প্রকাশ : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২২:১৪
প্রশাসনের সাথে চেম্বার নেতৃবৃন্দ ও ব্যবসায়ীদের মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক
পণ্যমূল্য যৌক্তিক পর্যায়ে রেখে আপনারা ব্যবসা করবেন
চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির আয়োজনে পণ্যমূল্য যৌক্তিক পর্যায়ে রাখার লক্ষ্যে জেলা প্রশাসনের সাথে ব্যবসায়ীদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৩ সেপ্টেম্বর শনিবার বেলা ১২টায় পুরাণবাজারস্থ চাঁদপুর চেম্বার ভবন মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
|আরো খবর
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান। চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্সের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর আখন্দ সেলিমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদবিপিএম-বার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক মোঃ ইমতিয়াজ হোসেন, এনএসআই উপ-পরিচালক শাহ আরমান আহমেদ।
জেলা প্রশাসক তাঁর বক্তব্যে বলেন, সরকার ব্যাবসায়ীদের বৈধভাবে ব্যবসা করার সকল পরিবেশ তৈরি করে দিয়েছে। পণ্যমূল্য যৌক্তিক পর্যায়ে রেখে আপনারা ব্যবসা করবেন। এতে সরকারের সকল বিভাগ থেকে আপনাদের সহযোগিতা করা হবে। সরকার বাজার পরিস্তিতি দেখবাল করার জন্য ধাপে ধাপে মনিটরিং সিস্টেমকে আরো শক্তিশালী করছে। ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর গঠন করা হয়েছে, বেশিদিন হয়নি। এই দপ্তরগুলো ধীরে ধীরে বিস্তৃত হবে। তখন আর ম্যাজিস্ট্রেটদের মোবাইল কোর্ট করতে হবে না। তখন আরো বেশি করে তদারকি করা হবে।
জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান বলেন, প্রশাসন ব্যবসায়ীদের কেবল জরিমানা করতে আমরা চায় না। বরং সুন্দরভাবে ব্যবসা পরিচালনায় সহযোগিতা করতে চায়। এজন্য আমরা প্রথমে সচেতনতা গড়ে তুলি। সরকারের নির্দেশনা মানতে মাইকিং করে বার বার বলা হয়। কারন। আপনারা জরিমানার শিকার হন আমরা তা চাই না। আপনারা সচেতন হলেই অনেক কিছুর সহজ হয়ে যাবে। সচেতনতাগুলো আমাদের মধ্য থাকতে হবে। আমরা ইঁদুর-বিড়াল খেলা চাই না। আমরা কেউ জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে নই।
জেলা প্রশাসক আরো বলেন, শুধুমাত্র চাঁদপুর নয়, আমাদের দেশের পুরো ব্যবসাই মূলত আমদানী নির্ভর। আদা, পেঁয়াজ, আলুসহ কিছু পন্য বেশি উৎপাদন হয়। বাকি প্রায় সব পণ্যই আমাদের আমদানি করতে হয়। আপনারা সারা বছর অল্প ব্যবসা করবেন, কিন্তু ঈদ-পূজায় কয়েকগুণ বেশি ব্যবসা করবেন সেটি ঠিক নয়। কেজি প্রতি ৩-৪ টাকা বেশি নিলে সে অংকটা বস্তা প্রতি কত দাঁড়ায়।
তিনি বলেন, আমরা বলছি চাঁদপুরের নদীতে মাছ নেই। অথচ ভোলা বরিশালের ইলিশ চাঁদপুরে এসে চাঁদপুরের ইলিশ হয়ে বের হয়। এখানে সবাই চালাক। কিন্তু আমাদের বুঝতে হবে, সবকিছুই প্রতিশোধ নেয়। প্রকৃতি প্রতিশোধ নেয়া শুরু করেছে। যার ফলে আমরা অনেক কিছু হারাতে বসেছি। নদীর নাব্যতা কমে আসছে। বুড়িগঙ্গা নদীতে ১৩ ফুট পলিথিনের স্তর জমেছে। এই প্রতিশোধ প্রকৃতিও নিবে। তাই আসুন, আপনাদের একটি হাত আর আমাদের একটি হাত মিলে সুন্দরের তালি বাজাই।
অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বক্তব্য রাখেন চেম্বারের সিনিঃ সহ-সভাপতি সুভাষ চন্দ্র রায়। চেম্বারেরসহ সভাপতি তমাল কুমার ঘোষের পরিচালনায় ব্যবসায়ীদের মধ্য বক্তব্য রাখেন চেম্বার পরিচালক আমিনুর রহমান বাবুল, আটা ময়দা চিনি ভোজ্য তেল ব্যবসায়ীদের পক্ষে চেম্বার পরিচালক গোপাল চন্দ্র সাহা, ধান চাউল ব্যবসায়ীদের পক্ষে চেম্বার পরিচালক পরেশ মালাকার, রাইস মিল মালিকদের পক্ষে ফয়সাল আহমেদ চৌধুরী, চাঁদপুর চাউল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব নাজমুল আলম পাটওয়ারী, আলু,পেঁয়াজ আদা রসুন ব্যবসায়ীদের পক্ষে ব্যবসায়ী মোঃ দুলাল গাজী প্রমুখ।
এ সময় চাঁদপুর চেম্বারের পরিচালক মাইনুল ইসলাম কিশোর, মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, হযরত আলী,রেজওয়ানুর রহমান রিজু, শিহাদ শাহরিয়ার আখন্দসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন ।
সভায় ব্যবসায়ীরা তাদের বক্তব্যে বলেন, আমরা সরকারি সকল নিয়ম-কানুন মেনে সুন্দরভাবে ব্যবসা করতে চাই। আমরা পুরানবাজারের ব্যবসায়ীরা বেশিরভাগ পণ্য আমদানি করে বিক্রি করি। আমদানির উপর নির্ভর করেই পণ্যমূল্য যুক্তিক পর্যায়ে রেখে বিক্রি করতে হয়। কিন্তু কখনো কখনো প্রশাসন মোবাইল কোর্ট করে আমাদের অতিরিক্ত জরিমানা করে। এতে অনেক ব্যবসায়ীরা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ব্যাবসায়ীরা আরো বলেন, তাছাড়া কিছুদিন পর পর প্লাস্টিকের বস্তার বিষয়ে অভিযান করা হয়। অথচ আমরা প্লাস্টিকের বস্তাসহই চাল আমদানি করছি। সরকার সেখানে কঠোর হলে আমরা বিড়ম্বনার শিকার হতাম না। আমরা চাই সবসময় সুন্দরভাবে ব্যবসা করতে। এ জন্য আমরা প্রশাসনের কাছে সকল প্রকার সহযোগিতা কামনা করছি।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ব্যবসায়ী হাজী মোতালেব পাটওয়ারী পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত এবং কালাচাঁন বণিক গীতা পাঠ করেন।
এরপর পরিচিত পর্ব এবং অতিথিদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।