মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২১ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার
  •   দৈনিক ইনকিলাবের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শহীদুল্লাহ্ মিজির দাফন সম্পন্ন
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা

প্রকাশ : ০৭ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

কড় কড়ে কড়চা
অনলাইন ডেস্ক

মেসি, ডিমারিয়া, এমবাপ্পে, নেইমার, রোনাল্ড খেলোয়াড় মন-প্রাণ-কৌশল উজাড় করে পায়ের নৈপুণ্যতায় বল নিয়ে এগিয়ে যায় গোল করার জন্যে। সাথে সাথে কোচের আকার-ইংগিত, শব্দের তর্জন-গর্জন, সতীর্থ খেলোয়াড়দের প্রাণদোলা প্রেরণার শব্দমালা; সর্বোপরি, ভড়ামাঠে দর্শক-সমর্থকবৃন্দ ডি-বক্সের কাছাকাছি বল দেখলেই ‘গোল গোল’ চিৎকারে মাঠে এক উত্তজনা উত্তেজনা ভাব পরিলক্ষিত হয়।

আহ্ অবশেষে বলটি গোল পোস্টের বাহির দিয়ে চলে গেল! ক্ষণিকের মধ্যেই উত্তেজনা নিমিষেই অবস হয়ে যায়। আমদের জাতীয় রাজনীতিতে চলছে গোল গোল খেলা। সরকারবিরোধীরা জনআকাঙ্ক্ষার বিপরীতে ব্যর্থ গোলের মেকানিজমে একে একে গোলশূণ্য অবস্থায় দিগি¦দিক দিশেহারা। এক সময়ের মনভোলানো শ্রীলংকা অর্থনীতির যাঁতাপিষ্টে দেউলিয়া হয়ে যায়। সেই দেউলিয়াকে পুঁজি করে বাংলাদেশে কথিত দিনকানা সুশীলরা বিশেষ করে টিভি মিডিয়ায় ট্রপিবিহীন এমবাপ্পে, নেইমারের বলের নৈপুণ্যে দর্শকদের উত্তেজনার ধার সয়না অবস্থা। চারদিকে হায় মাতাম, হায় মাতাম। বাংলাদেশ শ্রীলংকা হয়ে গেলো রে রে রে।

টকশোর একপক্ষীয় জ্যোতিষীরা প্রথম ধাপেই হামবড়া ভাব নিয়ে খুশির রাজা। সাথে সাথে নেমে পড়লো কর্তাহীন নিয়ন্ত্রণহীন রাজনীতিবিদরা। তারাও রাজনীতির শীতের মাঠে গরম ভুনা খিচুড়িতে উল্লাসে মাতোয়ারা। এদিকে জনগণ আতঙ্ক বোধ করছেন। সরকার ও স্বদেশপ্রেমীরা দৃঢ়তার সাথে বললো, বাংলাদেশ আর শ্রীলংকা এক নয়। দুই দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, কৃষ্টি-কালচার বিশেষ করে অর্থনীতির মেরুদণ্ড ভিন্ন ভিন্ন। যার বাস্তব প্রমাণ করোনাকালীন ও করোনা-পরবর্তী অর্থনীতির সক্ষমতা। সরকার সুস্পষ্টভাবে চোখে আঙুল দিয়ে অর্থনীতির তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপনের সাথে সাথে বল ভারপোস্টের নাগালের বাহিরে। পিনপতন নিরবতা। ব্যাক ফুটে শ্রীলংকার অর্থহীন ব্যর্থ মিশন।

দুই.

ডলার নাই, ডলার নাই। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে লাগামহীন অর্থনীতি পুরো বিশ্ব। বিশ্বের এমন কোন রাষ্ট্র নেই যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ডলার নিয়ে সস্তিতে আছে। ডলার সংকটে নিজ নিজ রাষ্ট্রের চাহিদা মেটানোর জন্য অভিন্ন মুদ্রা প্রচলন শুরু করেন। তাণ্ডও সীমিত। সেই কথিত স্বাধীনতাবিরোধী সুশীল ও রাজনৈতিক বর্গাচাষীরা বিদেশে অবস্থানরত তাদের আত্মীয়-স্বজন পাড়া-প্রতিবেশী শুভাকাক্সক্ষী একই অস্থির মনমানসিকতার রাজনৈতিক সতীর্থরা বৈধ পথে বৈদেশিক মুদ্রা পাঠাতে নিরূৎসাহিত করেন। অবৈধভাবে টাকা পাঠানোর জন্য উঠে পড়ে লাগে। এতে সরকারের সাময়িক বেগ পেতে হয়। বৈধপথে টাকা পাঠানো জন্য প্রণোদনা ঘোষণা এবং বাংলাদেশের রিজার্ভ নিয়ে অসত্য তথ্যের সময়োচিত জবাবে এ যাত্রায়ও এগোতে পারে না কথিতরা।

তিন.

ব্যাংকে টাকা নাই। টাকা নাই। কিছু অসাধু ব্যাংক কর্মকর্তাও হালে পানি ঢালে। এদের লেবাসধারী রাজনৈতিক দলের আদর্শের তকমা জানাশোনা। ভদ্রবেশী ব্যাংকার সেজে নিকটতম জনদের ব্যাংকে গচ্ছিত টাকা উত্তোলনের জন্য সুকৌশলে কথপোকথন করেন। সাথে সাথে টকশোতে টক টক কথা আর বাংলাদেশের উন্নয়নে বাধাগ্রস্ত বিরোধী রাজনৈতিক বর্গাচাষীরা নিজ নিজ প্রান্ত থেকে আজগুবি তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে ঘুম হারাম করে দেয় সরলমনা ব্যাংকে টাকা গচ্ছিত গ্রাহকদের। বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে গ্রাহকদের আশস্ত করার পর জনগণের মধ্যে স্বস্তির নিঃশ্বাস আসে। জনবিরোধীরা এ যাত্রায় বল ভারপোস্টের কাছাকাছি পৌঁছতে পারে না।

ভগ্ন মনোরথে দিগি¦দিক হয়ে রাজপথে রাজত্ব কায়েম কারার জন্যে পূর্ণোদ্যমে রাজনৈতিক বর্গাচাষীরা ১০ ডিসেম্বর ২০২২ রাজপথ দক্ষলের মহরতে অটল। কড় কড়ে কচড়া ভাষণ দিয়ে সয়লাভ। জনগণ দিশেহারা। একটার পর একটা প্রপাগান্ডা রটিয়ে জনমনে নেতিবাচক মনোভাব পোষণের ধারণাটা শেষ পর্যন্ত গোলশূন্য অবস্থায় বন্দি বন্দি খেলা হয়ে রইলো। সেই মঘের মল্লুকের ন্যায় দিন তারিখ দিয়ে ‘দক্ষল’! এই যুগে বড্ড বেমানান। এখন সবকিছু রাষ্ট্রীয় শিষ্টাচারে চলে। ইচ্ছে করলে জোর প্রয়োগ করে পাশের বাড়ির সুন্দরী রমণীর সাথে ঘর সংসার করা যায় না। গার্ডিয়ানদের সাথে স্বজনদের সাথে মেলবন্ধন করেই সম্ভব। নচেৎ অধরাই থেকে যাবে স্বপ্নের রাজমহল।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ব্যর্থ ইতিহাসে ১০ ডিসেম্বর কালো অধ্যায়ের ইতিকথা। বিরোধী সাংসদদের ভরপুর জনসম্মুখে পদত্যাগের ঘোষণায় প্রমাণ হয়েছে, জনগণের ভোটে নির্বাচিত সংসদ সদস্য। ‘জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার’। জনগণের দ্বারা পরিচালিত সরকার।

জনগণের জাতীয় সংসদ থেকে সাংসদের পদত্যাগপত্র স্পিকারের কাছে নির্বিঘ্নে জমা দিয়ে প্রমাণিত হয়, গণতান্ত্রিক ধারা সূচারুভাবে অব্যাহত বাংলাদেশে। যা বিশ্ববাসী দেখেছেন। ১০ ও ১৪ ডিসেম্বরের ঘটনাপ্রবাহ দিগন্তে দিগন্তে স্বার্থান্বেষী মানবাধিকার এর রহস্যের ধার উন্মেষ হয়েছে। তারা এখনো কেতাদুরস্ত ‘ফেলানী’ নাটকে সীমাবদ্ধ। ইতিহাসের জঘণ্যতম তারিখ বেছে নেওয়ায় তাদের পরিষ্কার কুমতলব শান্তিপ্রিয় জনতা বুঝে যাওয়ায় ও হাতে নাতে তাদের মানবাধিকারের মূলা তাদের হাতে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য ‘মায়েরী কান্না’ই যথেষ্ট।

আত্মতৃপ্তির ঢেকুর তোলা যাবে না। তারা অচিরেই অপরাজনীতির নতুন মোড়ক উন্মোচন করবে। সেই অপেক্ষায়। সর্তকতায়।

চার.

বাঙালি ও বাংলাদেশের ইতিহাসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার ধ্যান-জ্ঞান-কর্মণ্ডসাধনা এক ও অভিন্ন। সময়ের ব্যবধানেও অনেক ঘটনার সূত্রপাত একই সুতায় গাঁথা। অভিরাম বন্ধুর পথচলায় ক্ষান্ত হননি জনকের কন্যা। সুদূরপ্রসারি যা কিছু বর্তমান কল্যাণকর জনকের কন্যা শেখ হাসিনার সততার পুরস্কার। ঘরের উইপোকা দেখা যায় না। মাঝে মাঝে তাদের গুণ গুণ শব্দ শোনা যায়। যা নিশ্চিতভাবে বলা যায় ক্ষতির কারণ।

স্বাধীনতার ৫১ বছরের ভরপুর দুপুরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ছবিবিহীন বিদেশি দূতাবাসগুলোতে বিজয় বিদস ও বুদ্ধিজীবী দিবস উদযাপনে কূটকৌশলী আমলা লীগের আগাম ভোল পাল্টানো নিরপেক্ষতা জাহিরের মহড়া! অনুপ্রবেশ-হাইব্রিড-কাউয়া-খাম খাম এবং অতি উৎসাহী আমলা লীগ থেকে অবমুক্ত করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে সঠিক নেতৃত্ব উপহার দেয়াই এখন সময়ের দাবি ও চ্যালেঞ্জ। তাহলে আরো সহজে শ্রীলংকার বায়ু, ডলার সংকট, ব্যাংকে টাকা নাই উদ্ভট উদ্ভট শব্দদূষণ অংকুরেই বিনষ্ট করা যাবে।

পরিশেষে রেমিট্যান্সযোদ্ধাদের বিশেষভাবে আলোকপাত করাই আজকের নিবন্ধনের সূত্রপাত। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ একটি বৈশ্বিক সমস্যা ও সংকটের কারণ। সমস্যা উত্তোরনে ডলার প্রধান মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে আমাদের লক্ষ লক্ষ প্রবাসী রেমিট্যান্সযোদ্ধা আছেন। এদের বিদেশি দূতাবাস ও বিমান বন্দরের চেয়ে আমাদের বিদেশি মিশন ও বাংলদেশের বন্দর, পাসপোর্ট, ট্রান্সপোর্টে হয়রানি বিশেষ করে অবহেলা, অবজ্ঞার শিকার হচ্ছেন বেশি। প্রতিনিয়ত পদে পদে। প্রবাসি হয়রানি শূন্যের কোঠায় দৃশ্যমান হলে অভূত সাড়া ফেলবে রেমিট্যান্স আনায়নে। তাদের পাঠানো রেমিট্যান্স-এর দিকে চেয়ে থাকে জনগণ ও সরকার। তাদের পাঠানো অর্থেই আমাদের অর্থনীতির ভীত শুধুই মজবুতই করে না, সাথে সাথে সচল রাখে দৈনন্দিন জীবনযাত্রার মান। এদের আরো বেশি প্রনোদনার সাথে সাথে আমার একান্ত জোড়লো দাবি- প্রবাসীদের স্থানীয় প্রশাসন কর্তৃক যাওয়া-আসা নির্বিঘœকরণে আরামদায়ক স্বস্তির যানবাহনের ব্যবস্থা করা, প্রবাসীরা স্ব দেশে প্রত্যাবর্তনের সময় ইমিগ্রেশনে শুভেচ্ছা উপহার বিনিময় করা। এতে প্রবাসীরা সম্মানিত বোধ করবেন। এক্ষেত্রে শর্ত থাকবে বৈধ উপায়ে বৈদেশিক মুদ্রা পাঠানোর ডকুমেন্টস প্রর্দশন করতে হবে। পরিবার-পরিজনরাও বৈধপথে রেমিটেন্স পাঠানোর জন্য উৎসাহিত করবেন। বিকল্প ভাববেন না।

স্মার্ট বাংলাদেশ বির্নিমাণে এগিয়ে যাবে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনালি স্বদেশ। বিষয়টি বিশেষভাবে অনুধাবন করে সংশ্লিষ্টরা দ্রুত পদক্ষেপ নিবেন। এক্ষেত্রে জেলা প্রশাসন মুখ্য ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারেন-এ প্রত্যাশায়, প্রতীক্ষায়।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়