ্যাবসেস, পেরিওডন্টাল অ্যাবসেস, লাংস্ অ্যাবসেস, স্পাইনাল কর্ড অ্যাবসেস, ইন্টেসটাইনাল অ্যাবসেস, গ্লুটিয়াল অ্যাবসেস ইত্যাদি।
অ্যাবসেস-এর ঝুঁকি উপাদান
* অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস
* অপর্যাপ্ত ঔষধ সেবন
* দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস
* শিরায় মাদক ব্যবহারকারী
* যক্ষ্মা
*এইডস্
*ক্যান্সার ইত্যাদি।
অ্যাবসেস-এর পরীক্ষা
* রক্তের রুটিন পরীক্ষা
* রক্ত শর্করার মান যাচাই
* এএসও টাইটার পরিমাপ
* বুকের এক্স-রে
* আল্ট্রাসনোগ্রাম।
অ্যাবসেস-এর চিকিৎসা
উপযুক্তভাবে অ্যান্টিবায়োটিক সেবন যেমন : ফ্লুক্লক্সাসিলিন, সেফিরিউক্সিম, সিপ্রোফ্লক্সাসিন জাতীয় ঔষধ সেবন
সিরিঞ্জ দিয়ে পুঁজ অপসারণ। বেশি বড় হলে অপারেশন করে ড্রেইন করা।
গ্রামে একটা প্রবাদ চালু আছে। ফোঁড়া হলে তার নাকি টাকাকড়ি আসে। সে প্রবাদের ভিত্তি কী তা জানি না। তবে এটা জানি নিজের স্বাস্থ্য সচেতনতা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা জরুরি।
* চিকিৎসাঙ্গন বিভাগে লেখা পাঠানোর
ই-মেইল : [email protected]