রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২২ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ০৪ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০

ন্যাচারাল থেরাপি

আকুপ্রেশার : বিভিন্ন অঙ্গের সমস্যা ও চিকিৎসা

আকুপ্রেশার : বিভিন্ন অঙ্গের সমস্যা ও চিকিৎসা
অধ্যাপক কে. এম. মেছবাহ্ উদ্দিন

(৭ম পর্ব ॥ পূর্ব প্রকাশিতের পর)

মস্তিষ্ক : করোটির মধ্যে অবস্থিত কেন্দ্রীয় ¯œায়ুতন্ত্রের স্ফিত অংশ হলো মস্তিষ্ক। মস্তিস্ক নিরেট নয়। এর মধ্যে বিভিন্ন ফাঁকা প্রকোষ্ঠের মতো থাকে। এই প্রকোষ্ঠগুলোকে ভেন্ট্রিকল বলে। এগুলোকে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ ভেন্ট্রিকল নামে অভিহিত করা হয়। ভেন্ট্রিকলগুলো স্পাইনাল ফ্লুইড নামক তরলপদার্থ দ্বারা পূর্ণ থাকে। প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মস্তিষ্কের আয়তন ১৫০০ ঘন সেন্টিমিটার এবং ওজন ১.৩৬ কেজি প্রায়। এটি একটি স্বয়ংক্রিয় পারমানবিক শক্তি উৎপাদন কেন্দ্র। এতে প্রায় ১০ বিলিয়ন (১ হাজার কোটি ) নিউরন বা ¯œায়ুকোষ থাকে। রক্ত যখন এর মধ্য দিয়া সঞ্চালিত হয় তখন জৈব বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়। এই বিদ্যুতের ধণাত্মক প্রবাহ মস্তিষ্কের প্রথম ভেন্ট্রিকল দ্বারা প্রবাহিত হয় এবং ঋণাত্মক প্রবাহ দ্বিতীয় ভেন্ট্রিকল দ্বারা প্রবাহিত হয়। ফলে ¯স্নায়ু কোষগুলো উত্তেজিত ও সক্রিয় হয়ে দেহের অভ্যন্তরীণ কার্যসম্পাদন করে এবং দেহে প্রাণশক্তি সঞ্চালিত করে। রক্তে লবণের মাত্রা বেড়ে গেলে অথবা দুঃশ্চিন্তার কারণে নিউরন কোষগুলো শক্ত হয়ে যায়। ফলে হৃদপি- থেকে রক্ত মস্তিষ্কে পৌঁছাতে অতিরিক্ত চাপের প্রয়োজন হয়। এই অতিরিক্ত চাপই হলো উচ্চ রক্তচাপ। উচ্চ রক্তচাপের সাথে যদি মানসিক দুঃশ্চিন্তা যোগ হয়, তখন চুলের মতো সুক্ষ ¯স্নায়ু কোষগুলো ছিঁড়ে যায়। ফলে ব্রেনস্ট্রোক হয়।

মস্তিষ্কের সমস্যাগুলো সাধারণত মাথা ব্যথা, স্মৃতিশক্তি দুর্বলতা ও ¯স্নায়ুবিক দুর্বলতা এবং ভ্রুণের মস্তিষ্কের সমস্যা

মাথা ব্যথা ও এর মূল কারণ : দেহের বাড়তি তাপ : জন্ডিস, অবিবেচিতভাবে কৃমির ঔষধ সেবন (অতিরিক্ত কৃমির ঔষধ লিভারকে অকেজো করে দেয়) অথবা অন্য কোনো কারণে জীবন রক্ষাকারী অঙ্গ লিভার ধীরগতিসম্পন্ন হলে পিত্তরস উৎপাদনও ধীরগতিতে হয়। ফলে পাকস্থলি থেকে অর্ধ-পরিপাককৃত খাদ্য সম্পূর্ণরূপে এসিডমুক্ত না হয়েই ক্ষুদ্রান্ত্রে প্রবেশ করে। এটি পাকস্থলি ও অন্ত্রের বায়ুকে উত্তপ্ত করে। এই উত্তপ্ত বায়ু মাথা ও মুখের ফাঁকা জায়গা দখল করে। দিনের এই উত্তপ্ত বায়ু যখন ফ্যানের বাতাস, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রুম অথবা রাত্রের শীতল হাওয়ার সংস্পর্শে আসে তখন পানিতে পরিণত হয়। এই পানি যখন মস্তিষ্কের ¯œায়ুর সংস্পর্শে আসে তখন মাথা ব্যথা দেখা দেয়।

মাইগ্রেনের সমস্যা : কোনো কারণে অগ্নাশয় গ্রন্থি অধিক সক্রিয় হলে রক্তে গ্লুকোজ ঘাটতি দেখা দেয়। ফলে মস্তিষ্ক ও মস্তিষ্কের তরলে (স্পাইনাল ফ্লুইড) প্রয়োজন মতো গ্লুকোজ পৌঁছতে পারে না। এ কারণে প্রায়ই মাথার এক পাশের্^ ব্যথা করতে থাকে। এই ব্যথা দূর করার জন্যে নিয়মিত বেদনানাশক ঔষধ সেবণ করতে হয়। যা কিডনীর সমস্যা ও অন্ত্রে আলসার হওয়ার কারণ হয়।

চোখের সমস্যা : চক্ষু লেন্সের পেছনে অক্ষি গোলক সংলগ্ন ¯œায়ু তন্ত্রের তৈরি গোলাপী পাতলা আবরণকে রেটিনা বলে। কোনো বস্তু থেকে আগত আলোক রশ্মি চোখে পড়লে রেটিনায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং রেটিনার উপর এর একটি প্রতিবিম্ব সৃষ্টি হয়। চক্ষু ¯œায়ু মস্তিস্কে এটির দর্শন অনুভূতি জাগায়। যারা নিকটের বস্তু দেখতে ভালো দেখতে পারে কিন্তু দূরের বস্তু ভালো দেখতে পারে না। এদের ক্ষেত্রে দূরের বস্তুর প্রতিবিম্ব রেটিনার পেছনে গঠিত হয়। এক্ষেত্রে মস্তিষ্কের ¯œায়ু উপর চাপ পরে। ফলে মাথার দু পাশের্^ ব্যথা করে। কখনো কখনো অতিরিক্ত মানসিক পরিশ্রম করলে মাথা ব্যথা হতে পারে।

মাথা ব্যথার চিকিৎসা : বাড়তি তাপজনিত মাথাব্যথা। প্রথমে শরীরের বাড়তি তাপ বের করে দিতে হবে। হজমশক্তি বাড়াতে হবে। ২, ৫, ২২,২৩ ও ২৭নং বিন্দুতে দিনে দুবার চাপ দিতে হবে।

মাইগ্রেনের সমস্যাজনিত মাথা ব্যথা : ২, ৫ ও ২৫নং বিন্দুতে দিনে দুবার চাপ দিতে হবে। প্রতিরাত্রে এক পিচ পেঁয়াজ কপালে বেঁধে রাখলে অল্প কয়েক দিনের মধ্যে মাইগ্রেনের সমস্যা ভালো হয়ে যাবে ইনশ্াআল্লাহ।

চোখের সমস্যাজনিত মাথাব্যথা : ২, ৫ ও ৩৫নং বিন্দুতে দিনে দুবার চাপ দিতে হবে।

অতিরিক্ত মানসিক পরিশ্রম করার ফলে মাথাব্যথা হলে ৯নং বিন্দুতে দু মিনিট চেপে ধরে রাখলে মাথাব্যথা তাৎক্ষণিক ভালো হয়ে যায়। (চলবে)

অধ্যাপক কে. এম. মেছবাহ্ উদ্দিন : বিভাগীয় প্রধান, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ফরিদগঞ্জ বঙ্গবন্ধু সরকারি ডিগ্রি কলেজ। ফরিদগঞ্জ, চাঁদপুর।

[পরের পর্ব আগামী সংখ্যায় প্রকাশিত হবে]

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়