রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২১ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ২০ ডিসেম্বর ২০২১, ০০:০০

হৃৎপিণ্ড ও মন ভালো রাখতে করণীয়

ডাঃ ফারহানা মোবিন

হৃৎপিণ্ড ও মন ভালো রাখতে করণীয়
অনলাইন ডেস্ক

বর্তমানে করোনাভাইরাসের জন্যে সারা পৃথিবীর মানুষ দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। দুঃখ, কষ্ট, দুশ্চিন্তা আমাদের হৃৎপি-ে ও মনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই সুস্থ থাকতে হৃৎপি- ও মন ভালো রাখতে হবে। হৃৎপি- আমাদের দেহের ভীষণ জরুরি একটি অঙ্গ। আমাদের সারা শরীরে রক্ত সরবরাহ করে হৃৎপি-। আমরা যখন ঘুমিয়ে থাকি, তখনো কাজ করতে থাকে। মায়ের পেটে থাকাকালীন সময় থেকেই আমাদের হৃৎপি- তৈরি হওয়া শুরু হয়। বাঁ পাশের বগলের গোড়া থেকে তিন বা চার ইঞ্চি দূরে আমাদের হৃৎপি-ের অবস্থান। হৃৎপি-ের কাজ অনেকটা পানির পাম্পের মতো। পানির পাম্প বিশাল একটা দালানের নিচে থেকে সবচেয়ে ওপরের অংশে পানি সরবরাহ করে। আমাদের দেহে হৃৎপি- নামের জরুরি অঙ্গটি ঠিক সেই কাজটিই করে। পায়ের আঙুল থেকে মাথা পর্যন্ত রক্ত পৌঁছে দেয়। পানির পাইপলাইনে পানির ময়লা জমলে পানি সঠিকভাবে চলাচল করতে পারে না। ঠিক তেমনি আমাদের শরীরের শিরা-উপশিরায় ময়লা জমলে রক্ত সঠিকভাবে চলতে পারে না। রক্তের ময়লা বলতে রক্তের মধ্যে জমে যাওয়া চর্বিকে বোঝায়। রক্তনালিতে জমে থাকা চর্বি তৈরি হয় দেহের তুলনায় অধিক পরিমাণে চর্বিজাতীয় খাবার, মাদক দ্রব্য, ধূমপান থেকে। বয়স ও উচ্চতা অনুযায়ী ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারলে হৃৎপি-ের ওপর অতিরিক্ত চাপ তৈরি হয়। তখন হৃৎপি- সারা দেহে সঠিকভাবে রক্ত সরবরাহ করতে পারে না। পরিণামে তৈরি হয় হৃৎপি-ের নানাবিধ অসুখ, যা কখনোই কাম্য নয়।

হৃৎপি-ের অসুখের জন্য দায়ী বিষয়গুলো হলো

১. অতিরিক্ত মানসিক চাপ ও অক্লান্ত পরিশ্রম।

২. ভয়ানক দুশ্চিন্তা, হতাশা।

৩. বয়স ও উচ্চতা অনুযায়ী ওজন বেশি।

৪. দীর্ঘ বছর সঠিকভাবে ঘুমের অভাব।

৫. কোনো ওষুধের দীর্ঘ বছরের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।

৬. অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ।

৭. কিডনির জটিল অসুখ।

৮. মাদকদ্রব্য সেবন ও অতিরিক্ত ধূমপান।

৯. পারিবারিক ইতিহাস অর্থাৎ রক্তের আত্মীয়স্বজনদের হৃদরোগ থাকলে, আপনার হৃদরোগ হতে পারে। যদি আপনি সঠিকভাবে নিজের যতœ না নেন।

১০. কোনো জটিল রোগের জন্যও হৃৎপি-ের অসুখ হতে পারে।

১১. হৃৎপি-ের অপারেশন বা কোনো অসুখের পর চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে না চলা।

হৃৎপি- ভালো রাখার জন্য করণীয়

১. বয়স ও উচ্চতা অনুযায়ী ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

২. অতিরিক্ত মিষ্টি ও চর্বিজাতীয় খাবার, মাদকদ্রব্য, ধূমপান পরিহার করতে হবে।

৩. ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

৪. মানসিক চাপ কমাতে নিয়মিত নিজেকে খুশি রাখা উচিত।

৫. মেডিটেশন মানসিক প্রশান্তি দেয়। হৃৎপি- ভালো রাখার জন্য মানসিক প্রশান্তি ভীষণ জরুরি।

৬. পারিবারিক ইতিহাসে কারও হৃৎপি-ের অসুখ থাকলে আগে থেকেই সচেতন হোন।

৭. হার্টের অসুখ থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। নিয়মিত চেকআপ করানো ভীষণ জরুরি।

৮. প্রতিবছর পুরো দেহের চেকআপ করান। আমাদের দেহ বিশাল এক কারখানা। একটা মেশিন দুর্বল হলে আশপাশের মেশিনে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।

৯. অবশ্যই পুষ্টিকর খাবার খাবেন। নিয়মিত দুই লিটার পানি ভীষণ জরুরি।

১০. সুযোগ হলেই হাঁটবেন। করোনাভাইরাসের জন্য লকডাউনে থেকে ঘরের কাজগুলো নিয়মিত করার চেষ্টা করবেন (ঘর পরিষ্কার করা, কাপড় ধোয়া)।

১১. সঠিক সময়ে ঘুমানোর চেষ্টা করবেন।

১২. সিঁড়ি বেয়ে ওপরে ওঠার চেষ্টা হার্টের জন্য ভালো। তবে হৃদরোগ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী জীবনযাপন করবেন।

১৩. হতাশা দূর করতে নিজেকে সৃষ্টিশীলতা ও মানবতার কল্যাণে নিয়োজিত রাখবেন। ভালো কাজ আমাদেরকে দেয় আত্মতৃপ্তি। মন ভালো থাকলে হার্ট ভালো থাকবে। আমরা যখন ঘুমিয়ে থাকি, তখনো আমাদের হৃৎস্পন্দন সচল থাকে। আমাদের সবার উচিত হার্ট ভালো রাখার উপায়গুলো মেনে চলা এবং অন্যদের সচেতন করা।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়