প্রকাশ : ০৮ জুলাই ২০২৫, ০১:৪২
বালিথুবায় কোটি টাকার ব্রিজের অ্যাপ্রোচ সড়ক না করেই বিল নিয়ে উধাও ঠিকাদার!
ফরিদগঞ্জে নির্মিত ব্রিজের দুই পাশের সংযোগ সড়ক ছাড়া চলাচলে চরম দুর্ভোগ; প্রশাসনের নিরবতা প্রশ্নবিদ্ধ

ফরিদগঞ্জে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে একটি ব্রিজ। নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পর বছর পেরিয়ে গেলেও দুই পাড়ের অ্যাপ্রোচ তথা সংযোগ সড়কের বালু ভরাট না করায় এবং সংযোগ সড়ক না হওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে সেতু পার হচ্ছেন অত্র অঞ্চলের হাজারো মানুষ।
|আরো খবর
২নং বালিথুবা ইউনিয়নের কৃতী সন্তান, চাঁদপুর সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মরহুম এডব্লিউএম তোয়াহা মিয়া সাহেবের বাড়ির সামনে নির্মিত হয়েছে এই ব্রিজটি। যা চাঁদপুর-চান্দ্রা-মুন্সিরহাট-রামগঞ্জ আঞ্চলিক সড়ক (ওয়াপদা রাস্তা) হতে বালিথুবা বাজার অভিমুখী একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু।
ব্রিজটির কাজ ২০২১-২২ অর্থ বছরে শুরু হলেও মূল সেতুর কাজ শেষ হয় এক বছর আগে। ঠিকাদারকে কাজের বিলও দিয়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু দীর্ঘ সময় পার হলেও সেতুর দুই পাশের অ্যাপ্রোচ (সংযোগ) সড়কের কাজ শেষ করা হয়নি। এতে করে এলাকার হাজারো মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে মো. মহসিন চৌধুরী, হাফেজ খাজে আহমদ, মাহাবুব আলম চৌধুরী, মোস্তফা, শাহ আলমসহ অনেকে জানান, ছোট্ট এই ব্রিজটি করতে প্রায় এক কোটি টাকা খরচ নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু আমরা যা দেখলাম, টাকার সাথে কাজের কোনো মিলই নেই।
তাদের ভাষ্য, ঠিকাদার একেবারেই নিম্নমানের কাজ করে মূল ব্রিজের কাজ শেষ করেছেন এবং দু পাড়ের কাজ শেষ না করেই চলে গেছেন। তারা আরও বলেন, ঠিকাদার কাজ ফেলে রেখে যেনো এলাকার মানুষকে জনদুর্ভোগে ফেলেছেন। কিন্তু এ ব্যাপারে ফরিদগঞ্জ পিআইও অফিস চরম উদাসীন। তবে ঠিকাদারের বিল পরিশোধে বিলম্ব করেনি।
ব্রিজটির একপাশে সরখাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, অন্যপাশে বালিথুবা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বালিথুবা আব্দুল হামিদ উচ্চ বিদ্যালয়। প্রতিদিনই এই বিদ্যালয়গুলোর ছোট ছোট শিশুরা এবং পথচারীরা ঝুঁকি নিয়ে সেতু দিয়ে উঠানামা করছে।
স্থানীয়রা জানান, যে কোনো সময় বড়ো ধরনের অঘটন ঘটে যেতে পারে। এ নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে চরম উৎকণ্ঠা ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এছাড়া বয়স্ক নারী-পুরুষ, রোগীসহ শত শত পথচারীকে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে কাজের দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা ফরিদগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) কার্যালয়ে কথা বলতে গেলে পিআইওকে পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী অজয় ভৌমিককে পাওয়া গেছে।
তার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নতুন এসেছেন, তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। আর এই ব্রিজের কাজ শেষ হওয়ার কারণে সাবেক প্রকল্প কর্মকর্তা থাকাকালীন সময়েই টাকা উত্তোলন হয়ে গেছে।
কিন্তু অজয় ভৌমিক ব্রিজের পরিপূর্ণ তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন এবং কোন্ ঠিকাদার, কোন্ লাইসেন্সে এ কাজ করেছেন তার মোবাইল নম্বর চাইলে তা দিতেও অপারগতা প্রকাশ করেন।
ডিসিকে/এমজেডএইচ