ফ্রান্সে প্রবাসী বাংলাদেশীদের দীর্ঘদিনের একটি স্বপ্নের বাস্তবায়ন হতে হচ্ছে। ২০২৪ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারিতে স্থায়ী শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন সর্বসাধারণ। প্যারিসের বিখ্যাত সেইন্ট ডেনিস ইউনিভার্সিটির বার্নার্ড মারি স্কয়ারে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের আদলে নির্মিত হয়েছে এই স্মৃতিস্তম্ভ।

জানা গেছে, দেশি বিদেশি আমন্ত্রিত অতিথিদের উপস্থিতিতে আগামী ৮ অক্টোবর উদ্বোধন হবে নবনির্মিত এই শহিদ মিনার।

এ বিষয়টি গত শুক্রবার প্যারিসের আয়েবা সদর দপ্তরে এসোসিয়েশন সিকুয়ানোর এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন প্রধান সমন্বয়কারী কাজী এনায়েত উল্লাহ।

দীর্ঘদিন ধরে প্যারিসে একটি স্থায়ী শহিদ মিনার নির্মাণের পরিকল্পনা বাস্তবে রূপ দিতে যাচ্ছে। এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে কাজী এনায়েত উল্লাহ বলেন, ভাষা শহিদদের আত্মত্যাগে অর্জিত এই মাতৃভাষা এবং ইউনেস্কো স্বীকৃত একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এই স্মৃতি ও গৌরবকে ধরে রাখতে, নতুন প্রজন্মের মধ্যে দেশপ্রেম জাগ্রত করতে ফ্রান্সের তুলুজ শহরের পর প্যারিসে স্থায়ী শহিদ মিনার নির্মাণ অত্যন্ত আনন্দের। প্যারিস বন্ধু মরহুম আব্দুল মানিক একুশে ফেব্রুয়ারি পালন প্যারিসে শুরু করেছিলেন। তাঁর অমর কৃতিত্ব আমাদের স্মরণে রাখতে হবে।

স্থায়ী শহিদ মিনারের উদ্যোক্তা স্বরূপ সদিওল বলেন, এমন উদ্যোগ সমস্ত বাংলাদেশীর জন্যে গৌরবের, যা বহিঃবিশ্বে বাংলাদেশের ভাষা-কৃষ্টি-সংস্কৃতি মেলে ধরবে, বাংলাদেশকে নিয়ে যাবে অনন্য উচ্চতায়।

অর্থ সমন্বয়ক টিএম রেজা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসীরা অস্থায়ী শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেও আগামী ২০২৪ সালে স্থায়ী শহিদ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে পারবে ভাষা আন্দোলনে আত্মদানকারী সকল শহিদের প্রতি।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ফ্রান্সের সভাপতি সালেহ আহমদ চৌধুরী বলেন, আমরা গৌরবান্বিত মহিমান্বিত একুশে ফেব্রুয়ারির জন্যে, ভাষা শহিদদের আত্মত্যাগের জন্যে আজ আমরা বিশ্ব দরবারে পরিচিত।

ফ্রান্স বাংলাদেশ বিজনেস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত ভট্টাচার্য শুভ বলেন, এই মহতী উদ্যোগকে যারা ত্বরান্বিত করেছেন, সময় দিয়েছেন, অর্থ দিয়েছেন আমরা তাদের কাছে চির কৃতজ্ঞ।

একুশে উদযাপন পরিষদ ফ্রান্সের সদস্য সচিব এমদাদুল হক স্বপন বলেন, প্রবাস জীবনের শত ব্যস্ততার মধ্যে থেকেও দেশ মাতৃকার জন্যে কাজ করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সাংবাদিক অধ্যাপক অপু আলম, দেবেশ বড়ুয়া, লুৎফুর রহমান বাবু, ইমরান মাহমুদ, আব্দুল মালেক হিমু, ফয়সাল আহমদ দ্বীপ, শাহ সুহেল, ইকবাল মোহাম্মদ জাফর, রাসেল আহমদ, সাবুল আহমদ, বাদল পাল, তাজ উদ্দিন, ফরিদ আহমদসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের সংবাদকর্মীরা।

প্যারিসের শহীদ মিনার নির্মাণে ব্যয় হবে ৮০ হাজার ইউরো এবং এই ব্যয়ের সিংহভাগ দিয়েছেন প্রধান সমন্বয়ক এবং অল ইউরোপীয়ান বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন (আয়েবা) মহাসচিব কাজী এনায়েত উল্লাহ।