প্রকাশ : ০২ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
জলাবদ্ধতায় হাইমচরের ঐতিহ্য পান চাষে ধস
১শ’ হেক্টর জমির পানের বরজে পচন
দ্রুত পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতায় হাইমচরের অধিকাংশ স্থানে পানের বরজ নষ্ট হয়ে গেছে। এতে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন বহু পানচাষি। টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে হাইমচরে ১০০ হেক্টর জমির পান চাষে ধস নেমেছে এবং পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় পান গাছে পচন ধরেছে। লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে পানের বরজ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছেন এখানকার পানচাষিরা। এমন পরিস্থিতিতে পান চাষে যুক্ত মালিক ও শ্রমিক বেকার হয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
হাইমচর উপজেলার বেশ ক'টি গ্রাম ঘুরে পানের বরজে জলাবদ্ধতা চোখে পড়ে। সেচ প্রকল্প হওয়ার কারণে সেখান থেকে দ্রুত সময়ে পানি নিষ্কাশিত হচ্ছে না। বৃষ্টি হলে পানি আবার বেড়ে যায়।
উত্তর আলগী ইউনিয়নের মহজমপুর গ্রামের পানচাষি জাকির হোসেন জানান, তিনি এ বছর ৪০ শতাংশ জমিতে ১০ লাখ টাকা খরচ করে পানের বরজ করেছেন। গত এক সপ্তাহের টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে তার দুটি পানের বরজ। এখন শ্রমিক নিয়োজিত করে পানি নিষ্কাশন করেও কোনো লাভ হচ্ছে না। পানের বরজের ভবিষ্যৎ কী হবে তা বলতে পারছেন না তিনি।
একই গ্রামের কুলছুমা খাতুন বলেন, ৬ মাস আগে আড়াই লাখ টাকা ঋণ করে ১০ শতাংশ জমিতে পানের বরজ করেছি। আমার পুরো বরজ পানিতে তলিয়ে গেছে। এখন কী করবো তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।
পানচাষি সোহরাব হোসেন বলেন, পান ও সুপারির আবাদ আমাদের হাইমচর উপজেলার ঐতিহ্য। জলাবদ্ধতায় উপজেলার প্রায় ৭শ’ চাষির করুণ পরিস্থিতি হয়েছে।
উত্তর আলগী ইউনিয়নের পানচাষি সোহেল দেওয়ান ও মাসুম হাওলাদার বলেন, আমরা কৃষি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে পানের বরজ করেছি। বৃষ্টিতে আমাদের বরজ শেষ। পানের গোড়া পচে গেছে। পানি চলে গেলেও আর পান গাছ বাঁচবে না। কীভাবে ঋণ পরিশোধ করবো বলতে পারছি না। উপজেলা কৃষি অফিস থেকেও কেউ আমাদের খোঁজ নিচ্ছে না।
হাইমচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাকিল খন্দকার বলেন, উপজেলার ১১৯ হেক্টর জমিতে পানের আবাদ রয়েছে। অতিবৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে ১০০ হেক্টর জমির পান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পান চাষে যুক্ত রয়েছে এক হাজার ৭২ জন কৃষক। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি এবং ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তা পাঠাবো।