শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।
  •   রাষ্ট্রীয় পদে আসীন হচ্ছেন খবরে আসামিপক্ষে শুনানি করলেন না সমাজী।

প্রকাশ : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

জেলার ২টি ক্রিকেট একাডেমী, ২টি ফুটবল একাডেমী যদি খেলোয়াড় বের করতে পারে, তাহলে জেলা ক্রীড়া সংস্থা কেনো পারবে না ?
চৌধুরী ইয়াসিন ইকরাম ॥

স্বপ্ন ছিলো একজন ভালো ক্রিকেটার হবেন। বেশ কিছুদিন পাড়ার ও স্কুলের বন্ধুদের সাথে ক্রিকেটও খেলেছেন। পরবর্তীতে ক্রিকেট ছেড়ে ফুটবলকেই আপন করে নিয়েছেন। আর এই ফুটবল খেলার কারণেই দেশের জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক ফুটবলার হিসেবে মুকুল নামটি এখনও দেশের ক্রীড়াঙ্গনে পরিচিত একটি নাম। ছোটবেলা থেকেই বাবার হাত ধরে মাঠে যেতেন। বাবাও একসময় একজন ভালো ফুটবলার ছিলেন। আর তাঁর হাত ধরেই নিজেও স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় ফুটবল দলের হয়ে মাঠ মাতিয়েছেন। বিভিন্ন সময়ে দলের নেতৃত্ব দিয়ে দলকে শিরোপা জিতিয়েছেন। আশির দশকে এ দেশের ফুটবলের জোয়ারের সময় তিনি বর্তমান বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতিসহ দেশসেরা অনেক ফুটবলারের সাথে খেলেছেন একসাথে। প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে খেলেছেন ফুটবল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াবস্থায় অনেক সিনিয়র ও জুনিয়রের সাথে ছিলো তার গভীর সম্পর্ক। যাদের মধ্যে অনেকেই বর্তমানে দেশের শীর্ষ পর্যায়ের রাজনীতিবিদ। খেলার মাঠ থেকে বিদায় নিলেও এখনও দেশের বিভিন্ন ফুটবল দলের এবং খেলোয়াড়দের খোঁজ-খবর নিচ্ছেন নিয়মিতভাবে। তিনি সকলের পরিচিত মুখ বতর্মানে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মোস্তফা হোসাইন মুকুল। তাঁর বাবা মরহুম আবুল হোসেন ভূঁইয়া ও মা মরহুমা বেগম বেলায়েতুননেচ্ছা। ২ ভাই ও ৬ বোনের মধ্যে তিনি পঞ্চম। তাঁর নিজ বাড়ি চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজার ব্রিজ লাগোয়া। তিনি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে স্ত্রী ও ছেলেমেয়েকে নিয়ে বসবাস করেন। একজন রাইটব্যাক ফুটবলার হিসেবে ছিলো সারাবাংলায় তাঁর পরিচিতি। চাঁদপুর সরকারি কলেজের ৭৫ বছর পূর্তি ও পারিবারিক কাজে মাত্র ২ সপ্তাহের জন্যে তিনি বাংলাদেশে আসেন। স্ত্রীর নাম লায়লা নাজরীন, ১ ছেলে অধিভু ও ১ মেয়ে তানাজ। ছেলে ও মেয়ে আমেরিকায়ই পড়াশোনা করছে।

মোস্তফা হোসাইন মুকুল তার স্কুলজীবন শুরু করেন লেডি প্রতিমা মিত্র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। বর্তমানে যেই জায়গায় তাঁর পৈত্রিক নিবাস, সেই জায়গা থেকে নদীপথে একসময় স্কুলে আসা-যাওয়া করতে হতো। বাসার সামনের ডাকাতিয়া নদী পার হলেই স্কুল ছিলো বলে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণীতে ওই বিদ্যালয়েই পড়াশোনা করেন। ওই সময় তাঁর সাথে চাঁদপুর প্রেসক্লাব ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এবং চাঁদপুর কণ্ঠের প্রতিষ্ঠাতা, সম্পাদক ও প্রকাশক আলহাজ্ব অ্যাডঃ ইকবাল-বিন-বাশার, আবু নাসেরসহ অনেকেই পড়াশোনা করেন। প্রাইমারী স্কুলজীবন শেষ করে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হন চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজার মধুসূদন উচ্চ বিদ্যালয়ে। এই বিদ্যালয়ে পড়াবস্থায় পায়ের খেলা ফুটবলের সাথে জড়িয়ে পড়েন। পরবর্তীতে এসএসসি পাস করে ইন্টারমিডিয়েটে ভর্তি হন চাঁদপুর কলেজে। খেলাধুলারত অবস্থায় চাঁদপুর কলেজ থেকে পাস করে খেলার সুবিধার জন্যে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে খেলেছেন বিভিন্ন সময়।

এবার চাঁদপুর এসেই যোগ দিয়েছিলেন চাঁদপুর সরকারি কলেজের প্রোগ্রামে চাঁদপুর স্টেডিয়ামে। চাঁদপুরে আসার পর সাবেক ও বতর্মান বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ক্রীড়াকণ্ঠের এ প্রতিবেদকের সাথে শনিবার সকালে পুরাণবাজারে তাঁর নিজ বাসায় আলাপচারিতায় তিনি তুলে ধরেন ফুটবল খেলা সহ বিভিন্ন বিষয়। তার কথাগুলো পাঠকদের জন্যে হুবহু তুলে ধরা হলো।

ক্রীড়াকণ্ঠ : আস্সালামুআলাইকুম, কেমন আছেন?

মোস্তফা হোসাইন মুকুল : জি¦ ওয়ালাইকুম আস্সালাম, আমি সকলের দোয়ায় ভালো আছি।

ক্রীড়াকণ্ঠ : অনেকদিন পর দেশে আসলেন, এসেই যোগ দিলেন নিজ কলেজ চাঁসকের অনুষ্ঠানে?

মোস্তফা হোসাইন মুকুল : হ্যাঁ অনেকদিন পর আসলাম। চাঁদপুর সরকারি কলেজের প্রোগ্রামে যোগ দিতে পেরে ভালোই লেগেছে। অনেকদিন পর পুরানো বন্ধুদের সাথে দেখা হয়েছে। সরাসরি সকলের সাথে দেখা ও যোগাযোগ হলো। খুব ভালো লেগেছে। তবে অনুষ্ঠানের আয়োজকদের আরো কিছু গোছানোভাবে প্রোগ্রামটি করার দরকার ছিলো। বিশেষ করে নিয়মণ্ডশৃঙ্খলাসহ কিছু কিছু জিনিসের প্রতি খেয়াল রাখা দরকার ছিলো। অনেক সিনিয়র এবং এ কলেজে পড়ুয়া অনেক শিক্ষার্থীই প্লাটিনাম জুবিলির এ অনুষ্ঠানে কষ্ট পেয়ে মাঠ ছেড়ে গেছেন। অনেককেই দেখা গেছে প্রথম দিন অনেকটা আনন্দের সাথে যোগ দিলেও পরেরদিন কিন্তু তাদেরকে ঠিকমতো দেখা যায়নি।

ক্রীড়াকণ্ঠ : ফুটবল খেলা শুরু হয় কবে থেকে?

মোস্তফা হোসাইন মুকুল : আমি পুরাণবাজার মধুসূদন হাইস্কুলে পড়াশোনাকালীনই ফুটবলের সাথে পুরোপুরি জড়িয়ে পড়ি। ক্লাস সেভেনে পড়াবস্থায়ই নিয়মিত ফুটবল অনুশীলন করতাম। হাইস্কুলে সেভেনে পড়াবস্থায় আন্তঃস্কুল ফুটবল দিয়ে খেলা শুরু হয়। তখন বাবুরহাট স্কুল, গনি মডেল, ডিএন হাই স্কুলের সাথে ফুটবলে মধুসূদনের লড়াই হতো। তখনকার সময়ে ডিএন স্কুল ও গনি স্কুলের অনেক ফুটবলারই ছিলো। যারা পরবর্তীতে দেশের বিভিন্ন ক্লাবের হয়ে খেলেছেন।

ক্রীড়াকণ্ঠ : আন্তঃকলেজের হয়ে খেলা শুরু করেছিলেন কখন থেকে?

মোস্তফা হোসাইন মুকুল : ১৯৭৩ সালে চাঁদপুর কলেজে পড়াবস্থায় আন্তঃ কলেজ ফুটবল প্রতিযোগিতায় অংশ নেই। ওই সময় চাঁদপুরের ক্রীড়াঙ্গনের উজ্জ্বল নক্ষত্র ছিলেন কামরুজ্জামান চৌধুরী। তিনি আমাকে সহ অনেককেই খেলাধুলার ব্যাপারে অনেক উৎসাহ দিয়েছেন। ওই বছরই কুমিল্লা আন্তঃবোর্ড কলেজ প্রতিযোগিতায় প্রথম চ্যাম্পিয়ন হয় আমাদের কলেজ। হাইস্কুলে থাকাবস্থায় যেমন নিয়মিতভাবে আন্তঃস্কুল ফুটবল খেলেছি, তেমনি কলেজের হয়ে অনেকবার আন্তঃকলেজ ফুটবলে খেলার সুযোগ পেয়েছি।

ক্রীড়াকণ্ঠ : ঢাকা প্রথম বিভাগ ফুটবলে খেলার সুযোগ হয় কিভাবে?

মোস্তফা হোসাইন মুকুল : আমি যখন আন্তঃকলেজ ফুটবল খেলি, তখন খেলা চলাকালীন ঢাকা থেকে বেশ ক’জন নির্বাচক আসেন ফুটবলার বাছাই করার জন্য। আমার ফুটবল খেলা দেখার পর নির্বাচকরা আমাকে সিলেক্ট করে নেন এবং ঢাকাতে যাওয়ায় জন্য বলেন। আমি ঢাকাতে প্রথম বিভাগ ফুটবল খেলা শুরু করি পিডব্লিউডির মাধ্যমে।

ক্রীড়াকণ্ঠ : ঢাকাতে আপনার প্রথম ক্লাবে আপনি কয় বছর খেলেন, কোন্ দায়িত্ব পালন করতে হয়েছে ?

মোস্তফা হোসাইন মুকুল : আমার যেহেতু ঢাকাতে এই ক্লাবটিতে প্রথম খেলা, আমি এই ক্লাবের হয়ে টানা ৩ বছর নিয়মিত একাদশের হয়ে মাঠে খেলি। ১৯৭৫ সাল থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত এ ক্লাবের হয়ে ঢাকার বিভিন্ন শীর্ষ পর্যায়ের দল ও বিভিন্ন খেলোয়াড়ের সাথে খেলি। আমাকে ১৯৭৭ সালে ক্লাবের পক্ষ থেকে দলের অধিনায়কের দায়িত্ব দেয়া হয়। আমি ক্লাব কর্মকর্তাদের দেয়া সেই দায়িত্ব সঠিকভাবেই পালন করেছি।

ক্রীড়াকণ্ঠ : জাতীয় যুব ফুটবল দলে সুযোগ পেয়েছিলেন?

মোস্তফা হোসাইন মুকুল : আমি ১৯৭৮ সালে জাতীয় যুব ফুটবল দলে খেলার সুযোগ পাই। ওই সময়ে আমাদের দলটি ইয়েমেন ও ইরাকের সাথে খেলায় অংশ নেয়। আমি মূল একাদশেই খেলার সুযোগ পাই। আমরা ওই টুর্নামেন্টে ১ ম্যাচে ইয়েমেনের সাথে জয় পাই।

ক্রীড়াকণ্ঠ : ঢাকার কোন্ কোন্ ক্লাবে খেলেছেন এবং দলের দায়িত্বে ছিলেন?

মোস্তফা হোসাইন মুকুল : আমি ১৯৭৮ সাল থেকে শুরু করে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত বিজেএমসিতে খেলি। ১৯৭৯ সালে দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করি। ১৯৮২ ও ৮৩ সালে খেলি ঢাকার মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে। ১৯৮৪ সাল থেকে শুরু করে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা ক্লাবের হয়ে খেলি। ১৯৮৬ সালে মুক্তিযোদ্ধা ক্লাবের অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলাম।

ক্রীড়াকণ্ঠ : বাংলাদেশ জাতীয় দলে খেলার সুযোগ হয় কিভাবে?

মোস্তফা হোসাইন মুকুল : বাংলাদেশ জাতীয় দল গঠনের ক্ষেত্রে লীগ পর্যায়ে যারা ভালো খেলে তাদেরকেই প্রাধান্য দেয়া হয়। তখন ঢাকায় লীগ চলাকালীন সিলেক্টররা আমাকে জাতীয় দলের জন্যে সিলেক্ট করেন। এরপর বেশ ক’বছর আমি দেশের হয়ে বিভিন্ন স্থানে খেলার সুযোগ পাই।

ক্রীড়া কণ্ঠ : বাংলাদেশ জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছিলেন কবে? আপনার সাথের তখনকার সময়ের কারা কারা খেলোয়াড় ছিলেন?

মোস্তফা হোসাইন মুকুল : আমি ১৯৭৮ সালেই এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে অংশ নেই। তখনকার সময়ে আমার সাথে ফুটবলার ছিলেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের বর্তমান সভাপতি সালাউদ্দিন, এনায়েত, চুন্নু, টুটুল, আবুল, রকিব, বাদল, ইউছুফ, বাবলুসহ অনেকেই। আমি ১৯৮০, ১৯৮১ সালে এশিয়ান গেমসহ দেশে এবং দেশের বাইরে বহু মাঠে নিয়মিত খেলেছি। ১৯৮১ সালে কুয়েতে খেলতে যাই জাতীয় দলের হয়ে।

ক্রীড়া কণ্ঠ : আপনি কি ওই সময়ে লাল-সবুজের কোনো দলের হয়ে খেলেছিলেন?

মোস্তফা হোসাইন মুকুল : আমি ১৯৮১ সালে সবুজ দলের হয়ে খেলেছি। আমার দলের অধিনায়ক ছিলেন সালাউদ্দিন। আমাদের দলটি লাল দলের সাথে ভালোই খেলে।

ক্রীড়া কণ্ঠ : আপনাদের সময় আর এখনকার সময়ের ফুটবলের অবস্থা? উন্নতি করতে হলে কী করা প্রয়োজন?

মোস্তফা হোসাইন মুকুল : আমাদের সময়ের ফুটবলের মধ্যে ছিলো খেলোয়াড়দের আন্তরিকতা ও পরিকল্পনা মাফিক খেলা। বেসিক ট্রেনিংয়ের ওপর ছিলো গুরুত্ব বেশি। আর এখন সেই সিস্টেম পরিবর্তন হয়েছে। আগে আমরা প্রাইমারি স্কুল, আন্তঃস্কুলের খেলাধুলা নিয়মিত খেলতাম। প্রত্যেক স্কুলেই ক্রীড়া শিক্ষক ছিলেন। এখন অনেক স্কুল ও কলেজের মাঠ রয়েছে। দেখা যায় সেই মাঠ কেটে সেখানে ফুলের বাগান করা হয়েছে। এটা কোনো সিস্টেমের মধ্যে পড়ে না। শুধু বাফুফে নয়, সবক্ষেত্রেই টেকনিক্যাল উন্নতি হয়েছে, কিন্তু পদ্ধতিগত ভুলের কারণে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে যেতে পারছি না। খেলাধুলার ক্ষেত্রে এবং খেলা পরিচালনার ক্ষেত্রে রাজনীতি করে না এমন দক্ষ সংগঠকদেরকে এগিয়ে আনতে হবে সামনে। যে কোনো খেলাধুলার ক্ষেত্রে খেলা এবং খেলোয়াড়দের প্রভাব মুক্ত রাখতে হবে। স্বার্থপরতা, স্বজনপ্রীতি কোনো কিছু থাকতে পারবে না।

ক্রীড়া কণ্ঠ : অন্যদেশে প্রাইমারি থেকে খেলাধুলার ক্ষেত্রে কী করা হয়?

মোস্তফা হোসাইন মুকুল : খেলাধুলার ক্ষেত্রে উন্নত বিশ্বের সাথে আমাদের পার্থক্য অনেক । আপনি এশিয়ার পাশ্ববর্তী দেশ নেপাল ও ভারতের দিকে খেয়াল করলে দেখবেন তারা খেলাধুলায় অনেক উন্নত। কিন্ডারগার্টেন থেকে শুরু করে প্রাইমারি থেকে তারা খেলাধুলার প্রতি নজর দেয়া শুরু করে। সকল প্রতিকূলতার মাঝে তারা খেলাধুলাকে আলাদাভাবে প্রাধান্য দেয়।

ক্রীড়া কণ্ঠ : খেলোয়াড় তৈরি করতে হলে কোন্ বিষয়ের প্রতি নজর দেয়া বেশি উচিত?

মোস্তফা হোসেন মুকুল : আমাদেরকে মনে রাখতে হবে এবং এ বিষয়টি আগেও বলেছি যে স্পোটর্স ফ্রি। অর্থাৎ ছোট থেকে কিংবা প্রাইমারি লেভেলে পড়া অবস্থায় যেই শিক্ষার্থী যেই খেলার প্রতি মনোযোগী সেই খেলাতে তাকে প্রাধান্য দিতে হবে। ছোট থেকে যেই খেলোয়াড় যেটি পছন্দ করে সেই খেলাতে যদি তাকে ভালো মতো নার্সিং করা যায় তাহলে সে বড় হতে হতে সেই বিষয়ে ভালো কিছু করবে। এতে করে নিজ জেলাসহ দেশ তার থেকে খেলাধুলার ক্ষেত্রে ভালো কিছু প্রত্যাশা করতে পারবে। খেলাধুলার ক্ষেত্রে তরুণ প্রজন্মের আগ্রহ বাড়াতে হবে। বিশেষ করে ১২ ও ১৩ বছর থেকে বয়সভিত্তিক খেলোয়াড় বাছাই করে তাদেকে দিয়ে দীর্ঘমেয়াদী অনুশীলনের ব্যবস্থা করতে হবে।

ক্রীড়া কণ্ঠ : চাঁদপুরের খেলাধুলার উন্নতির ক্ষেত্রে কী প্রয়োজন?

মোস্তফা হোসাইন মুকুল : চাঁদপুরের খেলাধুলার উন্নতি করতে হলে জেলা পর্যায়ে নিয়মিত খেলাধুলার আয়োজন করতে হবে। খেলাধুলার সাথে যারা জড়িত আছে এবং ছিলো তাদেরকে নিয়ে বিভিন্ন কমিটি করে খেলাধুলার কাজে লাগাতে হবে। জেলা ক্রীড়া সংস্থার মাধ্যমে কিংবা জেলার স্ব স্ব উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার কর্মকর্তারা নিজ নিজ উপজেলাতে বিভিন্ন ক্রীড়াভিত্তিক ইভেন্টের ব্যবস্থা করতে হবে। বিভিন্ন উপজেলা থেকে খেলোয়াড় বাছাই করতে হবে। তাদেরকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। জেলা ক্রীড়া সংস্থা ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থাকে খেলাধুলার ক্ষেত্রে দায়িত্ব নিতে হবে।

ক্রীড়া কণ্ঠ : খেলাধুলার ক্ষেত্রে মেয়েদের কী করা উচিত ?

মোস্তফা হোসাইন মুকুল : আমার প্রথম কথা হচ্ছে, জেলা ক্রীড়া সংস্থার উচিত প্রত্যেক খেলাধুলার ক্ষেত্রে মেয়েদেরকে প্রাধান্য দেয়া। একজন নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যদি জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশ চালাতে পারে, তাহলে আমাদের মেয়েরা কেনো পারবে না ? মেয়েদেরকে খেলাধুলার ক্ষেত্রে উৎসাহ দিতে হবে। জেলা ক্রীড়া সংস্থার উচিত মাঠটিকে রাজনীতি মুক্ত করে দেয়া।

ক্রীড়া কণ্ঠ : খেলাধুলার ব্যাপারে উদীয়মান ফুটবলার ও ক্রীড়া সংগঠকদের উদ্দেশ্যে কিছু বলুন।

মোস্তফা হোসাইন মুকুল : কিন্ডারগার্টেন থেকে শিক্ষার্থীদেরকে মানসিকভাবে তৈরি করতে হবে। ১০টি ইভেন্ট দিয়ে দিতে হবে। বাচ্চারা যেটাতে ভালো করবে সেটাতেই তাকে উৎসাহ দিতে হবে। কিন্তু আমরা সেটা করি না। ক্রীড়া শিক্ষককে প্রতিদিন একটি সময় করে খেলোয়াড়দেরকে নিয়ে খেলার বিষয়ে প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শের ব্যবস্থা করতে হবে। খেলাধুলায় চাঁদপুরের বেশ সুনাম রয়েছে। পরিকল্পনা মাফিক সকল কিছু করতে হবে। যে যেই জায়গায় যোগ্য সেই জায়গাতে তাকে বসাতে হবে। জেলার ২টি ক্রিকেট একাডেমী, ২টি ফুটবল একাডেমী যদি খেলোয়াড় বের করতে পারে তাহলে জেলা ক্রীড়া সংস্থা কেনো পারবে না ? যারা বিভিন্ন ক্লাবের সাথে জড়িত রয়েছে তাদেরকে খেলাধুলার বিষয়ে অনেক কিছু জানতে হবে। বিভিন্ন উপ-কমিটি করে দিতে হবে। যাতে করে যে যার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারে। এছাড়া খেলোয়াড়দেরকেও নিজ খেলাধুলার প্রতি মনোযোগী হতে হবে। এক ম্যাচে খেলতে পারেনি তো তাতে কী হয়েছে ? দলের হয়ে যেনো সবসময়ই খেলতে পারে সেজন্যে নিজেকে তৈরি করতে হবে।

ক্রীড়া কণ্ঠ : সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

মোস্তফা হোসাইন মুকুল : জি¦ আপনাকে ও আপনার পত্রিকার সকলকে জানাই ধন্যবাদ।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়