সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার
  •   দৈনিক ইনকিলাবের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শহীদুল্লাহ্ মিজির দাফন সম্পন্ন
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা

প্রকাশ : ১৪ জুন ২০২২, ০০:০০

প্রিয় বিভাগ
অনলাইন ডেস্ক

যখন উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হই তখন জীবন নিয়ে ভাবনা প্রায় শেষ হয়ে গেছে। সেই শুকনো গাছে যে কয়জন মনীষী বৃষ্টির পানি ছিটিয়ে ভূমিটিকে উর্বর করেছেন সে মানুষগুলো আমার কাছে সারাজীবন পূজনীয়। প্রিয় শিক্ষাগুরু প্রফেসর আসাদুল হাসনাত স্যার, যার প্রতিটি কথা ছিলো ঐশ্বরিক কোনো বাণীর মতো, যা শোনার জন্য আমরা চাতক পাখির মতো বসে থাকতাম। তাঁর কথাগুলো জীবনে সর্বসময় বেঁচে থাকার ও বড় হওয়ার অনুপ্রেরণা দেয়। অনার্স দ্বিতীয়বর্ষে প্যাথলোজি ব্যবহারিক ক্লাসে স্যার মাত্র ১ মিনিটে শিখিয়ে দিলেন প্র্যাকটিক্যাল কিভাবে করতে হয়।

এ জীবনের আরেকজন শিক্ষাগুরু যিনি আমাদেরকে নিজের সন্তানের মত সবসময় আদর করতেন ভালো উপদেশ দিতেন, জীবনে বড় হওয়ার জন্য অনেক পরামর্শ দিয়েছেন তিনি জনাব সুশীল কুমার নাহা স্যার। মোশারফ হোসেন স্যার-এর মিষ্টিভাষী কথা আর শাসন এখনো মাঝেমাঝে মনে পড়ে। প্রিয় মাহফুজ স্যার আমাদের সময়ে বিভাগে নবীন শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য শিক্ষকরা যে কতটা আপন ও উদার হতে পারে তা মাহফুজ স্যারকে না দেখলে বুঝতেই পারতাম না। বিভাগের সবচেয়ে আপন মানুষটি হলো কেশব, কেশব এমন মানুষ যিনি সবার উপকার করতেন। আমি যেহেতু এই কলেজ হতে এইচএসসি পাস করেছি তাই বিভাগের সবকিছুর সাথে অন্য কলেজ হতে আশা ছাত্র-ছাত্রীদের থেকে বেশি পরিচিত, আজও বিভাগের প্রত্যেকটি মাইক্রোস্কোপ আমাকে কাছে টানে, কারণ শিক্ষকগণ বদলি হয়েছে নতুন শিক্ষক আসছে কিন্তু মাইক্রোস্কোপগুলো এখনো কাজ করে যাচ্ছে। শুধু মাইক্রোস্কোপের উপরে চোখ রাখা ছেলেটি প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে।

অনার্স দ্বিতীয়বর্ষে অধ্যায়নের সময় বিভাগীয় প্রধান জনাব আসাদুল হাসনাত স্যারসহ কুমিল্লা কোটবাড়ি শিক্ষাসফরটি ছিলো মনে রাখার মতো। তখনকার সময়ে আমাদের কলেজের অধ্যক্ষ জনাব মোঃ ইকবাল স্যার আমাদের সাথে শিক্ষাসফরে যোগদান করেন। আজ হতে প্রায় দুইশত বছর আগে বৌদ্ধদের আমলে নির্মিত বিশ্ববিদ্যালয়ের নিদর্শন হচ্ছে কুমিল্লা কোটবাড়ি। মনোরম হোটেল নূরজাহানে দুপুরে ভোজন প্রক্রিয়া শেষ করে বাড়ি ফেরা যে কী আনন্দের তা বুঝানো কঠিন।

বিভাগীয় প্রধান জনাব সুশীল কুমার নাহা স্যারের নিজের বিশ্ববিদ্যালয় ছিলো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। তাই স্যার আমাদের অনার্স চতুর্থবর্ষে ডিএনএ লুপ ও বায়োটেকনোলজি ব্যাবহারিক প্রশিক্ষণের জন্য নিয়ে গিয়েছিলেন সবুজ পাহাড়ে ঘেরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে। এ যেন এক স্বপ্নিল জগত। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপূর্ব লীলাভূমি। পাহাড়ের কোলে গড়ে ওঠা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আঁকাবাঁকা পথে বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা আর বন্যপ্রাণীগুলো দেখতে অসাধারণ। শহরের কোলাহল আর যান্ত্রিকতা হতে দূরে পাহাড়ের কোলঘেঁষে মনোরম পরিবেশে অবস্থিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি বিভাগ। বিভাগের দায়িত্বরত বিভাগীয় প্রধান লুনা স্যার ছিলেন অমায়িক মানুষ। তিনি আমাকে ও বন্ধু এইচএম জাকিরকে খুব আলাদাভাবে ডিএনএ ও বায়োটেকনোলজির ব্যবহারিক শিক্ষা প্রদান করলেন। একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগীয় প্রধান যে এত ভালোমনের মানুষ হয় তা কখনো ধারণা ছিলো না। এই দিনটি ছিলো শিক্ষাজীবনের স্মরণীয় দিন। পাহাড়ের অন্যবাঁকে অবস্থিত বন বিভাগের কাছে রেস্টেুরেন্টে রূপচাঁদা মাছ দিয়ে ভোজন পর্ব শেষ করে যৌথভাবে ফটোসেশন করলাম। আর সেই ফটো জীবনে কোনো ইংরেজি The Daily Independent পত্রিকায় নিজের চেহারাখানা দেখে আমি অভিভূত। ট্রেনের একটি বগি ভাড়া নিয়ে গমন ও ফেরত আসা আর শিক্ষক-ছাত্র সম্পর্ক ভুলে গিয়ে কল-ব্রিজ খেলতে খেলতে কখন যে চাঁদপুর পৌঁছে গেলাম টেরই পেলাম না।

মোঃ রেজাউল করিম : সাবেক শিক্ষার্থী,

অনার্স শিক্ষাবর্ষ ২০০৪-২০০৫।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়