প্রকাশ : ২৪ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০
অস্ট্রিয়ায় জাতীয় শোক দিবস পালিত
অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় বাংলাদেশ দূতাবাস ও স্থায়ী মিশনের উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবস পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে মঙ্গলবার দূতাবাস প্রাঙ্গণে এক বিশেষ আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশী এ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নান এমপি উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি অংশ নেন।
|আরো খবর
সকালে দূতালয় এবং বাংলাদেশ ভবনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার মধ্য দিয়ে দিনের কার্যক্রম শুরু হয়। বিকেল পাঁচটায় পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে আলোচনা পর্বের শুরু হয়। এরপর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয় এবং জাতির পিতা ও ১৫ আগস্টের শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তারা পরম শ্রদ্ধায় বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সকল শহিদকে স্মরণ করেন। তাঁদের বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুর বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ও কর্মময় জীবনের বিভিন্ন দিক এবং তাঁর ঐতিহাসিক অবদান তুলে ধরা হয়। বক্তারা পঁচাত্তরের বর্বরোচিত ঘৃণ্য হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানান এবং বিদেশে পলাতক খুনিদের দেশে ফেরত এনে তাদের শাস্তি কার্যকর করার জোর দাবি জানান। বক্তাগণ জাতির পিতার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে দেশমাতৃকার উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে সম্পৃক্ত হতে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে জাতির পিতা ও তাঁর পরিবারের সকল শহিদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর কর্মময় সংগ্রামী জীবন, রাজনৈতিক দূরদর্শিতার বর্ণনা দেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্মের অল্প সময়ের মধ্যেই স্বাধীন বাংলাদেশের পক্ষে বিশ্বস্বীকৃতি আদায় করতে সক্ষম হয়। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও উন্নয়ন বিষয়ক দর্শনকে হৃদয়ে ধারণ করেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার কাজে নিবেদিত তাঁর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ঐক্যবদ্ধভাবে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুদক্ষ ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ একটি সুখী-সমৃদ্ধ উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। তিনি প্রবাসী বাংলাদেশিদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের আমলে বাংলাদেশের অগ্রগতি ও অর্জন বিদেশিদের সামনে তুলে ধরা ও বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বাংলাদেশে ফিরিয়ে নিয়ে আইনানুগ শাস্তি নিশ্চিতকরণে বিশ্ব জনমত গঠন করায় অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে দূতাবাসের চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স রাহাত বিন জামান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সকল শহিদ এবং মুক্তিযুদ্ধের সকল শহিদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর অসামান্য নেত্বত্বের বর্ণনা দিয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধু আজীবন শোষিত মানুষের অধিকার আদায়ে সংগ্রাম করে গেছেন। তাঁর বলিষ্ঠ নেতৃত্বেই নিরস্ত্র বাঙালি শক্তিশালী পাক-হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণে অনুপ্রাণিত হয়। তিনি বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে সবাইকে একসাথে কাজ করতে আহ্বান জানান।
সবশেষে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শাহাদাতবরণকারী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সকল শহিদ ও মুক্তিযুদ্ধের সকল শহিদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা এবং দেশ ও জাতির শান্তি, অগ্রগতি এবং সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলকে আপ্যায়নের মাধ্যমে দিবসটির কার্যক্রমের সমাপ্তি ঘটে।