মঙ্গলবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৫  |   ২৮ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ২৫ আগস্ট ২০২৫, ১৬:০৫

রায়পুর শহরে সিসিটিভি ক্যামেরা না থাকায়, বাড়ছে অপরাধ

রাস্তার ধারে অটো-সিএনজি রেখে প্রস্রাব করতেও ভয় লাগে’

তাবারক হোসেন আজাদ, রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) থেকে।।
রায়পুর শহরে সিসিটিভি ক্যামেরা না থাকায়, বাড়ছে অপরাধ

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে থানা সংলগ্ন প্রায় এক কিলোমিটার স্থাপন করা সিসিটিভি ক্যামেরার অধিকাংশই এখন গায়েব। এই সিসিটিভি না থাকায় পৌর এলাকায় বাড়ছে চুরি, ছিনতাই সহ নানা অপরাধ। তবে খুব শিগগিরই নতুন করে ক্যামেরা স্থাপনের আশ্বাস দিয়েছেন বণিক সমিতি ও থানা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

গত ২০ দিনে ওষুধ দোকানসহ ১০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দুঃসাহসিক চুরির ঘটনা ঘটলেও এখন পর্যন্ত চোর আটক বা মালামাল উদ্ধার হয়নি।

জানা গেছে, রায়পুর উপজেলার ‘ক’ শ্রেণির পৌরসভাটির আয়তন ৯.৫ বর্গকিলোমিটার এবং জনসংখ্যা প্রায় লক্ষাধিক। থানার সামনে এক কিলোমিটারসহ পৌর এলাকায় অপরাধ রোধে ২০২২ সালে থানা প্রশাসনের উদ্যোগে স্থাপন করাহয় ২০টির মত সিসিটিভি ক্যামেরা। এতে অপরাধপ্রবণতা অনেকটাই কমে আসে।

কিন্তু ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দাবিতে আন্দোলনের সময় বিক্ষুব্ধ জনতা থানা ভবনে অগ্নিসংযোগ ও অস্ত্র লুটপাটসহ শহরের অধিকাংশ সিসিটিভি ক্যামেরা ভেঙ্গে ফেলে বা খুলে নিয়ে যায়। এরপর থেকেই অপরাধ ফের বেড়ে গেছে।

স্থানীয় অটোচালক মাইনুদ্দিন ও সিএনজি অটোরিকশা চালক কামরুল হোসেন বলেন, ‘আগে দিন-রাত সমান মনে করে অটো চালাতাম। ক্যামেরা থাকায় নিরাপদ বোধ করতাম। এখন রাস্তার ধারে অটো রেখে প্রস্রাব করতেও ভয় লাগে।’

একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘এই শহর থেকে একাধিক দোকানে ও মোটরসাইকেল চুরি হয়েছে। ক্যামেরাগুলো সচল থাকলে এসব হয়তো ঘটতো না।’

রায়পুর বণিক সমিতির সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন বলেন, ‘শহরে প্রায় ৮ হাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আগের মতো নির্ভয়ে ব্যবসা করা যাচ্ছে না। গত ২৫ দিনে ১০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দুঃসাহসিক চুরি সংঘটিত হয় এবং প্রায় কোটি টাকার ওষুধসহ মুল্যবান মালামাল চুরি করে সংঘবদ্ধ চোরের দল। বণিক সমিতির উদ্যোগে থানার সামনে সহ পুরো শহরে ক্যামেরা স্থাপন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’ এর সাথে শহরে নৈশ প্রহরী নিয়োগের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

একসময় থানা থেকে পরিচালিত এসব ক্যামেরা বর্তমানে আর সচল নেই। হাতে গোণা কয়েকটি বৈদ্যুতিক খুঁটিতে ক্যামেরা থাকলেও অধিকাংশ জায়গায় কেবল ঝুলন্ত তার ও সেটআপ বক্সই দেখা যাচ্ছে।

রায়পুর পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মো. কামরুল ইসলাম জানান, ‘পৌর প্রশাসকের উদ্যোগে পুরো শহরে ক্যামেরার পয়েন্ট চিহ্নিত করার কাজ শুরু করা হবে। খুব শিগগিরই ক্যামেরাগুলো পুনঃস্থাপন করা হবে।’

রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন ভুইয়া বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সিসিটিভি ক্যামেরা গুরুত্বপূর্ণ। দুঃখজনকভাবে ৫ আগস্টের ঘটনায় অধিকাংশ ক্যামেরা ভাংচুর ও চুরি হয়েছে।

পুনরায় সিসিটিভি স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং দ্রুতই বাস্তবায়নের চেষ্টা চলমান।’

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়