মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার
  •   দৈনিক ইনকিলাবের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শহীদুল্লাহ্ মিজির দাফন সম্পন্ন
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা

প্রকাশ : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০

শিখন-বান্ধব পরিবেশ

শিখন-বান্ধব পরিবেশ
মোহাম্মদ সাইফুর রহমান

শিখন পরিবেশ বলতে সেই পরিবেশকে বুঝায়, যেখানে শিখন-শেখানো কার্যাবলি পরিচালিত হয়। শিখন পরিবেশ হতে হয় শিখন-বান্ধব। শিখন বান্ধব পরিবেশ বলতে শিখনের অনুকূল পরিবেশকেই বোঝায়। শিক্ষক এমন পরিবেশ সৃষ্টি করবেন যাতে শিশুরা নিজেই তাদের পাঠ্য বিষয় নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করার সুযোগ পায়। শিখনের বিষয়বস্তুর প্রতিটি বিষয় নিয়ে নিজে নিজে ব্যাখ্যা করতে আগ্রহী হয়ে উঠে। এটি এমন একটি পরিবেশ যেখানে একজন অন্যের মতামতের সাথে নিজের মতামতের সমন্বয় করে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। যেখানে শিক্ষক একজন সহায়ক বা মেন্টর হিসেবে কাজ করে। যেহেতু শিখন-শেখানো কার্যক্রম পরিচালনার মূল স্থান হলো শ্রেণি কক্ষ, সেহেতু শিখন-বান্ধব পরিবেশ বলতে মূলত শ্রেণি কক্ষের পরিবেশকেই বোঝায়। তবে বিদ্যালয়ের অন্যান্য বিষয়াদি ও বিবেচ্য। তাই শিখন পরিবেশ বজায় রাখতে হলে মূলত শ্রেণি কক্ষকেই প্রাধান্য দিতে হবে। এক্ষেত্রে যেসব বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখতে হবে তাহলো :

১। শিশুদের মনে আঘাত দেয়া যাবে না।

২। শিশুদের তিরস্কার না করা।

৩। শিশুদের সন্তানের মত আদর, যত্ন, স্নেহ, মমতা দ্বারা শিখন শেখানো কার্যক্রম পরিচালনা করা।

৪। শিশুদের মনোযোগ আকর্ষণের জন্য বিভিন্ন কলাকৌশল ব্যবহার করা।

৫। বিষয়বস্তু সম্পর্কে সঠিক তথ্য প্রদান করা।

৬। শিক্ষার্থীদের মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক উন্নত করা।

৭। কোলাহল শূন্য পরিবেশ সৃষ্টি করা।

৮। পাঠে মনোযোগ বাড়ানোর জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

৯। শিশুদের স্ব-শিখনে উদ্বুদ্ধ করা ও সহযোগিতা করা।

শিশুদের শ্রেণির শিখন পরিবেশ উন্নত করতে হলে পারিপাশির্^ক পরিবেশ ও শিখন-বান্ধব ও আকর্ষণীয় হওয়া দরকার। এক্ষত্রে বিদ্যালয়ের দেয়াল, শ্রেণিকক্ষের দেয়াল সজ্জিত করা দরকার। বিদ্যালয়ে আঙিনায় বনায়নসহ আকর্ষণীয় পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। শিখন-বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টিতে শিশুদের ব্যক্তিগত আচার-আচরণ ও অনেকটা কার্যকরী অবদান রাখে। তাই তাদের আন্তঃসম্পর্ক উন্নয়নের জন্য কাজ করতে হবে। অন্যদিকে শিক্ষকের আচার-আচরণ ও শিখন পরিবেশকে প্রভাবিত করে। শিক্ষক যদি পিতৃ-মাতৃতুল্য আদর সোহাগ দ্বারা শিশুদের কাছে টানে তাহলে তারা বাড়িতে বসে না থেকে বিদ্যালয়ে আসতে আগ্রহী হয়ে উঠবে। আবার শিক্ষকের এর বিপরীত আচরণে শিশুরা ভীত হয়ে বিদ্যালয় ছেড়ে পালিয়ে বেড়াতে চেষ্টা করবে। তারা বিদ্যালয়ে আসতে চাইবেনা। সুতরাং শিখন পরিবেশ সৃষ্টিতে শিক্ষকের ভূমিকাও অনস্বীকার্য। শিখন-বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টিতে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে শিশুরা যাতে বিদ্যালয়ে এসে পড়াশুনার পাশাপাশি খেলাধুলা ও অন্যান্য সাংস্কৃতিক কাজে ও অংশগ্রহণের সুযোগ পায়। এতে করে বিদ্যালয়ের প্রতি তাদের আকর্ষণ বাড়ে। তারা বিদ্যালয়কে তাদের সকল কাজের উপযুক্ত স্থান হিসেবে পেয়ে আনন্দিত হয়। ফলে তারা বিদ্যালয়ে আসতে উন্মুখ হয়ে থাকে এবং অন্যদেরকে ও আসতে উদ্বুদ্ধ করে।

পরিশেষে আমরা বলতে পারি শিখন বান্ধব পরিবেশ হলো শিখনের সেই পরিবেশ যেখানে শিশুরা ভয়- ভীতিহীনভাবে আনন্দের সাথে পারস্পরিক মত বিনিময়ের মাধ্যমে শিখনের সুযোগ পায়। মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমাদের অবশ্যই উন্নত শিখন পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে।

লেখক : প্রধান শিক্ষক, তুষপুর সপ্রাবি, মতলব দক্ষিণ, চাঁদপুর।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়