প্রকাশ : ১৮ জুন ২০২৩, ০০:০০
একটা সাধারণ লেখাকে লেখক প্রথম পর্যায়ে কবিতা বলার সাহস পান? বোধহয় না। আমিও পাইনি। ছন্দ মিলিয়ে কবিতা লিখতে হয় বলে আমি কখনো কবিতা লিখতে পারবো এই কথা বিশ্বাস করতাম না। কথায় কথায় একদিন ফয়সাল কাকা বললেন, ছন্দহীন কবিতাই নাকি একসময় অনেক বেশি প্রাধান্য পাবে।
করোনার লক-ডাউনে মোবাইলের নোটপ্যাডে ফেসবুক পোস্টের ক্যাপশন তৈরি করতে গিয়ে যখন দু-চার লাইনের একটা ছন্দ লিখে ফেলি, তখন কেমন যেনো মনে হলো, আমি চাইলে হয়তো কবিতা লিখতে পারবো। চেষ্টাও করলাম। কবিতা লেখার পর সেটা প্রকাশও করলাম ফেসবুকে। ফেসবুক ছাড়া সেসময় সহজ-দ্বিতীয় আর কোনো মাধ্যম আমার জানা ছিলো না।
ফেসবুকে পরিচিত যারা ছিলো তাদের মধ্যে কেউ কেউ মজা করে ‘হা হা’ রিয়েক্ট দিলেন। অতঃপর ‘কবিতা নামে ছাইপাশ সৃষ্টি করেছি’ এই ভেবে ঐ লেখাটা ডিলিট করে দেই। ভাবলাম লেখালেখি আমার দ্বারা হবে না। মগজের গাণিতিক হিসাব মিলাতে পারলেও মনকে কোনো ভাবেই এ কথা বোঝাতে পারিনি। ফলস্বরূপ এরপরও আরো দু-তিনটা কবিতা লিখে ফেলি।
তখন করোনার লক-ডাউন। ফরিদ কাকা বাড়িতে। এই গৃহবন্দী সময়ে বিশেষ কোনো কাজ না থাকায় তার সাথে যথেষ্ট সময় কাটাতাম। তিনি গল্প করতেন। তার শৈশবের আনন্দ, দুষ্ট বন্ধুদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে বলতেন। পৃথিবীর ঘোর অসময়ের মাঝেও তার সাথে কাটানো সেই সময়গুলো আমার কাছে বেশ আনন্দের ছিলো। তার সাথে আড্ডা দেওয়ার সময়েরই একদিন কথায় কথায় আমার কবিতা লেখার কথাটা তাঁকে বলি। তিনি আগ্রহের সাথে কবিতা দেখতে চান। আমি তখন আমার একটা কবিতা তাঁকে দেখানোর জন্যে খাতায় লিখে নিয়ে আসি। খাতাটা এনে তাঁর দিকে এগিয়ে দেই। কিন্তু তিনি আমার লেখাটা নিজে না পড়ে আমাকেই পড়তে বললেন। আমি পড়লাম, তিনি শুনলেন। কবিতা পাঠ শেষ হওয়ার পর বললেন, কবিতাটা যেনো তাকে ম্যাসেজ করে পাঠিয়ে দিই। করলামও ঠিক তাই।
এর প্রায় এক সপ্তাহ পর চাঁদপুর কণ্ঠের পাঠক ফোরামে প্রকাশিত হয় আমার প্রথম কবিতা ‘মূর্খ’।
আমার লেখা কবিতা পত্রিকায় প্রকাশ হয়ছে!--এ যেনো বিশ্বাসই হচ্ছিল না। আনন্দে আমি প্রায় কিছুকালের জন্যে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ি। সেই থেকেই সাহিত্যে আমার পথচলা শুরু। আমার সাহিত্য চর্চায় তাই ফরিদ কাকা আর চাঁদপুর কণ্ঠের অবদান সবচেয়ে বেশি।
চাঁদপুর কণ্ঠে প্রকাশিত আমার প্রথম কবিতাটা হয়তো খুব বেশি সমৃদ্ধ ছিলো না। তবে, চাঁদপুর কণ্ঠের সম্ভাবনা মূলক আচরণের ফলে আজ আমার লেখা পূর্বের চেয়েও অধিক সমৃদ্ধ ও অধিক উন্নত হয়েছে বলে আমার বিশ্বাস।