প্রকাশ : ১২ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০
স্পেনে বাংলাদেশি চায়ের ব্র্যান্ড জনপ্রিয় করতে সেমিনার
স্পেনে প্রিমিয়াম কোয়ালিটি বাংলাদেশি চায়ের ব্র্যান্ড জনপ্রিয় করা ও এর বাজার সম্প্রসারণের লক্ষ্যে মাদ্রিদ চেম্বারে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত। সম্প্রতি মাদ্রিদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে মাদ্রিদ চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রি এন্ড সার্ভিসেস ভবনে ‘স্পেন-বাংলাদেশ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক সম্প্রসারণ : স্পেনে বাংলাদেশের উচ্চমানসম্পন্ন চা রপ্তানি ও বাজারজাতকরণের সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক স্বনামধন্য স্পেনীয় বিনিয়োগকারী উদ্যোক্তা ও রপ্তানিকারক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও কূটনীতিকবৃন্দ, মাদ্রিদ চেম্বারের সভাপতি আনখেল আসেনসিও ও চেম্বারের সদস্য প্রতিষ্ঠানসমূহ এবং লন্ডন টি এক্সচেইঞ্জের বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আলিউর রহমান ওবিই অংশগ্রহণ করেন।
|আরো খবর
বাংলাদেশি রপ্তানিপণ্যের বৈচিত্র্য বৃদ্ধি ও বাজার সম্প্রসারণের উপর সরকারের যথোচিত গুরুত্বারোপের প্রেক্ষিতে স্পেনের সাথে বিদ্যমান দ্বি-পাক্ষিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও সুসংহতকরণ এবং স্পেনের জনপরিসরে বাঙালি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে তুলে ধরা ও দেশটির ভোক্তাবাজারে বাংলাদেশে উৎপাদিত গুণগত মানসম্পন্ন চায়ের ব্র্যান্ডসমূহকে পরিচিত ও জনপ্রিয় করে তোলার সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যকে সামনে রেখে সেমিনারটি আয়োজিত হয়।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্যে স্পেনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সারওয়ার মাহমুদ, এনডিসি বলেন, ‘সকলেই জানেন, চীনের পরই বাংলাদেশ সমগ্র বিশ্বে দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ তৈরিপোশাক রপ্তানিকারক দেশ। কিন্তু গতানুগতিক তৈরিপোশাক ছাড়াও চা, পাট ও পাটজাত সামগ্রী, চামড়া, ফার্মাসিউটিক্যালস্, কৃষিপণ্য, হিমায়িত মৎস্য, সিরামিক, তথ্যপ্রযুক্তিপণ্য এবং হালকা প্রকৌশলশিল্পে বাংলাদেশের যে প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা ও অমিত সম্ভাবনা রয়েছে, সেই বিষয়ে ইউরোপের ব্যবসায়ী সম্প্রদায় ও অংশীজন ততটা অবহিত নন’। তিনি এ বিষয়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বিশ্বের অন্যতম সেরা, স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয় ও উচ্চ গুণগত মানসম্পন্ন চায়ের অনেক ব্র্যান্ডই বাংলাদেশে উৎপাদিত হয়। চা বাংলাদেশের স্থানীয় সামাজিক সংস্কৃতি ও প্রাত্যহিক জীবনচর্চার অন্যতম উপচার। পরিবেশবান্ধব ও স্বাস্থ্য-সচেতন উৎপাদন প্রক্রিয়া এবং দীর্ঘকালের সযত্ন প্রয়াস ও কঠোর অধ্যবসায় বাংলাদেশের দ্রুত বর্ধমান চা-শিল্পকে আজকের অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে। বাংলাদেশ থেকে রপ্তানিকৃত চায়ের বেশ কয়েকটি প্রিমিয়াম ব্র্যান্ড বিশ্ববাজারে প্রশংসা কুড়িয়েছে। এই বাজারকে আরও সম্প্রসারিত করা প্রয়োজন’।
স্পেনীয় উদ্যোক্তা, রপ্তানিকারক ও বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশ সফর করে অপরিমেয় বাণিজ্য সুবিধার সুযোগ গ্রহণের আহ্বান জানান রাষ্ট্রদূত। তিনি আশ্বস্ত করেন, এ বিষয়ে দূতাবাস সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান করবে। সেমিনারে দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর রেদোয়ান আহমেদ বাংলাদেশে বিদ্যমান বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনার উপর তথ্যসমৃদ্ধ একটি সচিত্র ব্রিফিং উপস্থাপন করেন। সম্ভাবনাময় বিভিন্ন খাতে বৈদেশিক বিনিয়োগ প্রবাহ নিশ্চিত করতে সরকার ঘোষিত বিবিধ আকর্ষণীয় প্রণোদনা প্যাকেজের বিস্তারিত তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘অর্থনৈতিক কূটনীতিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশ ব্র্যান্ডিং-এর উপর সরকার সমধিক আগ্রাধিকার আরোপ করেছে। বৈদেশিক বিনিয়োগের জন্যে সমগ্র বিশ্বেই বাংলাদেশ এখন অন্যতম নিরাপদ, ব্যবসা-বান্ধব ও আকর্ষণীয় গন্তব্য’।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে মাদ্রিদ চেম্বারের সভাপতি আনখেল আসেনসিও বাংলাদেশে বিদ্যমান বিপুল বাণিজ্য সম্ভাবনার সুযোগ গ্রহণের জন্যে স্পেনীয় উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে দুই দেশের ব্যক্তিখাতের মধ্যে পারস্পরিক নিবিড় ও সক্রিয় সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন। সেমিনারে লন্ডন টি এক্সচেঞ্জের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আলিউর রহমান, ওবিই বাংলাদেশি চা শিল্পের বিবর্তন, বিকাশ, উন্নয়ন, গুণগত সমৃদ্ধি ও বৈশ্বিক প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতার ওপর বিশদ আলোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশি চায়ের বাজার সম্প্রসারণে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য লাভের লক্ষ্যে সকল অংশীজনের সুপরিকল্পিত প্রয়াস ও সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন’।
সেমিনার শেষে অভ্যাগত অতিথিদেরকে বাংলাদেশি চা দ্বারা আপ্যায়িত করা হয় এবং তাদেরকে বাংলাদেশের প্রিমিয়াম ব্র্যান্ডের দৃষ্টিনন্দন চা উপহার প্রদান করা হয়।