প্রকাশ : ০২ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
পাটের বাজার এখনও বাবুরহাট!
পাটের কারণে এক সময় এই দেশকে বলা হতো সোনালি আঁশের দেশ। পর্যাপ্ত পাট চাষ হওয়ার কারণে দেশে অনেক পাটকল প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। শুধু কি দেশে, দেশের বাইরেও পাট রপ্তানি হতো। আমাদের পাটের প্রধান ক্রেতা ছিলো যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন ধনী দেশ। কিন্তু কালক্রমে আজ তা হারিয়ে গেছে। পাটের জায়গা দখল করেছে প্লাস্টিক।
সারা দেশের মতো বাবুরহাট বাজারেও পাট বিক্রি হতো হরদম। অতীতে নৌকা, রিকশা, ভ্যান, ঠেলাগাড়ি ও ট্রাকের মাধ্যমে বিভিন্ন জায়গা থেকে পাট এনে বিক্রি হতো এ বাজারে। সেই ঐতিহ্যবাহী পাটের বাজার এখনো বাবুরহাটে। তবে এখন আর নৌকায় পাট বোঝাই করার দেখা মেলে না। কালের বিবর্তনে আধুনিকতার কবলে হারিয়ে গেছে সেই দৃশ্য।
পুরানো বাজার হিসেবে বাবুরহাট বাজার তার ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। এক সময়ের পাটের ব্যাগের জায়গায় আজ পলিথিনের ছড়াছড়ি। এছাড়াও গালিচা, বস্তা, কার্পেটের জায়গায়ও আজ প্লাস্টিকের ব্যাপকতা দেখতে পাওয়া যায়। ন্যায্য দাম না পেয়ে পাট চাষে আগ্রহ হারিয়েছে কৃষক। একে একে বন্ধ হয়েছে সরকারি পাটকলগুলো। তারপরও গত দুই বছর ধরে পাটের ভালো দাম পাচ্ছে কৃষক। পাটের দাম সর্বশেষ ৩২০০ টাকা মণ পর্যন্ত উঠেছিল। বর্তমান পাটের বাজার দর মণ প্রতি ২৮০০ থেকে তিন হাজার টাকা। এছাড়া বিভিন্ন হাটে ২৯০০ টাকায় ৪০ কেজি পাট বিক্রি হচ্ছে। বিশেষ করে সময় ও স্থানভেদে পাটের দাম কম-বেশি হয়ে থাকে। দেখা যায়, সিজনে পাটের দাম একটু কম হয়। আবার নন- সিজনে পাটের দাম তুলনামূলকভাবে বেশি। ফলে আশার আলো দেখছে দেশের পাট চাষিরা।
এ বছরও মৌসুমের শুরুতে ভালো দামে বিক্রি হচ্ছে পাট। পাট দিয়ে বর্তমানে ব্যাগ, পার্টস, জুতা, শতরঞ্জি, শিখা, পাপোশ, টুপি, মানিব্যাগ, কম্বল, ইত্যাদি তৈরি হয়। এসব পাটপণ্য বিদেশে রপ্তানি হয়।
এককভাবে বাংলাদেশ বিশ্বে উৎপাদিত কাঁচা পাটের ৪০% উৎপাদন করে। বর্তমানে বাংলাদেশে উৎপাদিত পাটের অধিকাংশ রপ্তানি হয় মধ্যপ্রাচ্যে। বেসরকারি পাটকলগুলো পাট ক্রয় করে পাটপণ্য উৎপাদন করে বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করছে।
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে পাটের যে অবদান রয়েছে সেটা অস্বীকার করা যাবে না। তাই সরকারি পাটকলগুলো আবার চালু করার মাধ্যমে সম্ভাবনাময় এই খাতকে সচল করতে হবে। তবেই সোনালি আঁশের ঐতিহ্য ফিরে পাবে বাংলাদেশ।