রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২০ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ১৯ জুন ২০২২, ০০:০০

শেখ হাসিনা না থাকলে পদ্মা সেতু হতো না : ড. আবুল বারকাত

নিজ অর্থে পদ্মা সেতু : একটি স্বপ্নের বাস্তবায়ন ॥ প্রধানমন্ত্রীকে অর্থনীতি সমিতির অভিনন্দন

শেখ হাসিনা না থাকলে পদ্মা সেতু হতো না : ড. আবুল বারকাত
প্রেস বিজ্ঞপ্তি ॥

বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি (বিআইএ) আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতুর ঐতিহাসিক উদ্বোধনের প্রাক্কালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গভীর কতৃজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানিয়েছে। সমিতি একই সঙ্গে প্রয়াত জাতীয় অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরীসহ এই সেতু নির্মাণে নিয়োজিত শ্রমিক-কর্মচারী-কর্মকর্তা, পদ্মা সেতু তহবিলে টিফিনের অর্থ দেয়া শিশু, সাধারণ মানুষ এবং ২০১২ সালে বাংলাদেশে প্রথম অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ও প্রায়োগিক যুক্তসমেত বিস্তারিত ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণপূর্ণক নিজস্ব অর্থে পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্ভব বলে গবেষণা তথ্য উপস্থাপনকারী অধ্যাপক ড. আবুল বারকাতকেও অভিনন্দন জানিয়েছে। গতকাল ১৮ জুন শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত প্রেস কনফারেন্সে উপস্থাপিত ‘নিজ অর্থে পদ্মা সেতু : একটি স্বপ্নের বাস্তবায়ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন’ শীর্ষক এক নিবন্ধে সমিতি এই অভিনন্দন জানায়। অভিনন্দন নিবন্ধ উপস্থাপন করেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোঃ আইনুল ইসলাম। এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত।

নিবন্ধে বলা হয়, ‘নিজস্ব অর্থে পদ্মা সেতু’ নির্মাণকে বাস্তবে রূপ দেয়ার অনন্য অর্জনের জন্য সেতু উদ্বোধনের এই মাহেন্দ্রক্ষণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাহস ও প্রজ্ঞায় লালিত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি গভীর কতৃজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানাচ্ছে- বাংলাদেশকে আরও একবার বিজয়ের আনন্দ এনে দেয়ায়। মানুষ যে তার স্বপ্নের বাস্তবায়ন করতে পারে সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে পৃথিবীর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ খরস্রোতা পদ্মা নদীর উপর ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে, সেটি বাংলাদেশ হাতেকলমে আবারও প্রমাণ করে দিয়েছে-যেমনটি বাংলাদেশ আরেকবার করেছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের মাধ্যমে। সমিতি মনে করে, জন-আকাক্সক্ষাকে শ্রদ্ধা ও জনসমর্থনকে ভিত্তি করে নেতৃত্বের দৃঢ়তা, স্বকীয়তা ও দূরদর্শিতায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধের মূর্ত প্রতীক হচ্ছে পদ্মা সেতুর দৃশ্যমান বাস্তবতা।

অর্থনীতি সমিতি এ দেশে নিজস্ব অর্থে পদ্মা সেতু নির্মাণ যে সম্ভব-সে কথা বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির প্লাটফর্মে প্রথম ১৯ জুলাই ২০১২-নৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ও প্রায়োগিক যুক্তি দিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণপূর্বক উত্থাপনকারী গণমানুষের অর্থনীতিবিদ খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগ ও জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের প্রাক্তন চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির চারবারের নির্বাচিত সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল বারকাতকেও অভিনন্দন জানিয়েছে।

সমিতি বলছে, ২০১২ সালের ২৯ জুন দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু ঋণচুক্তি বাতিল করে দেয়ায় বাংলাদেশের তীব্র ভাবমূর্তি সংকটকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজস্ব অর্থে পদ্মা সেতু করার ঘোষণা নিয়ে যখন দেশের অধিকাংশ অর্থনীতিবিদ, সমাজবিদ, রাষ্ট্রচিন্তক, রাজনীতিবিদ সন্দেহ-সংশয়-বিদ্রƒপ করছিল, তখন বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির ব্যানারে অধ্যাপক বারকাতের ‘নিজ অর্থে পদ্মা সেতু’ গবেষণা ও বিস্তারিত তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরা জাতিকে যথেষ্ট আশান্বিত করেছিল।

বাংলাদেশের বহু-আকাঙ্ক্ষিত পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির প্রকাশ করা ২৬ পৃষ্টার এক নিবন্ধে পদ্মা সেতু নির্মাণের প্রেক্ষাপট, বিশ্বব্যাংকের ঋণচুক্তি বাতিল এবং দুর্নীতিগ্রস্ত অকার্যকর রাষ্ট্র হিসেবে তুলে ধরা, বাংলাদেশের এক শ্রেণির অর্থনীতিবিদ, সমাজবিদ, রাষ্ট্রচিন্তক, রাজনীতিবিদ ও সুশীল সমাজের নেতিবাচক ভূমিকা, অধ্যাপক ড. আবুল বারকাতের সময়োপযোগী গবেষণা প্রবন্ধ উত্থাপন করা, ২০১২ সালের ১৯ জুলাই অর্থনীতি সমিতির জাতীয় সেমিনার আয়োজন প্রভৃতি বিষয় তুলে ধরে বলা হয়, ২০১২ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করার ইচ্ছা এবং অধ্যাপক বারকাতের উপস্থাপিত তথ্য-উপাত্ত-বক্তব্যকে সর্বজনে পণ্ডিত বলে পরিচিত অধিকাংশ মানুষই পাগলের প্রলাপ, আকাশ-কুসুম কল্পনা আর ঘোরের মধ্যে স্বপ্নের ফানুস ওড়ানো বলে মন্তব্য করেছিলেন। এমনকি বিশ্বব্যাংককে ফিরিয়ে আনতে নিজস্ব অর্থায়নের বিষয়ে হিংস্র বিরোধিতাও করেছিলেন। কিন্তু সব প্রতিকূলতা ছাপিয়ে পদ্মা সেতু বর্তমানে দৃশ্যমান এক বাস্তবতা। এ অবস্থায় নিজস্ব অর্থে পদ্মা সেতুর বিরোধিতাকারীদের মনে রাখা উচিত যে, পদ্মার ওপর প্রথম সেতু হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নির্মাণ প্রস্তাব করা হয় ১৮৮৯ সালে, ১৯০২ সালে সেতুর বিস্তারিত প্রকল্প প্রস্তুত হয়, ১৯০৮ সালে প্রধান প্রকৌশলী নিয়োগ হয়, আর ২৪ হাজার ৪০০ শ্রমিক ৫ বছর স্রেফ ক্রীতদাসের মতো কাজ করে ১৯১৫ সালে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করেন। ৪ কোটি ৭৫ লাখ ৫০ হাজার ভারতীয় রূপিতে নির্মিত ওই সেতুর যাবতীয় পয়সা সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশদের ছিল না, ছিল বাংলার মানুষেরই। ১৮৮৯-২০২২ অর্থাৎ ১২৮ বছর পরও বাংলাদেশকে নিজস্ব অর্থে পদ্মার উপর আরেকটি পদ্মা সেতু করতে গিয়ে যদি হেনস্তা হতে হয়, তা হলে তা জাতি হিসেবে আমাদের জন্য অত্যন্ত লজ্জার বিষয়।

লিখিত নিবন্ধ উপস্থাপনের পর উপস্থিত সাংবাদিক এবং ভার্চুয়ালি অংশ নেয়া দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সুধীজনদের প্রশ্নের উত্তর দেন অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত। এক প্রশ্নের জবাবে ড. আবুল বারকাত বলেন, শেখ হাসিনা না থাকলে পদ্মা সেতু হতো না। এই প্রেস কনফারেন্সে চাঁদপুর থেকে অংশ নেন হাজীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ মাসুদ আহম্মদ, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি এএইচএম আহসান উল্লাহ্ প্রমুখ

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়