মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪  |   ২৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   মিশরে ঈদে মিলাদুন্নবীর ঐতিহ্য ‘আরুসাত-আল-মোলিদ’ : জন্মদিনের পুতুল
  •   'বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের চেতনার রাজনৈতিক শক্তির বিকাশ অপরিহার্য'
  •   চাঁদপুরের ২৪তম পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব
  •   ফরিদগঞ্জে ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে শোভাযাত্রা
  •   ওয়াইফাই সংযোগ দিতে গিয়ে প্রাণ গেল যুবকের

প্রকাশ : ২৭ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

স্থানীয় ক্রীড়া সংগঠক ভাবনা-৩

খেলোয়াড়রা রাজনৈতিকভাবে কারো পক্ষের না হয়ে তারা সার্বজনীন হলে ক্রীড়াঙ্গন আরো বেশি সমৃদ্ধ হবে

-----ক্রীড়া সংগঠক আবদুল্লাহ আল মামুন

শামীম হাসান ॥
খেলোয়াড়রা রাজনৈতিকভাবে কারো পক্ষের না হয়ে তারা সার্বজনীন হলে ক্রীড়াঙ্গন আরো বেশি সমৃদ্ধ হবে

দরিদ্র পরিবারের সন্তান হিসেবেই বেড়ে ওঠা আব্দুল্লাহ আল মামুনের৷ ঢালাওভাবে খুব একটা খেলাধুলার সুযোগ পেতেন না তিনি। পড়াশোনার পাশাপাশি ছোটবেলা থেকে বাবার চায়ের দোকানে বাবাকে সহযোগিতা করতেন। এর কোনো এক ফাঁকে কোনোভাবে সুযোগ মিললেই ছুটে যেতেন খেলার মাঠে। ইচ্ছেমতো বন্ধুদের সাথে হৈ হুল্লোড় করে মেতে উঠতেন ফুটবল কিংবা ক্রিকেট খেলায়। ছোটবেলা থেকেই তিনি ফুটবলে সবচাইতে বিচক্ষণ ছিলেন গোলরক্ষক হিসেবে গোলপোস্ট সামলাতে। ক্রিকেটে একজন ভালো ব্যাটসম্যান হিসেবে বেশ পরিচিত ছিলেন সে সময়ে। সময়ের পালাবদলে নিজে হয়ে উঠেন একজন ক্রীড়া সংগঠক ও একজন ভালো ধারাভাষ্যকার। এ যাবৎকাল নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার পাশাপাশি পাইকপাড়া বন্ধু মহলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন ও আঞ্চলিক টুর্নামেন্ট পাইকপাড়া গোল্ডকাপের সফলতম চারটি আসরের সফল আয়োজন করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন একজন দক্ষ বিচক্ষণ ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে। ২০১৯ সাল থেকে পাইকপাড়া অঞ্চলে নানামুখী ক্রীড়া আয়োজনে ছিলেন সক্রিয় ভূমিকায়। দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের ক্রীড়াকণ্ঠের এ পাতায় থাকছে প্রতিভাবান ক্রীড়া সংগঠক আবদুল্লাহ আল নোমানের ক্রীড়াঙ্গনের ভাবনাগুলো।

ক্রীড়াকণ্ঠ : কেমন আছেন?

আবদুল্লাহ আল মামুন : আল্লাহর অশেষ মেহেরবানিতে ভালোই আছি।

ক্রীড়াকণ্ঠ : কার হাত ধরে ক্রীড়াঙ্গনে পথচলা শুরু হয়েছিল?

আবদুল্লাহ আল মামুন : কোনো ব্যক্তি বিশেষের হাত ধরে ক্রীড়াঙ্গনে আসা না হলেও ২০১৮ সালে পাইকপাড়া বন্ধু মহল স্পোর্টিং ক্লাব পুনঃপ্রতিষ্ঠার পর থেকেই ক্রীড়াঙ্গনে শুরু হয় আমার সরব পথচলা।

ক্রীড়াকণ্ঠ : ক্রীড়া সংগঠক হয়ে ওঠার পেছনে মানুষটি কে ছিলেন?

আবদুল্লাহ আল মামুন : ব্যক্তি বিশেষ তেমন কারো হাত ধরে ক্রীড়াঙ্গনে আসা হয়নি। তবে উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক নুরুন্নবী নোমান ভাইকে দেখে সব সময় উৎসাহিত হতাম ক্রীড়াঙ্গন নিয়ে কাজ করার। মনে মনে স্বপ্ন আঁকতাম নিজ এলাকায় ক্রীড়াঙ্গনকে ঢেলে সাজানোর জন্যে। আমাদের উপজেলায় জিয়া ভাই, শাহরিয়ার রোকন ভাই , আনোয়ার ভাইয়ের খেলাধুলার যে কোনো আয়োজন নিয়ে তাদের প্রচেষ্টা ও পরিশ্রম দেখে উৎসাহিত হয়েছি বারংবার।

ক্রীড়াকণ্ঠ : ফুটবল এবং ক্রিকেটে প্রিয় খেলোয়াড় কে?

আবদুল্লাহ আল মামুন : ফুটবলে ছালেহ'র খেলা বেশি উপভোগ করি। আর রাজনৈতিক মতাদর্শকে বাদ দিলে ক্রিকেটে ক্যাপ্টেন মাশরাফি আমার প্রিয় খেলোয়াড়।

ক্রীড়াকণ্ঠ : দেশের আইকন খেলোয়াড়দের রাজনীতিতে আসা ঠিক কিনা। এ বিষয়ে আপনি কী মনে করেন?

আবদুল্লাহ আল মামুন : খেলোয়াড়রা রাজনৈতিকভাবে কারো পক্ষের না হয়ে তারা সার্বজনীন হলে ক্রীড়াঙ্গন আরো বেশি সমৃদ্ধ হবে বলে মনে করি। খেলোয়াড়রা কোনো দলের নয় বরং খেলোয়াড়রা সমগ্র বাংলাদেশের এবং পুরো বাঙালি জাতির।

ক্রীড়াকণ্ঠ : ক্রীড়াঙ্গনে সবচেয়ে সুখকর স্মৃতি কী ?

আবদুল্লাহ আল মামুন : আমার আহ্বানে পাইকপাড়া গোল্ডকাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্টে স্থানীয় সবাইকে এক স্রোতধারায় এনে একটি সফলতম টুর্নামেন্ট সম্পন্ন করা ক্রীড়াঙ্গনে আমার সবচাইতে বড়ো সুখের স্মৃতি।

ক্রীড়াকণ্ঠ : ক্রীড়াঙ্গনে কষ্টের বা বিভীষিকাময় কোনো স্মৃতি আছে কিনা?

আবদুল্লাহ আল মামুন : বড়ো কোনো ক্রীড়াযজ্ঞ আয়োজন করতে গিয়ে খুব কাছের মানুষদের যখন সমালোচনার মুখোমুখি হই, তখন সেই বিষয়টি নিজেকে ভীষণভাবে ব্যথিত করে৷ খেলাধুলা নিয়ে একবার তো মনের কষ্টে ফেসবক পোস্টে লিখেছিলাম 'বিদায় পাইকপাড়া বন্ধুমহল ক্লাব'। কিন্তু সময়ের পালাবদলে খেলাধুলা থেকে নিজেকে বেশি দিন দূরে রাখতে পারিনি। ফের ছুটে এসেছি ক্রীড়াঙ্গনে।

ক্রীড়াকণ্ঠ : আঞ্চলিক ক্রীড়াঙ্গনে সার্বিক ভাবে আরো বেশি গতিশীল করতে কোন্ কোন্ বিষয় নিয়ে কাজ করা প্রয়োজন বলে আপনি মনে করেন ?

আবদুল্লাহ আল মামুন : ক্রীড়াঙ্গন ধ্বংস করার জন্যে একটি কুচক্রী মহল সব সময় সরব আছেন। ক্রীড়াঙ্গন নিয়ে যারা কাজ করে আমাদের সকলের প্রচেষ্টা হোক এদের কোনোভাবেই এসব অপকর্মের সুযোগ না দেওয়া।

ক্রীড়াকণ্ঠ : খেলোয়াড়, ক্রীড়া সংগঠক দুটি বিষয়ের মাঝে কোন্ জায়গাটিতে নিজেকে সবচেয়ে সেরা ভাবে উপস্থাপন করতে পারেন ?

আবদুল্লাহ আল মামুন : যখন আমি দেখি কোনো মাঠের খেলায় দর্শকের একাংশ বলে উঠেন আব্দুল্লাহ কই, তার ধারাভাষ্য কই..? তখন নিজের মধ্যে ভীষণভাবে অন্যরকম এক ভালোলাগা কাজ করে। খেলোয়াড়, সংগঠক থেকে মাইক্রোফোনের ধারাভাষ্যে নিজে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। মাইক্রোফোন হাতে আমাদের চাঁদপুর জেলার বাইরে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর মসঠইয়ের টেপটেনিস ওয়ার্ল্ড কাপে ধারাভাষ্য দেয়ার সুযোগ হয়েছিল। যে টুর্নামেন্টটিতে দেশের বাইরের বহু খেলোয়াড় খেলে থাকেন।

ক্রীড়াকণ্ঠ : আমাদের উপজেলা থেকে রেজা-রাফিদের মতো জাতীয় মানের খেলোয়াড় বের করে আনার জন্যে কী করা দরকার বলে আপনি মনে করেন?

আবদুল্লাহ আল মামুন : সমন্বয়হীনতা, গ্রুপিংয়ের কারণেও অনেক খেলোয়াড় হারিয়ে যাচ্ছে। খেলাধুলাকে সিন্ডিকেট মুক্ত করে সবাই প্রধান্য দেয়ার মনমানসিকতা তৈরি করতে পারলেই ফরিদগঞ্জ থেকেই জাতীয় মানের খেলোয়াড় বের করা সম্ভব। সাথে তো অবশ্যই যথাযথ নিয়মে প্রচুর পরিমাণে অনুশীলন করা দরকার।

ক্রীড়াকণ্ঠ : বর্তমান ইন্টারনেটের যুগে শিশু-কিশোরদের খেলাধুলায় ফেরানোর জন্যে কী করা প্রয়োজন বলে আপনি মনে করেন?

আবদুল্লাহ আল মামুন : এটা আমাদের জন্যে একটি বড়ো বিপদ সংকেত যে, ছোটদের রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। ক্রীড়াঙ্গনে ডাকা হচ্ছে না। ছোটদের বেশি বেশি করে ক্রীড়াঙ্গনমুখী করা দরকার।

ক্রীড়াকণ্ঠ : পুরো উপজেলাবাসীকে ক্রীড়ামুখর করে তুলতে কী উদ্যোগ নেওয়া দরকার?

আবদুল্লাহ আল মামুন : আমাদের পাইকপাড়া গোল্ডকাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের মতো বড়ো বড়ো আয়োজনের মধ্য দিয়ে ক্রীড়াঙ্গনের পরিব্যাপ্তি আরো বাড়বে বলে মনে করি। উপজেলার সর্বত্র খেলার পরিবেশ তৈরির জন্যে বড়ো বড়ো ক্রীড়া আয়োজনের উদ্যোগ নেয়া দরকার।

ক্রীড়াকণ্ঠ : নিজ উপজেলার ক্রীড়াঙ্গন আরো বেশি সমৃদ্ধ করার জন্যে আপনার আহ্বান কি থাকবে ?

আবদুল্লাহ আল মামুন : আমার আহ্বান থাকবে সকল ক্রীড়া সংগঠনের নেতৃত্বে যারা আছেন তারা মুষ্টিমেয় দায়িত্ব ধরে না রেখে নতুন নেতৃত্বকে সুযোগ করে দিতে হবে। তবেই আরো বৃহৎভাবে খেলাধুলার পরিবেশ সৃষ্টি হবে।

ক্রীড়াকণ্ঠ : ধন্যবাদ আপনাকে।

আবদুল্লাহ আল মামুন : আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ এবং বিশেষ কৃতজ্ঞতা দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ কে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়