শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২২ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ২৫ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

মিশরে নিযুক্ত বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূতের পদত্যাগ দাবি

মিশর প্রতিনিধি ॥
মিশরে নিযুক্ত বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূতের পদত্যাগ দাবি

আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি অনাপত্তিপত্র, জন্মসনদ সংশোধন ও সত্যায়নপত্রসহ বিভিন্ন পত্র ভেরিফিকেশনের নামে অহেতুক বিলম্ব, হয়রানি, অসহনীয় বৈষম্য, ভোগান্তিসহ অসদাচরণের অভিযোগ এনে মিশরে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মিস সামিনা নাজের পদত্যাগ দাবি করেছেন আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘ইত্তেহাদ’ সহ মিশর প্রবাসীরা।

বুধবার (২০ আগস্ট) বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, দূতাবাসে সেবা নিতে আসা জনৈকা ভদ্র মহিলা তার ছেলের ভর্তির জন্যে দূতাবাস থেকে একটি চিঠিতে নাম সংশোধন করাতে এসে দীর্ঘ চার মাস ঘুরেও সেই চিঠি না পেয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন ও দূতাবাসের সামনেই আত্মহত্যার হুমকি দেন।

এদিকে দেশটিতে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ছাত্র সংগঠন ইত্তেহাদের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়,

২০০৫ সাল থেকে মিশরস্থ সকল বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ঐক্য প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশন (ইত্তেহাদ)-এর বিভিন্ন প্রস্তাবনা আমলে নিয়ে শিক্ষার্থীদের বহুমুখী সেবা সুন্দরভাবে দিয়ে আসছিল বাংলাদেশ দূতাবাস এবং ইত্তেহাদের মধ্যস্থতায় দূতাবাস ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি সুন্দর পরিবেশ বিরাজ করে আসছিল। কিন্তু গত ৯ মাস থেকে অসহনীয় বৈষম্য ও ভোগান্তির শিকার হতে থাকে মিশরস্থ শিক্ষার্থীবৃন্দ, বঞ্চিত হতে থাকে অনেক নাগরিক অধিকার ও মানবাধিকার থেকেও। নবাগত শিক্ষার্থীদের সাথে দূতাবাস কর্তৃপক্ষের আচরণ খুবই অমানবিক, এমনকি নিয়মতান্ত্রিক শিক্ষার্থীরাও পূর্বের পাওয়া বহু জরুরি দূতাবাস-সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দূতাবাস কর্তৃপক্ষ নবাগত শিক্ষার্থীদের ভর্তি লেটার প্রক্রিয়াকে জটিল করে তোলা ও প্রদানের ক্ষেত্রে এত অধিক সময় বিলম্ব করে যে, অধিকাংশ শিক্ষার্থীরই অপেক্ষায় থেকে ইকামার মেয়াদ শেষ হয়ে যেত এবং অনেককে ভর্তি হতে না পেরে দেশে ফেরত আসতে হতো। এছাড়া দূতাবাসের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ রয়েছে, সেগুলো হচ্ছে : তাওকিলনামা প্রদান বন্ধ করে দেওয়া, আরবি জন্মনিবন্ধন প্রদান বন্ধ করে দেয়া, আরবি ডকুমেন্ট গ্ৰহণ না করা, শিক্ষার্থীদের সাথে দুর্ব্যবহার করা, দৈনিক আবেদনের কোটা নির্ধারণ করে দেওয়া (৭ জনের কাগজ জমা নিয়ে বাকিদের বের করে দেওয়া), ভেতরে বসার জায়গা থাকা সত্ত্বেও শিক্ষার্থীদের দূতাবাসের বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখা, দূতাবাসের রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থীদের সম্পূর্ণ অবমূল্যায়ন করা ও শিক্ষার্থীদের বাদ দিয়ে অন্যদের নিয়ে অনুষ্ঠানগুলো করে ফেলা, সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে অযথা হয়রানি (ফোনে বলা হতো এসে জেনে যেতে, আবার আসলে বলা হতো ফোনে জেনে আসতে), ছাত্র প্রতিনিধিদের অবজ্ঞা করা, ছাত্র প্রতিনিধিগণ শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে আলোচনার জন্যে দূতাবাসে গেলে তাদের ভেতরে বসতে না দিয়ে বের করে দেয়া (এমনকি দূতাবাসের সামনেও দাঁড়াতে না দিয়ে রাস্তার অপর পাশে দীর্ঘ প্রায় তিন ঘন্টা দাঁড় করিয়ে রাখা), রাষ্ট্রদূতের অধীনস্থ কর্মকর্তাদের সাথে ছাত্র প্রতিনিধিদের দুয়েকজনকে সাক্ষাতের অনুমতি দেওয়া হলেও শিক্ষার্থীদের প্রস্তাবনাগুলো অগ্ৰাহ্য করা ইত্যাদি।

এমতাবস্থায় শিক্ষার্থীদের সাথে দূতাবাসের স্বাভাবিক কার্যক্রম চলমান রাখার জন্যে বিভিন্ন দাবি নিয়ে ইত্তেহাদের নেতৃবৃন্দ রাষ্ট্রদূতের সাথে সৌজন্য সাক্ষাতের অনুমতি চাইলেও পাননি। এমনকি গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশ স্বৈরাচারমুক্ত হওয়ার পর মিশরে বৈষম্য ও ভোগান্তির শিকার শিক্ষার্থীদের অধিকারের বিষয়ে রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজের সাথে সাক্ষাৎ করতে চাইলে নিজেকে ব্যস্ত বলে লিখিত ই-মেইল করেন বা তার অধীনস্থ কর্মকর্তাদের সাথে এসে সাক্ষাৎ করতে বলেন।

রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজ তার দশ মাসের দীর্ঘ সময়ের অজ্ঞাত ব্যস্ততা কাটিয়ে প্রথমবারের মতো ছাত্র প্রতিনিধিদের সাথে বসার প্রয়োজনে ননঅফিসয়ালভাবে ইত্তেহাদের নেতৃবৃন্দের সাথে সাক্ষাতের সম্মতি জানান। কিন্তু সার্বিক বিবেচনায় ইত্তেহাদের দায়িত্বশীলরা (সকলের ঐকমত্যে) দীর্ঘ দশ মাস যাবৎ শিক্ষার্থীদের ওপর নানাবিধ ভোগান্তি চাপিয়ে দেওয়া রাষ্ট্রদূতের সাথে সাক্ষাতের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন এবং মিশরস্থ শিক্ষার্থীদের অধিকার নিশ্চিত করতে ইত্তেহাদ ‘বিশেষ পদক্ষেপ’ গ্রহণ করে।

এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মিশরস্থ প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থীর সম্মিলিত প্ল্যাটফর্ম ইত্তেহাদ মনে করে, এমতাবস্থায় মিশরস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের বর্তমান রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজ নিজ উদ্যোগে পদত্যাগ বা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বর্তমান অভিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ও অনিয়মের সাথে জড়িত দূতাবাস কর্মকর্তাদের সরিয়ে নিয়ে দায়িত্ববান রাষ্ট্রদূত ও কর্মকর্তা নিয়োগের মাধ্যমে মিশরস্থ সকল বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ও অন্যান্য প্রবাসীর অধিকার ও সেবা নিশ্চিত করার বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্ৰহণই পরিস্থিতির একমাত্র সমাধান।

এছাড়াও যে সকল শিক্ষার্থী ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দূতাবাসের অনিয়ম-অমানবিকতার কথা তুলে ধরে নিজেদের অধিকার চেয়ে কথা বলেছে, তাদের কোনো একজনকেও (দেশে বা বিদেশে) হয়রানি করা প্রকারান্তরে মিশরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থীকে হয়রানিরই শামিল হবে এবং দেশের জনগণ ও ছাত্রসমাজের বিরুদ্ধে গিয়ে এরূপ কাজের পরিণতি খুবই খারাপ হবে। এ বিষয়ে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ইত্তেহাদ।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে মিশরস্থ প্রবাসী নেতৃবৃন্দ এবং বাংলাদেশ স্টুডেন্ট অর্গানাইজেশনের সভাপতি এবং সেক্রেটারি জেনারেল সামিনা নাজের পদত্যাগ দাবি করে বাংলাদেশ দূতাবাসের স্বাভাবিক কার্যক্রমকে চলমান রাখার জন্যে অনুরোধ জানিয়েছেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়