প্রকাশ : ১৭ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০
১৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৮৫ শিক্ষকের মধ্যে কর্মরত ৫১
শিক্ষক স্বল্পতায় রাজারগাঁও ইউনিয়নে প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত
হাজীগঞ্জ উপজেলার রাজারগাঁও ইউনিয়নে প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম প্রায় হুমকির মুখে পড়েছে। সরকার প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থাকে বাধ্যতামূলক করলেও দীর্ঘদিন যাবৎ শিক্ষক স্বল্পতায় খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে হাজীগঞ্জ উপজেলার ১নং রাজারগাঁও ইউনিয়নের প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম। ১৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৮৫টি শিক্ষক পদ থাকলেও কর্মরত আছেন ৫১ জন। বাদবাকি পদের মধ্যে শূন্য, কেউ কেউ ডেপুটেশনে, কেউ পিটিআই ট্রেনিংয়ে আছেন। এমন শিক্ষক স্বল্পতায় পাঠদানে ব্যাঘাত ঘটছে।
সরজমিনে বিদ্যালয়গুলো ঘুরে দেখা যায়, ইউনিয়নে মোট ১৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীর ভর্তি হাজিরা অনুযায়ী শিশু শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত ২৩৩৯ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। ১৪টি বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষক পদ সংখ্যা হচ্ছে ৮৫টি। তার মধ্যে শূন্য পদ আছে ২৩। আলীগঞ্জ পিটিআই ডিপিএডে আছে ৮ জন এবং নিজেদের সুবিধা অনুযায়ী ডেপুটেশনে আছেন ৩ জন। বর্তমানে ১৪টি বিদ্যালয়ে ৫১ জন শিক্ষক আছেন শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্বে। যা গড়ে চারজনেরও কম।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২নং দক্ষিণ-পশ্চিম রাজারগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ১৩১ জন। শিক্ষক পদ সংখা ৫ জন। নিজ সুবিধার্থে খাদিজা আক্তার নামে একজন শিক্ষক ডেপুটেশনে আছেন বাকিলার গোগরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
৫নং পূর্ব রাজারগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ২৩২ জন। শিক্ষক পদ ৯টি, তার মধ্যে আছেন ৬ জন। বর্তমানে একজন মাতৃত্বকালীন ছুটিতে, কর্মরত আছেন ৫ জন।
৬নং রাজারগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা ২৬১ জন। শিক্ষক পদ ৯টি, তার মধ্যে আছেন ৬ জন। হালিমা আক্তার নামে একজন নিজ সুবিধার্থে কালোচোঁ ইউনিয়নের চিলাচোঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ডেপুটেশনে আছেন। বর্তমানে কর্মরত আছেন ৫ জন।
৭নং মেনাপুর আগরজান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা ১৩০ জন। শিক্ষক পদ ৫টি। কর্মরত আছেন ৪ জন, তার মধ্যে ডিপিএডে আছেন ২ জন। বর্তমানে বিদ্যালয়ে কর্মরত আছেন ২ জন।
৮নং মেনাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা ২৩৪। শিক্ষক পদ ৮টি, আছেন ৫ জন। ডিপিএডে আছেন ১ জন। আয়রিন আক্তার নামে একজন নিজের সুবিধার্থে মহামায়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ডেপুটেশনে আছেন। এ বিদ্যালয়ে বর্তমানে কর্মরত আছেন ৩ জন।
৯নং মুকুন্দসার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা ২৬৪ জন। শিক্ষক পদ ৭টি। কিন্তু নিয়োগ আছে ৪ জন। এর মধ্যে ডিপিএডে আছেন ১ জন। বর্তমানে কর্মরত আছেন ৩ জন।
১০নং আহমেদাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা ২০১ জন। শিক্ষক পদ ৫টি, নিয়োগ আছে ৪ জন। ডিপিএডে আছেন ১ জন, বর্তমানে কর্মরত আছেন ৩ জন।
মেনাপুর পীর বাদশা মিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা ১০৪ জন। শিক্ষক পদ ৫টি, নিয়োগ আছে ৪ জন। ডিপিএডে আছেন ১ জন, বর্তমানে কর্মরত আছেন ৩ জন।
জনৈক অভিভাবক বলেন, আমাদের সন্তানদের নিয়ে চিন্তায় আছি। যেখানে একটি বিদ্যালয়ে ২০০/২৫০ ছাত্র-ছাত্রী, সেখানে বিদ্যালয়গুলোতে ৩/৪ জন শিক্ষক দিয়ে কীভাবে ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান চলে? উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বেখেয়ালি ও গাফিলতিতে শিক্ষক সঙ্কট সমাধান হয়নি বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাই শিক্ষার সঠিক মানোন্নয়নে শূন্য পদগুলোতে শিক্ষক পদ পূরণ করবেন বলে আশাবাদী ভুক্তভোগী মহল।