করোনাকালে পড়াশুনা নিয়ে আমরা কোন সমস্যায় পড়িনি

বৈশ্বিক মহামারি করোনার প্রভাবে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিলো টানা সতের মাস। বন্ধের কয়েক মাস পর সারাদেশে অনলাইন ক্লাস চালু হলেও ডিজিটাল এ কার্যক্রমটি সবার আগে শুরু করে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল & কলেজ। তাই করোনাকালীন সময়ে পড়ালেখায় খুব একটা ব্যঘাত ঘটেনি এ প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের। এমনটিই জানিয়েছেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল & কলেজ, চাঁদপুর এর শিক্ষার্থী প্রত্ন পীযূষ বড়ুয়া। চাঁদপুর কণ্ঠের ধারাবাহীক বিশেষ আয়োজন 'স্কুলে ফিরতে শিক্ষার্থীদের ব্যকুলতা'র এই পর্বে কথা বলা হয় তার সাথে। পর্যায়ক্রমিক প্রশ্নের উত্তরে জানা যায় করোনাকালীন পড়ালেখা, অনলাইন ক্লাস ও এ্যাসাইনমেন্টের ইতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে।

চাঁদপুর কণ্ঠ: করোনায় কেমন চলছে পড়াশুনা? প্রত্ন পীযূষ বড়ুয়া: করোনাকালে আমার পড়াশুনা ভালোই চলছে। করোনার কারণে দুহাজার কুড়ি সালের সতের মার্চে স্কুল বন্ধ হয়ে গেলেও আমাদের ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে ঊনিশে মার্চ থেকে অনলাইনে ক্লাস কর্মসূচি চালু হয়। অনলাইনে ক্লাস করা সরাসরি পড়াশুনার মতোই আনন্দদায়ক ছিলো। অনলাইনে আমরা পরীক্ষাও দিয়েছি নিয়মিত। কাজেই বলা যায়, করোনাকালে পড়াশুনা নিয়ে আমরা কোন সমস্যায় পড়িনি। পড়াশুনা ভালোই চলেছে।

চাঁদপুর কণ্ঠ: মানসিক অবস্থা কেমন? প্রত্ন পীযূষ বড়ুয়া: করোনাকালে আমি মানসিকভাবে ভালোই আছি। ভার্চুয়ালি বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় এ সময় আমি অংশগ্রহণ করেছি। জেলা প্রশাসন, জেলা শিল্পকলা একাডেমি ও স্কুল কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় আমি অনলাইনে অংশগ্রহণ করে পুরস্কৃত হয়েছি। তাছাড়া বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি পরিষদ, চাঁপুর জেলা শাখার লাইভ অনুষ্ঠান পরিবেশনেও ব্যস্ত সময় কেটেছে।

চাঁদপুর কণ্ঠ: আপনি কি মনে করেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সময়ের দাবী? প্রত্ন পীযূষ বড়ুয়া: শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রায় সতের মাস বন্ধ আছে। বুঝতে পারছি, তা খুলে দেয়া দরকার। তবে এটাও সত্য, করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না এনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা যাবে না। কেননা, শিক্ষার্থীরা দেশের সবচেয়ে নাজুক ও গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাদের কোন ক্ষতি হলে তা জাতি মেনে নিবে না। করোনা সংক্রমণের হার এখন দশ বা তার নীচে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আগামী বারো সেপ্টেম্বর নাগাদ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এটা আমাদের জন্যে খুশির সংবাদ।

চাঁদপুর কণ্ঠ: অনলাইন পাঠদান কতটা ফলপ্রসূ হচ্ছে বলে মনে করেন? প্রত্ন পীযূষ বড়ুয়া: অনলাইনে পাঠদানের ফলাফল ডিজিটাল ডিভাইসের প্রাপ্যতার উপর নির্ভরশীল। যাদের ওয়াই ফাই ও অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল আছে তারাই এর সুফল ভোগী। করোনা সংক্রমণকাল আমাদের নতুন যুগে নিয়ে গেছে। আমরা ডিজিটাল বিপ্লবে প্রবেশ করেছি। অনলাইনে পাঠদান কার্যকরভাবে ফলপ্রসু। তবে সবার জন্যে স্মার্ট ফোন ও ওয়াই ফাই সুবিধা নিশ্চিত করা দরকার।

চাঁদপুর কণ্ঠ: শিক্ষার্থীরা এ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে কতটা উপকৃত হচ্ছে বলে মনে করেন? প্রত্ন পীযূষ বড়ুয়া: অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই শিক্ষার্থীরা উপকৃত হচ্ছে এবং হয়েছে। শিক্ষা কার্যক্রম এর মাধ্যমে কিছুটা হলেও এগিয়েছে। এতে ছাত্রছাত্রীরা পড়াশুনার মধ্যে ব্যস্ত থাকছে।

চাঁদপুর কণ্ঠ: স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুল-কলেজ খোলার বিষয়ে আপনার মতামত কী? প্রত্ন পীযূষ বড়ুয়া: স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুল-কলেজ এখন খুলে দেয়া যেতে পারে এবং পূর্বোক্ত প্রশ্নের উত্তরে বলা আছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চান আগামী বারো সেপ্টেম্বর যাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হয় এবং তা অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে।

চাঁদপুর কণ্ঠ: গত প্রায় দেড় বছরে স্কুল জীবনের কোন স্মৃতিগুলো বেশি মনে পড়েছে? ফিরে যেতে ইচ্ছে করে স্কুল ক্যাম্পাসে? প্রত্ন পীযূষ বড়ুয়া: গত প্রায় সতের মাস ধরে স্কুল বন্ধ থাকলেও বার বার বন্ধুদের কথা মনে পড়ছে। অবশ্য অনলাইন ক্লাসে অনেকের সাথে কথা হয়, মুখ দেখি তাদের। কিন্তু ধরতে পারি না হাত দিয়ে। স্কুলের অ্যাসেম্বলি, বাগান, মাঠের ঘাস.. এগুলোকে মিস করি খুব। ইচ্ছে হয় প্রিয় শিক্ষকদের সরাসরি দেখি। স্কুলই তো আমাদের বড় বিনোদন। আশাকরি করোনা একদিন নিয়ন্ত্রণে আসবে। আমরা আবার সরাসরি স্কুলে যেতে পারবো। সেই শুভ ক্ষণটির প্রতিক্ষায় আছি।