প্রকাশ : ০৭ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০
এইচএম জাকির। জন্ম ১৯৮৪ সালের ১১ অক্টোবর, চাঁদপুর সদর উপজেলায়। পিতা আবুল হোসাইন মিজি ও মা রোকেয়া বেগম। উদ্ভিদবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। গবেষণা কৌশল বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ব্যুরো অব ইকোনমিক রিসার্স থেকে প্রশিক্ষণ নেন। পেশাগত জীবনে পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক পদে তিনি চাঁদপুর সদর উপজেলায় কর্মরত। স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংঠনের দায়িত্ব পালন করায় এইচএম জাকির দক্ষ সংগঠক হিসেবে সুপরিচিত। প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘চাঁদমুখ’ নামে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। তিনি সাহিত্য চর্চা ও সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের জন্যে বিভিন্ন পুরস্কার পেয়েছেন।
চাঁদপুর কণ্ঠ : কোন চিন্তা থেকে সাহিত্য চর্চায় যুক্ত হলেন?
এইচএম জাকির : কল্পনা আর অনুভূতি নিয়ে কাজ করে সাহিত্য। মনোজগতকে বিকশিত করতে, অতীতকে টেনে আনতে ও ভবিষ্যতকে জানান দিতে সাহিত্য মুখ্য ভূমিকা পালন করে। সাহিত্যিক অন্যের প্রতি অনুভূতিশীল হয়ে উঠতে পারেন এবং বিভিন্ন উপাদানের আন্তঃসম্পর্ক বুঝতে পারেন। সাহিত্য তুলনা করার যোগ্যতা বাড়িয়ে দেয়, যুক্তিবোধ তৈরি করে এবং নতুন সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করে। সর্বোপরি ভালো মানুষ হয়ে ওঠার এবং ভালো মানুষ গড়ার পেছনে সাহিত্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মূলত এ ধরনের চিন্তাধারা থেকেই সাহিত্য চর্চায় যুক্ত হই।
চাঁদপুর কণ্ঠ : এ পর্যন্ত আপনি কী কী বই লিখেছেন? কোন্ বইটি কবে প্রকাশিত হয়েছে?
এইচএম জাকির : স্কুলজীবন থেকেই সাহিত্যধর্মী লেখালেখির হাতেখড়ি। ২০০৬ সালে প্রথম আলো বন্ধুসভার সাথে জড়িত হওয়ার পর থেকে লেখালেখি অভ্যাসে পরিণত হয়। তখন থেকেই প্রথম আলোর বন্ধুসভা পাতায় অনুষ্ঠানের নিউজ, কবিতা, অনুগল্প, প্রবন্ধ লিখতাম। স্থানীয় দৈনিকের মধ্যে প্রথমে দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ পত্রিকায় কবিতা প্রকাশিত হয়। এরপর চাঁদপুরের প্রায় সব কটি পত্রিকাতেই কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ, ফিচারের লিখেছি। ২০১৫ সালে ‘মাদক মুক্ত তরুণ, সুন্দর দেশ’ নামে প্রথম আলো বন্ধুসভা আয়োজিত মাদকবিরোধী বন্ধুমেলার স্মারক বই সম্পাদনা করি। মূলত এটিই আমার প্রথম বই। তারপর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের ওপর ‘বাঙালির মহানায়ক’ নামে ২০২১ সালের একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয় আমার প্রথম প্রবন্ধের বই। ২০২২ সালে প্রকাশিত হয় তথ্যবহুল গবেষণাধর্মী বই ‘এক নজরে চাঁদপুর’ এবং চাঁদপুর সরকারি কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের পুনর্মিলনী স্মারক ‘স্বাপ্নিক’। এছাড়াও বিগত অর্ধযুগ ধরে স্থানীয় ও জাতীয় বিভিন্ন বইতে আমার লেখা প্রকাশের পাশাপাশি বেশ কিছু বইতে সম্পাদনা সহযোগী হিসেবে কাজ করি।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার সর্বশেষ বই ‘এক নজরে চাঁদপুর’-এর বিষয়বস্তু কী?
এইচএম জাকির : চাঁদপুর বিষয়ক সাধারণ জ্ঞানভিত্তিক বই ‘এক নজরে চাঁদপুর’। বইটিতে চাঁদপুর জেলার ইতিহাস, ঐতিহ্য, বিশ্বযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন, প্রশাসন, স্থানীয় সরকার, খেলাধুলা, অর্থনীতি, রাজনীতি, সাহিত্য, সংস্কৃতি, দর্শনীয় স্থান ও স্থাপনা, শিক্ষা, চিকিৎসা, যোগাযোগ, যাতায়াত, জরুরি ও প্রয়োজনীয় নম্বরসহ জেলার নানা তথ্য স্থান পেয়েছে। বইটি বিসিএসসহ সকল চাকুরি পরীক্ষায় নিজ জেলা চাঁদপুর সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্যের জন্যে চাকুরিপ্রার্থীদের সহায়ক হবে। এছাড়াও চাঁদপুরের বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরিক্ষায় এবং চাঁদপুর সম্পর্কে পর্যটকসহ সর্বজনের জ্ঞান অর্জনের জন্যে বইটি অতুলনীয় ভূমিকা রাখবে বলে আমার বিশ্বাস।
চাঁদপুর কণ্ঠ : বইটি পাঠকরা কীভাবে গ্রহণ করছে?
এইচএম জাকির : ইতিহাস ও ঐতিহ্যগতভাবে মোঘল আমল হতেই চাঁদপুরের সুখ্যাতি ও অর্জন রয়েছে। চাঁদপুরের যাবতীয় বিষয়ের তথ্য চুম্বকারে তুলে ধরায় ‘এক নজরে চাঁদপুর’ বইটি সব ধরনের পাঠকের মন জয় করেছে। চাকুরিপ্রার্থী ও শিক্ষার্থীদের মাঝে বইটির চাহিদা ব্যাপক। এছাড়া পর্যটক-সহ নানা প্রতিযোগিতার উপহার হিসেবেও বইটির চাহিদা রয়েছে।
চাঁদপুর কণ্ঠ : এখন কী নিয়ে কাজ করছেন? আগামীতে কোন্ বইটি প্রকাশিত হবে?
এইচএম জাকির : ১৯৯০-এর গণঅভ্যুত্থানে চাঁদপুরের একমাত্র শহিদ জিয়াউর রহমান পাটওয়ারী রাজু স্মারকগ্রন্থ ‘সাহসিক রাজু’-এর কাজ শেষ হলো। বইটি শীঘ্রই প্রকাশিত হবে। আগামীতে কী বই আসবে তা গোপনেই থাকুক। যেহেতু লেখালেখি অব্যাহত, সেহেতু বই আসবেই। পাঠককে সে পর্যন্ত অপেক্ষা করার অনুরোধ জানাই।
চাঁদপুর কণ্ঠ : সাহিত্য জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি কী?
এইচএম জাকির : সাহিত্য জীবনের বড় প্রাপ্তি হলো মানুষের ভালোবাসা। লেখক সম্বোধন করে শুভাকাক্সক্ষীরা খুব সম্মান ও স্নেহ করেন।
চাঁদপুর কণ্ঠ : বইয়ের পাঠকদের উদ্দেশ্যে কিছু বলুন।
এইচএম জাকির : পাঠকদের বলবো, বই পড়ার কোনো বিকল্প নাই। সময় পেলেই বই পড়ুন। বই পাঠ আপনার ঘরের ও বাইরের জগতকে আলোকিত করবেই।