শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৯ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।
  •   রাষ্ট্রীয় পদে আসীন হচ্ছেন খবরে আসামিপক্ষে শুনানি করলেন না সমাজী।

প্রকাশ : ০৭ এপ্রিল ২০২২, ০০:০০

ইচ্ছা স্বপ্ন শক্তি
অনলাইন ডেস্ক

জীবন!

জীবন বড়ই নিষ্ঠুর। এতোটুকু বললে হয়ত ভুল হবে। জীবন তো নতুন নতুন খুশির জন্যে, স্বপ্ন দেখার জন্যে। কিন্তু এই জীবনকে ভয়ঙ্কর করে তোলে মানুষের কর্মকাণ্ডই।

চলে এসেছো?

হ্যাঁ মানে,

কাজ হয়েছে ?

হয়েছে।

ভয় লাগছে।

ভয়ের কী আছে?

অন্যায়ভাবে সে চাকরি দেয়নি তোমাকে। তুমি অনেক অনুরোধ করেছো। তবুও দেয়নি। তার শাস্তি সে পেয়েছে। এখন তার পরিবারকে তার জন্যে কাঁদতে হবে। হুম ঠিক বলেছো। আমি এখন খেয়ে নিই। কালকে অন্য জায়গায় যাবো চাকরি খুঁজতে।

হুম ঠিক আছে। আমি চলে যাচ্ছি।

পরদিন সকাল হয়েছে। আশরাফ হঠাৎ শুনতে পেলো, ঘুম থেকে ওঠো। চাকরি খুঁজতে যাবে না?

হুম।

পেপারটা পড়ো আজকের।

কি? অফিসের মালিকের খবর এসেছে?

হুম তাই এসেছে।

এভাবে আর কতোদিন চলবো?

যতদিন না তুমি নির্ভয়ে দাঁড়াতে পারো।

চাকরির খোঁজে যাচ্ছি। তখনই এক পরিচিত মানুষের সাথে দেখা।

কিরে আশরাফ, কেমন আছো?

আছি ভালো তুমি?

ভালো। তারপর বলো আর কী খবর?

আসলে,

কী করছ? সব বলে দিও না। মনে রেখো যে যত আপনই হোক না কেনো, সবাই মানুষ। কাউকে বিশ্বাস করা যায় না।

কিরে আশরাফ পাশে তাকিয়ে কী ভাবছো?

নাহ মানে,

ওহ! চাকরির জন্য চিন্তিত? এখন চাকরি পাওয়াও বড় কঠিন। ভালো কথা, আজকে সকালেই তো দেখলাম কোনো এক অফিসের মালিককে চাকরি না দেয়ার জন্যে মেরেছে।

হুম চাকরি না দিলে তো এমনই হবে।

কিছু বললে আশরাফ?

নাহ কিছু না। আমাকে এখন যেতে হবে।

আচ্ছা ঠিক আছে।

আচ্ছা সাদিক শোনো,

হ্যাঁ ডাকলে?

তোমার অফিসে আমাকে একটা চাকরি দেয়ার ব্যবস্থা করবে?

আমি কিভাবে ব্যবস্থা করবো। আচ্ছা আমি যাই।

দেখেছো তোমাকে বললাম না মানুষ আপন হয় না।

কিন্তু ও তো আর অফিসের মালিক না। ও কিভাবে ব্যবস্থা করবে?

ও চাইলে তো করতে পারতো কিন্তু ও হিংসার জন্যে করলো না।

আমার ফাইলটা ধরো।

কী হলো চাকরি খুঁজতে যাবে না?

যাবো, কিন্তু তার আগে একটি কাজ আছে।

যাও।

চলে এসেছো? কাজ হয়েছে?

হ্যাঁ হয়েছে।

চলো এবার যাওয়া যাক।

চলো।

ইন্টারভিউর অপেক্ষা করছি।

আরে আশরাফ ভাই, আপনি এখানে।

জি মুবিন ভাই কেমন আছেন?

আলহামদুলিল্লাহ। চাকরির খোঁজে এখানে?

জি।

আমিও চাকরির খোঁজে এসেছি। চাকরিটা পেলে ভালোই হতো।

একটা কথা বলি আশরাফ সাহেব, আপনি অনেক সহজ-সরল। আপনি এতো সহজে চাকরি পাবেন না। আর তা ছাড়া চাকরি পেতে অনেক যোগ্যতা লাগে। আপনাকে সবাই ঘুরাবে।

জি ঠিক বলেছেন।

আচ্ছা আমাকে চাকরির জন্যে ডাকছে। আমি যাই।

আচ্ছা।

আশরাফ ভাই আমার চাকরি হয়ে গেছে। আপনাকে ডাকছে যান। আমি চলে যাবো এখন।

আচ্ছা ঠিক আছে।

এসেছো? চাকরি হয়েছে?

না।

সব ওই মুবিনের দোষ। ওই তোমাকে এসব বলেছে দেখে তোমার চাকরি হয়নি।

মনে হয় তুমি ঠিক বলছো।

মুবিন এতোক্ষণ আড্ডা দিয়ে মাত্র বের হলো। বেশি দূর হয়তো যায়নি। যাও।

আচ্ছা তুমি থাকো।

এসে গেছো? এবার বাসায় যাওয়া যাক।

চলো।

কালকে আরেক জায়গায় যাবো চাকরি খুঁজতে। এই নিয়ে দুই বছর ঘুরছি চাকরির খোঁজে। কালকে চাকরি না পেলে আর কত দিন এভাবে ঘুরতে হবে জানি না।

থাক এখন ঘুমিয়ে পড়ো।

পরদিন আবার সে শুনতে পেলো, ওঠো! চাকরির জন্যে যাবে না?

হুম চলো। ভয় লাগছে চিন্তা হচ্ছে। আজকে চাকরি হবে তো।

দেখা যাক। তোমাকে ডাকছে যাও।

যাচ্ছি।

এসে গেছো? চাকরি হয়েছে?

আমি অনেক খুশি। চাকরিটা শেষ পর্যন্ত হয়ে গেছে।

যাক ভালো হয়েছে। এখন বাসায় চলো।

হুম চলো।

তিন মাস হয়ে গেলো চাকরি পেয়েছি। খুব ভালো লাগছে। আজকে আবার বাইরে বৃষ্টি। অফিসে যেতে আবার দেরি না হয়ে যায় সেই চিন্তাই করছি।

নাহ! আজ একটু না, একটু বেশিই দেরি হয়ে গেলো।

এসেছো? এতো দেরি কেন?

সরি স্যার! বাইরে বৃষ্টি হচ্ছিল তো তাই রিকশা পেতে একটু দেরি হয়ে গেলো।

সেটা আমার দেখার বিষয় না। ফাইলগুলো কোথায়?

স্যার আমার ড্রয়ারে।

কিন্তু ড্রয়ারের চাবি তো তোমার কাছে। তোমার জন্যে মিটিং থেমে গেছে। এর কৈফিয়ত তুমি দেবে?

স্যার আজকে অনেক কথা শোনালো।

আর তুমি চুপ ছিলে?

তুমি? এতদিন পর? এতদিন কোথায় ছিলে?

তোমার স্যারকে কিছু বলবে না?

নাহ, থাক!

কেন? তার সাহস কিভাবে হয় তোমাকে এভাবে সবার সামনে অপমান করে।

ঠিক বলেছো। আমি আসছি।

যাও।

আশরাফ অফিসের মালিককে আঘাত করতে গিয়ে ধরা খেয়ে যায় এবং তার প্রত্যেকটি অপরাধ ধীরে ধীরে সবার সামনে চলে আসে।

পুলিশ আমাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে, আমাকে বাঁচাও।

জীবনটা এমনই! কখন যে নিজের ছায়াও ধোঁকা দিয়ে দেয় বলা যায় না। একটা সময় ছায়াও বাতাসের সাথে মিশে অদৃশ্য হয়ে যায়।

কোথায়? তোমাকে দেখতে পাচ্ছি না।

আমার যাওয়ার সময় হয়েছে।

মানসিকভাবে অসুস্থ বলে আশরাফ সাহেবের শাস্তি কমে যায় এবং তাকে চিকিৎসা দেয়া হয়।

কিন্তু সময় কেটে গেছে। সময় তো কাটবেই। কিন্তু সময়কে সুন্দর করা আমার দায়িত্ব। এখন আমি সুস্থ। জীবনের পথে নতুন বাঁকে হাঁটতে এখন আমিও শিখে গেছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়