রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২০ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ২০ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০

পীযূষ কান্তি বড়ুয়ার একগুচ্ছ ছড়া
অনলাইন ডেস্ক

আকাশছোঁয়া মুজিব

সাদা পায়জামা সাদা পাঞ্জাবী

এরিনমোরের ধোঁয়া

তর্জনী তাঁর হিমালয় ছেড়ে

উঠেছে আকাশছোঁয়া।

ইতিহাসে তিনি মহাভাষণের

মহাকবিরূপে খ্যাত

মুজিব না হলে লাল-সবুজের

বাঙালি হতো না জ্ঞাত।

কিছু কিছু জাতি আজ পৃথিবীতে

রক্ত দিয়েই সারা

স্বাধীনতা ওরা পায়নি কারণ

তারা যে মুজিব ছাড়া।

মুজিব পেয়েছে শান্তি পদক

ধন্য জুলিও কুরি

সোনার হাতে যে সোনার কাঁকন

মানিয়েছে পুরোপুরি।

নদীর প্রবাহে রয়েছে মুজিব

মুজিব ফুটেছে ফুলে

তারাভরা রাতে মুজিবের আলো

জোছনাতে তুলতুলে।

মিনির ছড়া

মিনি ও তার চারটা ছানা

গিন্নি নানী আমি নানা

সেই ছানাদের উৎপাতে

যাবার যোগাড় ফুটপাতে

দুষ্টু খুবই ঝিন্টি-জবা

পন্ড করে আমার সভা

ফুলটুসি আর লালু দাদায়

ঝগড়া করে ও গোল বাধায়।

চার ছানাকে ডাকে নানী

ইস্ট ইন্ডিয়া ক্যাট কোম্পানি

ঘুমায় সোফায় ঘুমায় খাটে

আমাদের ঘুম বিকোয় হাটে

আমি ভাবি রোহিঙ্গারা

দিলোই বুঝি মাথা চাড়া

মিনি ও তার চার ছানায়

বাইরে গেলে থাকি টানায়।

পাঁচ বেড়ালের আখড়া এ ঘর

মালিক মিনি আমরা যে পর

দেশটা যে আজ মিনির খাঁচা

যারা মেকি তারাই সাঁচা।

বানর

গাছ কেটে বন উজাড় হলে

আবাস হারায় বানর

ক্ষুধায় কাতর তার পরিবার

নেইতো আহার-পান ওর।

বন ছেড়ে আজ বানরগুলো

আসলো লোকালয়ে

হাজার বাতির চমক দেখে

থাকলো বোকা হয়ে!

বানরগুলো আসলো ছাদে

পাশের বাড়ির টিনে

মন চাইছে খাওয়াই কলা

কয়েক ডজন কিনে।

গাছ কেটো না বন পুড়ো না

বন বানরের ভূমি

বানর হতেই সভ্য হলাম

আজকে আমি-তুমি।

বঙ্গবন্ধুর গুরুভক্তি

শিক্ষাগুরু মানুষ গড়েন মুজিব গড়েন জাতি

সেই মুজিবের কীর্তি-ভরা কালের দিবারাতি

শেখ মুজিবুর শিক্ষকদের যে সম্মানে দেখেন

প্রযুক্তিরই প্রজন্মের হোক তেমন গভীর এ ধ্যান।

শিক্ষা এবং শিক্ষাগুরু যুগল জ্যোতির প্রতি

বঙ্গবন্ধুর শ্রদ্ধা ছিল অকল্পিত অতি

তাঁর পরাণের গহীন জুড়ে শিক্ষাগুরুর ছবি

নিত্য তাঁকে পথ দেখাতো যেমন আকাশ-রবি।

পুণ্যপ্রাণের মাতাপিতা সায়েরা-লুৎফরে

খোকাকে দেয় হাতেখড়ি নিজেরা নিজ-ঘরে

গিমাডাঙার বেজেন্দ্রনাথ প্রাইমারিতে গুরু

তাঁর দুহাতে বিদ্যালয়ে খোকার পড়া শুরু।

খোকা যখন রাষ্ট্রপতি থাকতো বঙ্গভবন

বেজেনবাবুর পড়লো ধূলি মুজিব-গৃহে তখন

সকল নিয়ম তুচ্ছ করে মুজিব নেমে নিচে

গেট খুলে নেয় পায়ের ধুলো রইলো নিয়ম মিছে।

প্রধান শিক্ষক গিরীশ বাবু খুব আদরে পড়ায়

কাদা হতে শিল্পী যেমন প্রতিমাকে গড়ায়

গৃহে ছিলেন মৌলভী আর সাখাওয়াত পন্ডিত

তাঁদের পেয়ে শেখ মুজিবের রচিত হয় ভিত।

হামিদ সাহেব শেখায় তাঁকে মানবতার পড়া

মুষ্ঠিচালের সমিতিটা তাঁর দুহাতেই গড়া

সাখাওয়াত স্যার যেদিন গেলেন নোয়াখালি ফিরে

শেখ মুজিবুর দেন এগিয়ে বেডিং নিয়ে শিরে।

মনোরঞ্জন গণিত বুঝান ঠিক যেন তা পানি

রসরঞ্জন ইংরেজিতে ছিলেন ভীষণ জ্ঞানী

বাবা-ছেলের খেলার মাঠে বাধলো যখন বিরোধ

শিক্ষাগুরু রসরঞ্জন নিজেই করেন নিরোধ।

জুবেরী স্যার কলেজজুড়ে মুজিবকে না দেখে

বলতো তাঁকে রাজনীতি নয় পাঠ্য যেন শেখে

নারায়ণ স্যার, সাইদুর স্যার আরও দুয়েকজনে

শিক্ষাগুরুর আসন নিয়ে আছেন খোকার মনে।

নোয়াখালির সার্কিট হাউজে শিক্ষকের সম্মানে

কী করেছেন বঙ্গবন্ধু সব জাতি আজ জানে

নিজের ছেলে শেখ রাসেলের শিক্ষিকা কে হবে?

বঙ্গবন্ধু গীতালিকে দেখেই বললো, হবে।

তোফায়েল তার শিক্ষককে দেয় পরিচয় করে

মুজিব তাঁকে সালাম করতে বলেন পায়ে ধরে

শিক্ষকেরা আলোর মানুষ জ্ঞানের জোয়ার বহান

মুজিব ছিলেন শিক্ষাগুরুর শিষ্টাচারে মহান।

ঊনিশশো বিশ সতেরো মার্চ জন্মেছে যে ছেলে

গুরুভক্তির উপমা আর তাঁর মত না মেলে!

রাষ্ট্রপতির পদে থেকেও মাটির মানুষ খোকা

রবির মতো জ্বলছে গুণে খায়নিকো ঘুণপোকা।

আমার দেশ

পাহাড় হতে ছুটলো নদী

আমার গাঁয়ের পাশে

চলার ছন্দে নূপুর-ধ্বনি

যেন মায়ের আসে।

নদীর স্নেহে ধানের ক্ষেতে

বসলো টিয়ার মেলা

এমন ছবি আঁকতে খুকুর

কাটলো কি আর বেলা!

খুকুর রঙে উঠলো ফুটে

লাল-সবুজের দেশে

দেয় ভিজিয়ে আকাশখানি

মেঘ তবু ঢের এসে।

মেঘের মধ্যে জলকণারা

নামলো যখন স্নানে

খুকুর রঙে ফুল পরীরা

নাচলো তখন গানে।

খুকুর আঁকা ছবির মাঝে

আমার মায়ের হাসি

উঠলো ফুটে আঁধার টুটে

মুক্তো রাশি রাশি।

প্যাঁচা

গাছের কোটরে আশ্রয় তার

গাছের কোটরে শ্বাস

গাছ দেয় তারে মায়ের মমতা

আগলিয়ে বারোমাস।

দিনে সে দেখে না রাত্রে দৃষ্টি

আঁধারের মাঝে ছোটে

তার জোড়া চোখে দুইখানা মণি

শতদল হয়ে ফোটে।

ডাক্তার তাকে বলেছিল দেখে

দু’চোখে হলুদ মাখা

লিভার তোমার বিলিরুবিনের

গোলা যেন ধান পাকা।

তার দুখ ভারী মানুষ যে তাকে

উপমায় দেয় ছ্যাঁচা

কারো মুখ ভার হলে তারে বলে

মুখ যেন তোর প্যাঁচা।

গাছের কোটরে কাটে দিন তার

রাত কাটে বনে চরে

ভয়ের প্রতীক প্যাঁচা বেঁচে থাকে

উপহাসে ঘরে ঘরে।

মা

আমার যখন এই ধরনীর ধূলায় নেমে আসা

প্রসব ব্যথায় মা জননী উঠল ঘেমে খাসা

তারও আগে ন'মাস ধরে

মা বয়েছে খাস উদরে

মনের ভেতর প্রতিদিনই মা বুনেছে আশা

জন্মে আমি কেঁদে দিলেও মায়ের হলো হাসা।

জগত হলো মায়ের মতো

জন্মে মানুষ শত শত

জগত-মাতা পালে তাদের আলো-বায়ু-জলে

তা না হলে মরতো মানুষ নিত্য আয়ু গলে।

মুক্তিসেনার স্বদেশ ছিলো মায়ের সমান বড়ো

ন'মাস ধরে যুদ্ধে কাঁপায় বিশ্ব থরোথরো

নিজের মা আর দেশমাতাকে এক করে যে দেখে

পৃথিবীতে নিজ ইতিহাস নিজেই তাঁরা লেখে।

আমার মায়ের মুখখানি আজ আকাশ-তারা হয়ে

ঝিকিমিকি জ্বলছে, পড়ে অশ্রুধারা ক্ষয়ে।

খাদ্য ব্যাংক

গাছের খাবার খায় মানুষে

লোভ-লালসার লোলে

বৃক্ষখেকোর খাবার তাই আজ

গাছের ডালে ঝোলে।

গাছের কোন দাঁত থাকে না

সেই সুবিধায় শাখে

পোঁটলা বেঁধে মানুষ গাছে

খাবার জমা রাখে।

দন্তবিহীন দাদীর মতো

গাছগুলো তাই পারে

ব্যাংকরূপে সে ঠায় দাঁড়াতে

পোঁটলাগুলোর ভারে।

গাছগুলো কেউ নয়কো অসুর

নয় মানুষের মতো

মানুষ তবু গাছ কাটাকেই

করছে জীবন-ব্রত।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়