প্রকাশ : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৯:২০
বাংলাদেশ-ভারত টানাহেঁচড়ায় দাম বেশি
চাঁদপুর মৎস্য বন্দর ইলিশে সয়লাব
চাঁদপুর বড় স্টেশন মৎস্য আড়তে ইলিশের আমদানি ব্যাপক বাড়লেও ভারত রপ্তানিতে দাম কমেনি। বড় সাইজের ইলিশের কেজি এখনো হাজার টাকার উপরে বিক্রি হচ্ছে। মা ইলিশ প্রজননের ২২ দিনের অভিযানকে সামনে রেখে আগামি ৮/৯ দিনই ইলিশ আরো বেশি পরিমাণ ধরা পড়বে।
|আরো খবর
ইলিশ বন্দর হিসেবে খ্যাত চাঁদপুর বড় স্টেশন মাছঘাটে শনিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইলিশে সয়লাব মৎস আড়তগুলো।অধিকাংশই পরিপক্ক ইলিশ, পেটে ভরপুর ডিম। এদিন দক্ষিণ অঞ্চলে ভোলা থেকে সাগর উপকূলীয় অঞ্চল হাতিয়া ও ভোলা থেকে নদীপথে এবং সড়কপথে প্রচুর ইলিশের আমদানি হয়েছে। যার পরিমাণ হবে আনুমানিক তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার মণ।
এক কেজির উপরে প্রতি মণ ইলিশ পাইকারি বিক্রি হয়েছে ৩২ হাজার থেকে ৩৮/৪০ হাজার টাকা দরে। মাঝারি আকারের ইলিশের দর গেছে ২২ থেকে ২৪ হাজার টাকা মণ দরে।
ভারতে ইলিশ রপ্তানি শুরু হওয়ায় তাতেই চাঁদপুরের বাজারে ইলিশের দাম বেড়ে গেছে। বিক্রেতারা বলছেন সামনের মাসে ইলিশ ধরা বন্ধ হবে। ফলে দাম বাড়ায় দ্বিগুণ প্রভাব পড়ছে। ইলিশ চলে যাচ্ছে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে । অথচ এই সময় সাধারণ মানুষ ৪/৫ শ' টাকা কেজিতে ইলিশ খেতে পারত। সামর্থ্যবানরা ছাড়া স্বল্প আয়ের মানুষের ভাগ্যে ভরা মৌসুমে ইলিশ কিনে খাওয়ার সৌভাগ্য হচ্ছে না,দাম বেশি।
হঠাৎ করে ইলিশের দাম বেশি পাওয়ায় জেলে, ট্রলারমালিক, আড়তদারসহ মৎস্যজীবীরা খুশি থাকলেও সাধারণ ক্রেতাদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। ইতিমধ্যে ইলিশের প্রথম চালান বাংলাদেশ থেকে ইন্ডিয়াতে গেছে বলে জানা যায়। চাঁদপুর থেকেও বাছাইকৃত ইলিশের চালান গেছে সেখানে। আগামী ১০ অক্টোবর পর্যন্ত এই ইলিশ রপ্তানি চলবে। পূজা উপলক্ষে মোট দুই হাজার ৮০ মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে রপ্তানি হবে।
এদিকে,চাঁদপুরের জেলেরা জানান, এবার ইলিশ মওসুম তাদের জন্য পুরোটাই ফাঁকা যাচ্ছে। গুল্টি জেলেরা কিছু মাছ পেলেও লাভবান হবার মতো নয়। বাইশ দিনের অভিযানে সমূদ্র থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পদ্মা মেঘনায় যখন ছুটে আসবে, তখন স্থানিয় নদ-নদীতে ভরপুর দেখা মিলবে ইলিশের। পূর্ণিমার কারণে দক্ষিণ উপকূলে গত দুই সপ্তাহ যাবত ইলিশের প্রাচুর্য বাড়লেও পাইকারি ও খুচরা বাজারে দামে প্রভাব পড়েনি। উপরন্তু কোনো কোনো মোকামের পাইকারি বাজারে মণ প্রতি দাম ১০/১২ হাজার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এতে জেলে-ব্যবসায়ীরা খুশি হলেও সাধারণ ক্রেতারা হতাশ।
চাঁদপুর মৎস্য আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজী শবেবরাত সরকার বলেন, ‘আমাদের এখানে গতকাল দুই থেকে আড়াই হাজার মণ ইলিশের আমদানি হয়েছে। পাইকারি বাজারে ইলিশ বেড়েছে, তবে দাম আগের মতোই আছে।’ তিনি আরো বলেন,অল্প সময়ে অনেক মাছ যাবে ভারতে। বড় মাছটার দাম বেশি। এ জন্য এর প্রভাব পড়েছে। ঘাটের ব্যবসায়িরা মোটামুটি লাভবান হচ্ছে।
ইলিশ চালানী আঃ খালেক বেপারী জানান, ইলিশ নিয়ে বাংলাদেশের ভেতরে এবং ভারতের টানাহেঁচড়ায় দাম বেশি। ঘাটে প্রচুর ইলিশ তবে ভারতে যদি ইলিশ না যেত, তাহলে মাছের দাম কম পাওয়া যেত।
চাঁদপুর সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সুদীপ ভট্টাচার্য জানান, পূর্ণিমার পর থেকে সাগর ও নদনদীতে ইলিশ ধরা পরছে বেশি। ২২ দিনের মা ইলিশ রক্ষা অভিযানের আগে আগামী দশ দিন আরও বেশি পরিমাণ মাছ ধরা পড়বে। তিনি বলেন, বাজার এখন ইলিশে সয়লাব। এ বছর মা ইলিশ রক্ষা অভিযানে নিরাপদে প্রজনন করতে পারলে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।