প্রকাশ : ০৬ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০
তখন আমি ক্লাস এইটে পড়ি। বছরের শুরুতে নতুন নতুন সাইকেল চালানো শিখেছিলাম। প্রায় রোজ সকালে খানপুর মাঠে যেতাম সাইকেল চালানো শিখতে। আমার সঙ্গে আমার বড় বোনও শিখত। একদিন আম্মু বলল, সাইকেল চালিয়ে স্কুলে অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিয়ে আসতে।
আমি প্রথমে রাজি হইনি। পরে আবার রাজি হলাম। অনেক আনন্দ এবং উৎসাহ নিয়ে সাইকেল চালিয়ে গেলাম স্কুলে। বেশ সকালের দিকেই গিয়েছিলাম, তাই রাস্তায় তেমন গাড়ি ছিল না। মানুষও কম ছিল। বেশ আনন্দ নিয়ে কোনো বাধা ছাড়াই পৌঁছে গেলাম স্কুলে।
তখন আমার চেয়ে বেশি খুশি আর কার? স্কুলে সাইকেল চালিয়ে গিয়েছি। যে সে ব্যাপার নাকি? আমার বান্ধবীদেরও বললাম। মনে মনে স্বপ্ন দেখা শুরু করলাম, এখন থেকে আমি স্কুলে সাইকেল চালিয়ে যাব।
আমার চেয়ে বেশি ভাব আর কার থাকবে? কিন্তু তখনো বুঝতে পারিনি যে একটু পরেই আমার এই স্বপ্ন ধূলিস্যাৎ হয়ে যাবে। অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিয়ে বের হলাম। সাইকেলে উঠে আম্মুর রিকশার পেছনে পেছনে যাওয়া শুরু করলাম।
তখন অনেক বেলা হয়ে গেছে। রাস্তায় গাড়ি আর মানুষ দুটোই ছিল বেশি। ঠিক তখনই চলতে চলতে হঠাৎ একটা গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা লাগল। তারপর শুরু হলো জ্যাম।
তখন ভয় আরও বেড়ে গেল। তাই আম্মু রিকশা থামিয়ে আমার সাইকেল রিকশাচালক আঙ্কেলকে আনতে বলল।
তখন অনেকখানি রাস্তা রিকশাতেই গেলাম। এমনকি আমার সাইকেল পর্যন্ত রিকশায়। বাড়ির প্রায় সামনে আসার পর আম্মু নামিয়ে দিল। বলল, এখন আর রিকশা না। সাইকেল চালিয়েই যাও। নয়তো রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকো।
উপায় না পেয়ে আমাকে আবার ভয়ে ভয়ে সাইকেল চালিয়েই বাড়ি ফিরতে হলো। কিন্তু এ ঘটনায় আমি এত ভয় পেলাম যে আর কোনো দিন সাইকেল চালিয়ে কোথাও যাওয়ার চেষ্টা করিনি।