মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৫ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার
  •   দৈনিক ইনকিলাবের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শহীদুল্লাহ্ মিজির দাফন সম্পন্ন
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা

প্রকাশ : ০৩ অক্টোবর ২০২২, ০০:০০

মেঘের রাজ্য ক্যামেরন হাইল্যান্ড
অনলাইন ডেস্ক

পাহাড়, সমতল ভূমি আর সমুদ্রবেষ্টিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এক দেশ মালয়েশিয়া। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার এ দেশটিকে মূলত চিরবসন্তের দেশ বলা হয়। তবে একই দেশে রয়েছে ভিন্নধর্মী আবহাওয়াও। সারা বছর না শীত, না গরমের দেশে পহাং রাজ্যের একটি বড় অংশজুড়ে সারা বছর শীতল আবহাওয়া বিরাজ করে। এই রাজ্যেরই একটি শহর ক্যামেরন হাইল্যান্ড। সম্প্রতি মালয়েশিয়া প্রবাসী বাংলাদেশীদের নিয়ে এই মেঘের রাজ্য ভ্রমণের আয়োজন করে এনজেড ওয়ার্ল্ড ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলস্ (এসডিএন বিএসডি) নামে একটি প্রতিষ্ঠান। রাজধানী কুয়ালালামপুর থেকে ছেড়ে যাওয়া এই ভ্রমণে অংশ নেয় ৭৪ জন দর্শনার্থী।

মেঘের শহরে ফুলের বিছানা, স্ট্রবেরি বাগান, ক্যাকটাস ভ্যালি, প্রজাপতির পার্ক, চা বাগান, মনোমুগ্ধকর ঝর্ণা সবই আছে। এই শহরের বিশাল পাহাড়ি অঞ্চলজুড়ে সবজির চাষাবাদ হয়, যা মালয়েশিয়ার বেশির ভাগ শহরেই বিক্রি হয়। আর এসব চাষাবাদ করার জন্য অন্যান্য দেশের সঙ্গে রয়েছে বাংলাদেশী কর্মীরা যাদের অক্লান্ত শ্রমে-ঘামে ক্যামেরন হাইল্যান্ড আরো বেশি পরিচ্ছন্ন।

শনিবার সকাল ৮টায় আমাদের যাত্রা শুরু হয় কুয়ালালামপুরের মেডান পাসার থেকে। যাত্রাপথে একাধিক বিরতি শেষে আমরা ক্যামেরন হাইল্যান্ড পৌঁছি দুপুর ১২.১৫ মিনিটে। ২০৭ কি.মি. সড়কের প্রায় ৬১ কি.মি. পথ পাহাড় বেয়ে উপরে উঠতে হয়েছে। দুপুরের সূর্যটা এখানে বেশ শান্ত। মেঘের রাজ্যে আমাদের যাত্রার শুরুটা হয় ল্যাভেন্ডার গার্ডেন থেকে। তবে এই গার্ডেনে ল্যাভেন্ডারের পাশাপাশি শোভা পেয়েছে নানা ধরনের ফুল, পাতাবাহার গাছ এবং স্টবেরি বাগান।

মেঘের রাজ্য ক্যামেরন হাইল্যান্ডে প্রতিটা মুহূর্ত কাটে অন্যরকম মুগ্ধতায়। ভ্রমণপিপাসুরা পাহাড় আর মেঘের সঙ্গে ছবি তুলতে দারুণ ব্যাস্ত। স্ট্রবেরি বাগানে ঢুকে ইচ্ছেমতো ছিড়ে তা দাম পরিশোধ করে সঙ্গে নেয়ার সুযোগ আছে এখানে।

ক্যামেরন হাইল্যান্ডের চা বাগান অন্য যে কোনো স্থানের চা বাগানের থেকে একটু বেশি সুন্দর। এখানকার চা মালয়েশিয়ার চাহিদা মিটিয়ে বিশ্বের বেশ ক’টি দেশে রপ্তানিও হয়। যদিও সময় স্বল্পতায় বাসে বসেই সড়কের পাশে চা বাগানের সৌন্দর্য উপভোগ করতে হয়েছে আমাদের।

ক্যামেরন হাইল্যান্ড ভ্রমণে রাতের সৌন্দর্য অন্যরকম। আর সে রাত যদি হয় চাঁদের আলোয় আলোকিত তাহলে তো কথাই নেই। চাঁদনি রাতে পাহাড়ের চূড়ায় কোনো কটেজে রাত কাটালে মনে হবে আকাশের মাঝেই বিচরণ করছি।

আমাদের এবারের সফরে সে সৌন্দর্য উপভোগের সুযোগ ছিলো না। কারণ সফরটা একদিনের। আর আমাদের সফরসঙ্গীদের একটা বড় অংশের পরদিনের কর্মব্যাস্ততা রয়েছে। চা বাগান পেছনে রেখে তাই আমাদের পরবর্তী গন্তব্য ঝর্ণা যেখানে গা ভিজিয়ে প্রশান্তি খোঁজার চেষ্টা করেছে ভ্রমণপিপাসু প্রবাসী বাংলাদেশীরা।

দেখতে দেখতে সন্ধা নামলো। এবার আমাদের ফেরার পালা। যাত্রার শুরুতে বিশেষ আকর্ষণ ছিলো বাসের মধ্যে সবারই কমণ্ডবেশি পারফরমেন্স। আর যাত্রা শেষে ফেরার আগে এনজেড ওয়ার্ল্ড ট্যুরসের পক্ষ থেকে লটারির ব্যবস্থা রাখা ছিলো। যেখানে বিজয়ীদের মাঝে প্রথম পুরস্কার ছিলো কুয়ালালামপুর টু ঢাকা ওয়ানওয়ে এয়ার এশিয়ার টিকিট। দ্বিতীয় পুরস্কার কুয়ালালামপুর-লাংকাবি-কুয়ালালামপুর বিমান টিকিট এবং তৃতীয় পুরস্কার হফ অন হফ অফ বাসে কুয়ালালামপুর ভ্রমণের ২টি টিকিট। লটারি পর প্রশান্তির ভ্রমণ শেষে আমরা গন্তব্যে ফিরলাম ঠিক রাত ৯টায়।

ক্যামেরন হাইল্যান্ড ভ্রমণে খরচ ধরা হয়েছিলো জনপ্রতি ১৩৫ রিঙ্গিত। এই খরচের মধ্যে ছিলো যাতায়াত, সকাল ও দুপুরের খাবার এবং ১টা করে টি-শার্ট। এ ধরনের আয়োজন নিয়ে এনজেড ওয়ার্ল্ড ট্রাভেলস্ নিয়মিতই দর্শনার্থীদের সঙ্গে কাজ করবেন বলে জানান আয়োজকরা। শুধু মালয়েশিয়ার অভ্যন্তরে নয়, এশিয়া, ইউরোপ এমনকি আমেরিকা মহাদেশের বিভিন্ন দেশ ভ্রমণেরও পরিকল্পনা রয়েছে বলে এ ট্রাভেল এজেন্সি কর্তৃপক্ষের। ভ্রমণপিপাসুদের গাড়ি, হোটেল, ট্যুরগাইড কিংবা ভিসা সাপোর্টের জন্য যোগাযোগ করতে অনুরোধ জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির ট্যুরিজম বিভাগের দায়িত্বে থাকা ইমরান।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়