সোমবার, ১০ মার্চ, ২০২৫  |   ২৩ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ০৯ মার্চ ২০২৫, ১৬:৪৩

চাহিদার তুলনায় টিসিবি পণ্যের বরাদ্দ কম, বেশিরভাগ মানুষকে ফিরতে হয় খালি হাতে

মো. মঈনুল ইসলাম কাজল
চাহিদার তুলনায় টিসিবি পণ্যের বরাদ্দ কম, বেশিরভাগ মানুষকে ফিরতে হয় খালি হাতে

চাল, ডাল, তেল, চিনি, আটা ও রসুনসহ সব ধরনের নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম চড়া। দ্রব্যমূল্যের এমন ঊর্ধ্বগতির কারণে নিম্ন আয়ের মানুষের নাভিশ্বাস অবস্থা। এ পরিস্থিতিতে কিছুটা সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য কিনতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ-টিসিবির ট্রাকসেলের লাইনে দাঁড়ান অনেক মানুষ। ভোর থেকেই চাঁদপুর শহরের বিভিন্ন মোড়ে ট্রাকসেলে সাশ্রয়ী দামে পণ্যের আশায় নিম্ন আয়ের মানুষের ভিড় শুরু হয়। টিসিবির এসব ট্রাকসেল থেকে ফ্যামিলি স্মার্ট কার্ড ছাড়াও ৪০০ মানুষকে পণ্য দেওয়া হয়। তবে সেখানে বাস্তবতা ভিন্ন পরিলক্ষিত হয়। মানুষের উপস্থিতি এতো বেশি থাকে যে, হুড়োহুড়ি, ঠেলাঠেলি, ধাক্কাধাক্কি ও মারামারির ঘটনাও ঘটে। এর মধ্য থেকে যারা পণ্য পান তাদের মুখে হাসি ফোটে, কিন্তু ট্রাকের সামনে লম্বা লাইনে যে পরিমাণ মানুষ থাকে তাদের বেশিরভাগই ফেরেন খালি হাতে। বিশেষ করে বয়স্ক ও শারীরিকভাবে দুর্বল মানুষেরা পণ্য পাওয়ার তালিকায় থাকেন না।

সূত্র মতে, টিসিবি থেকে একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ দুই লিটার সয়াবিন তেল, দুই কেজি করে মসুর ডাল ও ছোলা, এক কেজি চিনি এবং ৫০০ গ্রাম খেজুর কিনতে পারছেন। প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম রাখা হয় ১০০ টাকা। প্রতি কেজি চিনি ৭০ টাকা, প্রতি কেজি মসুর ডাল ও ছোলা ৬০ টাকা করে এবং খেজুর ১৫৬ টাকা। যেখানে বাজারে প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ২০০ টাকা, প্রতি কেজি চিনি ১২৫ টাকা, মসুর ডাল ও ছোলা ১২০ টাকা এবং খেজুর ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। অর্থাৎ টিসিবির একটি প্যাকেজ পেলে সাধারণ মানুষের অর্ধেকের বেশি সাশ্রয় হয়। মূলত এই সাশ্রয়ের জন্যেই তীব্র ভিড় সত্ত্বেও মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকেন।

জানা যায়, টিসিবির পণ্যের প্রতি নিম্ন আয়ের মানুষের আগ্রহ আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। তবে চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ একেবারেই কম।

চাঁদপুর শহর এলাকার পাঁচটি স্থানে টিসিবির ডিলারের মাধ্যমে ট্রাকসেল করা হচ্ছে।পুরো রমজান মাস জুড়ে প্রতিটি স্পটে ৪০০ জন করে ক্রেতা সাধারণ কিনতে পারবেন টিসিবির এই পণ্য।

বিভিন্ন এলাকায় টিসিবির গাড়ি এসে দাঁড়ানোর আগেই প্রায় প্রতিটি ট্রাকের পেছনে ৩০০ থেকে ৪০০ মানুষের লম্বা সারি হয়। জনবহুল আবাসিক এলাকায় মানুষের সংখ্যা আরও বেশি থাকে। এর মধ্যে ৪০০ মানুষকে এনআইডি কার্ডের ফটোকপি নিয়ে পণ্য দেওয়া হয়। যদিও বিক্রি কার্যক্রম চলা এই দু-তিন ঘণ্টায় আরও কয়েকশ' মানুষ পণ্য নিতে এসে আশাহত হয়ে ফিরে যান। সব মিলিয়ে বরাদ্দের চেয়ে পণ্য নিতে মানুষের সংখ্যা এলাকাভেদে দ্বিগুণ থেকে চারগুণ হয়। পুরান বাজার ডিগ্রি কলেজ সড়ক ও চেয়ারম্যান ঘাট ডিসি অফিসের কাছে একাধিক স্থান ও একাধিকবার বিক্রি কার্যক্রম পরিদর্শনে দেখা যায়, টিসিবির ট্রাকের পেছনে দীর্ঘসময় লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও পণ্য পাননি কেউ কেউ। আবার অনেকে আগে এলেও ট্রাক আসার সঙ্গে সঙ্গে হুড়োহুড়ি-ঠেলাঠেলিতে টিকতে পারেন না। অনেকে লাইনে থাকেও বিশৃঙ্খলার কারণে পণ্য না পেয়ে খালি হাতে ফিরে যান ।

টিসিবি সূত্রে জানা গেছে, রমজানজুড়ে ঢাকা ও দেশের বিভাগীয় শহরসহ বিভিন্ন স্থানে এভাবে ট্রাকের মাধ্যমে ১২ লাখ পরিবারের মধ্যে পণ্য বিক্রি করা হবে। এছাড়া টিসিবির নিয়মিত উপকারভোগী ৫৭ লাখ স্মার্ট কার্ডধারী পরিবার ভর্তুকি মূল্যে পণ্য পাবে। স্মার্ট কার্ডে পণ্য বিক্রিতে কিছুটা শৃঙ্খলা থাকলেও ট্রাকসেলে যে কেউ পণ্য নিতে পারেন বলে বিশৃঙ্খলা বেশি। টিসিবির নিবন্ধিত ডিলার বা সরবরাহকারীরা ট্রাকে প্রতিদিন চাঁদপুর শহরের ৫টি স্থানে পণ্য বিক্রি করেন। দেখা গেছে, টিসিবির এসব ট্রাকের পেছনে নারী ও পুরুষরা সাধারণত দুটি সারিতে দাঁড়ান। যিনি আগে আসবেন তিনি লাইনের সামনে থাকবেন-- নিজেদের মধ্যে এমন সমঝোতায় সবাই ট্রাকের জন্যে অপেক্ষা করেন আগে থেকেই। কিন্তু ট্রাক এসে দাঁড়ানোর পরে এ শৃঙ্খলা থাকে না। কারণ ট্রাক আসার সঙ্গে সঙ্গেই দৌড়ে আসেন শতাধিক মানুষ। এরপর আগে ও পরে আসা ব্যক্তিদের মধ্যে শুরু হয় হুড়োহুড়ি-ঠেলাঠেলি। এ সময় ডিলারের কর্মচারীরা উপস্থিত মানুষের মধ্যে টোকেন বিতরণ করেন। অনেক ক্রেতা আগে পণ্য নেওয়ার জন্যে লাইন ভেঙ্গে সামনে চলে যান টোকেন নিতে। তাতেই শুরু হয় হট্টগোল। এসব হুড়োহুড়িতে সবচেয়ে বেশি পিছিয়ে পড়েন বয়স্ক ও শারীরিকভাবে দুর্বল মানুষেরা।

চাহিদা প্রসঙ্গে ডিলাররা বলছেন, বাজারে তেল পাওয়া যায় না, অন্য সব জিনিসের দামও চড়া। তাই এতো ভিড়।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়