প্রকাশ : ২৩ আগস্ট ২০২৩, ০২:১২
চাঁদপুর রাইস মিল ও চাল ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সাথে পাট অধিদপ্তরের মতবিনিময়
সরকারের গৃহীত আইন কার্যকরে চাঁদপুর চেম্বার সকল সময় তৎপর
----- আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর আখন্দ সেলিম
চাঁদপুর রাইস মিলস মালিক ও চাল ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দের সাথে পাট অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মতবিনিময় সভা অনুষ্টিত হয়েছে। ২২ আগস্ট সোমবার সকাল ১১ টায় পুরানবাজারে চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির কার্যালয়ে আয়োজিত সভায় সভাপতির বক্তব্য রাখেন চেম্বার প্রেসিডেন্ট আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর আখন্দ সেলিম।
|আরো খবর
এসময় তিনি বলেন, চাঁদপুর আমদানী নির্ভর মোকাম। এখানে অধিকাংশ পণ্য সামগ্রীই আমাদেরকে আমদানী করতে হয়। এ সকল আমদানিকৃত মালামালের অধিকাংশ পণ্যই প্লাস্টিক বস্তায় আমদানী হয়ে থাকে। তাই ব্যবসায়ীগন ইচ্ছে থাকলেই তা পরিবর্তন করে পাটজাত বস্তায় সরবরাহ করতে পারে না। এর মূল কারন সময় ও পণ্যের ব্যায়ভার।
তাই পাটজাত বস্তা ব্যাবহারে সরকারের সিদ্ধান্ত থাকা সত্বেও আমাদের ব্যবসায়িরা প্লাস্টিক বস্তায় তা রপ্তানি করতে হয়। তার মানে এই নয় যে আমরা তা ইচ্ছে করেই করছি। চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি সকল সময়ই সরকারের গৃহীত আইন কার্যকর করতে বদ্ধপরিকর । সরকার জনকল্যানেই আইন প্রনয়ন করেন বলে আমরা মনে প্রানে তা বিশ্বাস করি। তিনি আইনের বাস্তবায়ন করতে গিয়ে যাতে ব্যবসায়ীদের সাথে আইনপ্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের সাথে কোনরুপ সাংঘর্ষিক ঘটনা না ঘটে, সেদিকে সকলকে নজর রাখার অনুরোধ জানান।
বক্তব্য রাখেন পাট অধিদপ্তর চাঁদপুরের মুর্খ্য পরিদর্শক মোঃ মহিউদ্দিন আহমেদ ভূইয়া, জেলা পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঃ আকরাম হোসেন, জেলা পাট উন্নয়ন সহকারী মোঃ মাঈন উদ্দিন ভূইয়া।
অনুষ্ঠান শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সহ-সভাপতি তমাল কুমার ঘোষ।
চেম্বার পরিচালক গোপাল সাহার সঞ্চালনায় নেতৃবৃন্দের মাঝে বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর রাইস মিলস মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রহিম সরকার, সাধারন সম্পাদক ও চেম্বার পরিচালক মাঈনুল ইসলাম কিশোর, জেলা চাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি চেম্বার পরিচালক পরেশ চন্দ্র মালাকার, সাধারন সম্পাদক আলহাজ্ব নাজমুল আলম পাটোয়ারী, তফাদার রাইস মিলসের স্বত্বাধিকারী মোঃ বেলায়েত হোসেন তফাদার, মন্জিল রাইস মিলের পরিচালক নকিবুল ইসলাম চৌধুরী, বাবা রাইস মিলের পরিচালক ফয়সাল আহমেদ চৌধুরী, খাজা বাবা রাইস মিলের স্বত্বাধিকারী আলহাজ্ব মোঃ জিন্নাহ পাটওয়ারী, চাঁদপুর অটো রাইস মিলস্ এর স্বত্বাধিকারী মোঃ ইব্রাহিম খালিল, মেঘনা রাইস মিলের পরিচালক বিপ্লব কুমার গোপ, রওশন রাইস মিলের মালিক হারুন পাটোয়ারী, চাল ব্যবসায়ী সমিতির নেতা হাজী আব্দুর রব মল্লিক সানু, হাজী আবুল বাসার কাশেম প্রমুখ। এসময় মৌসুমী রাইস মিলের মালিক পক্ষের গোবিন্দ চন্দ্র সাহা, রুপালী রাইস মিলের ম্যানেজার প্রনব কুমার নন্দী, চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্সের সচিব আব্দুল মোতালেব শেখ টুটুলসহ চাল ব্যবসায়ী ও রাইস মিলের অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায় দিনাজপুর, নওগাঁ, ঠাকুর গাঁও, রংপুর, বগুড়াসহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন মোকাম থেকে প্লাস্টিক বস্তার মাধ্যমে চাল আমদানী হয়ে থাকে। ঐসকল মোকামে যদি প্লাস্টিক বস্তার ব্যাবহার না করা হয় তাহলে চাঁদপুরে প্লাস্টিক বস্তার ব্যাবহার এমনিতেই কমে যাবে। তদুপরি এখনো পাটের বস্তার আমদানী স্বাভাবিক না হওয়া এবং প্লাস্টিক বস্তার চেয়ে পাটের বস্তার দাম বেশী হওয়ায় বিভিন্ন মোকাম থেকে প্লাস্টিক বস্তায় মাল রপ্তানিতে ব্যবসায়ীগন অধিক আগ্রহী হয়ে পড়েন। দেখা যায় পাটের বস্তায় চাল রপ্তানী বা আমদানী করা হলে প্রতি কেজি চালের দাম প্রায় ১ থেকে দেড় টাকার মত বেশী পড়ে। ফলে বেশী দামে বিক্রি করতে গিয়ে ব্যবসায়ীদের হয়রানীর শিকার হতে হয়। প্রতিযোগিতার মোকামে কেউ বেশী দামে পর্ন ক্রয় করতে আগ্রহী নয়। যদি সকল মোকামেই পাটজাত বস্তা ব্যাবহার বার্ধতামূলক করা হয় তাহলেই পাটের বস্তা ব্যাহারে সকলে আগ্রহী হয়ে উঠবেন। তা না করে যদি শুধু চাঁদপুর মোকামকেই পাটের বস্তা ব্যাবহারে বাধ্য করা হয় তাহলে ব্যবসায়ীরা জেল- জরিমানার ভয়ে আমদানী বন্ধ করে দিতে পারে বলেও মতবিনিময় সভায় ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের কেউ কেউ অভিমত ব্যাক্ত করেন।
উল্লেখ্য পরিবেশ দুষন রোধ ও পাটের হারানো গৌরব পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে সরকার পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন ২০১০ প্রনয়ন করেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় ধান, চাল, গম, ভূট্রা, সার, চিনি, মরিচ, হলুদ, পেঁয়াজ, আদা, রসুন, ডাল, ধনিয়া, আলু, আটা, ময়দা, পোল্ট্রি ফিড, ফিস ফিড, ও তুষ- খুদ, কুঁড়া মোড়কীকরণে পাটের বস্তার ব্যবহার বাধ্যতা মূলক করা হলেও অনেক ক্ষেত্রেই তা মানা হচ্ছে না। ব্যবসায়ীরা অনেকেই অভিযোগ করে বলেন আঠা, ময়দা, চিনিসহ নামী দামী কোম্পানীর অধিকাংশ পর্ণই প্রকাশ্যে দিবালোকে উৎপাদনশীল মিল থেকে দেশের সর্বত্র ডেলিভারি হচ্ছে। কিন্তু সেখানে তেমন বাধ্য বাধকতা সৃষ্টি করা না হলেও আমরা যারা ঘর - গদীতে বসে কেনা বেচাঁ করছি তা বন্ধে আমাদের উপরই চাপ সৃস্টি করা হচ্ছে, করা হচ্ছে জরিমানা। তারা মনে করেন উৎপাদনশীল স্থানেই যদি পাটের বস্তার ব্যাবহার (মোড়কজাত) বার্ধতামুলক করা হতো, তাহলে আমদানী নির্ভর মোকামে আইন যথাযথ বাস্তবায়ন দেখা যেত।