প্রকাশ : ২৫ এপ্রিল ২০২২, ২২:৪০
হাজীগঞ্জের যত্রতত্র খাল ভরাটে ইরি-বোরো জমিতে জলাবদ্ধতা
হাজীগঞ্জের যত্রতত্র খাল ভরাটে ইরি বোরো জমিতে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এতে করে প্রায় একশ’ হেক্টর জমির ধান নষ্টের আশঙ্কা করছেন প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকরা। একই সাথে গত সপ্তাহের ঝড়ো হাওয়ায় হেলে যাওয়া ধান ইতিমধ্যে নষ্ট হওয়ার উপক্রম দেখা দিয়েছে।
|আরো খবর
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার বাকিলা ইউনিয়নের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া সড়ক বিভাগের খাল, কালচোঁ, রাজারগাঁও ইউনিয়নের বোয়ালজুরি খাল,পৌর এলাকা ধরে হাটিলা ইউনিয়ন এলাকার উপর দিয়ে বয়ে গেছে শৈলখালি খাল। গন্ধর্ব্যপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের ডাটরা-শিবপুর গ্রামে ‘গম’ নামক খালটি দখল ও ভরাট করার কারণে মাত্র একদিনের বৃষ্টিতেই কয়েক হেক্টর ইরি-বোরো ধানের জমিতে জলাবদ্ধতা দেখা গিয়েছে। খাল দখলমুক্ত ও দখল ছাড়া অংশে খাল খনন এবং পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টির চার দিন পরেও এসব জমির পানি নামছে না। এতে কয়েকশ’ একর জমির ধান পানিতে তলিয়ে নষ্ট হওয়ার আশংকা করছেন কৃষকরা।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, ডাটরা-শিবপুর হাজীগঞ্জের অন্যতম কৃষি মাঠ। প্রতি বছর এ মাঠের শত শত একর জমিতে ইরি-বোরো ধানের চাষাবাদ হয়ে থাকে। গ্রামের মধ্য দিয়ে ‘গম’ নামক খালটি পাশ্ববর্তী শাহরাস্তি উপজেলার কিছু অংশে রয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে যার যার ইচ্ছেমতো খালটি দখল ও ভরাট করেই চলছেন খাল সংলগ্ন স্থানীয়রা। এতে করে অতিরিক্ত বৃষ্টি হলেই কৃষি মাঠে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়।
গত সপ্তাহে এক দিনের বৃষ্টিতে মাঠে পানি জমে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। যার ফলে মাঠের নিচু জমিতে প্রায় হাঁটু পানি এবং উপরের জমিতে পানি জমে আছে। অথচ মাঠে জুড়ে রয়েছে কাঁচা-পাকা ও আধাপাকা ইরি-বোরো ধান। এমন অবস্থায় মাঠের কৃষকরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। ধান গাছ মরে কাঁচা ও আধাপাকা ধান নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এর মধ্যে দৈবাৎ ফেন বৃষ্টি হলে মাঠের ফসল পানির নিচে তলিয়ে যাবে।
কৃষকরা অভিযোগ করে বলেন, গত কয়েক বছর ধরে স্থানীয়রা খাল সংলগ্ন নিজ নিজ বাড়ির ও সম্পত্তির সামনে খালটি ভরাট করে দখল নিয়েছেন। বিশেষ করে ডাটরা শিবপুর গ্রামের আঠিয়া বাড়ি ও মজুমদার বাড়ির অংশে এবং সংলগ্ন এলাকায় খালটি দখল করার কারণে সামান্য বৃষ্টিতেই পুরো মাঠে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। এছাড়াও দীর্ঘদিন খাল খনন ও সংস্কার না করায় ক্ষতিগ্রস্তের সম্মুখীন হচ্ছেন তারা।
উক্ত ইউনিয়নের ব্লক সুপারভাইজার রুহুল আমিন ভূঁইয়া জানান, বিষয়টি স্থানীয় কৃষকরা জানিয়েছেন এবং তিনি নিজেও দেখেছেন। মাঠে এখন যে পরিমাণ পানি আটকে আছে, এতে ফসলের কোনো ক্ষতি হবে না। তবে আবারো বৃষ্টি হলে কিছুটা ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে । তারপরেও এই জলাবদ্ধতা নিরসনে আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবো। যাতে করে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া যায়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবীদ দিলরুবা খানম চাঁদপুর কণ্ঠকে জানান, জলাবদ্ধতার বিষয়টি আমি ২৪ এপ্রিল রোববার সকালে জানতে পেরেছি। আমি এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে তাৎক্ষনিকভাবে জলাবদ্ধতার বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করবো। তবে দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে বিষয়টি আমি উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় উপস্থাপন করবো।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাশেদুল ইসলাম জানান, খাল দখলের অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে। যদি খালটি সরকারি হয়ে থাকে তাহলে কারো দখলের কোন সুযোগ নেই।