শুক্রবার, ১৬ মে, ২০২৫  |   ২৬ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে নেতাকর্মীদের ঢল

কয়লা ঘাটে সন্ত্রাসী হামলায় আহত রাব্বীর মৃত্যু।। আটক ৩

প্রকাশ : ১৫ মে ২০২৫, ২১:১২

স্টাফ রিপোর্টর

চাঁদপুর শহরের রেলওয়ে বড় স্টেশন কয়লাঘাট এলাকায় সন্ত্রাসীদের হামলায় গুরুতর আহত রাব্বী হোসেন পাটোয়ারী (২৪) মারা গেছেন। ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

বুধবার (১৪ মে ২০২৫) বিকেল চারটার সময় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাব্বী মারা যান। ঢাকার মর্গে নিহতের ময়না তদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার (১৫ মে ২০২৫) দুপুরে তার মরদেহ চাঁদপুর শহরের বকুলতলা এলাকায় আনা হলে এখানে শত শত মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। তার ওপর নির্মম নির্যাতনের আলামত দেখে সবাই ভীষণ শোকার্ত হয়ে পড়ে।বকুলতলা রেলওয়ে এলাকায় জানাজার নামাজ শেষে ওয়্যারলেস বাজার গাজী বাড়িতে নিহত রাব্বীকে দাফন করা হয়।

নিহত রাব্বী চাঁদপুর শহরের রেলওয়ে চৌদ্দ কোয়ার্টারের বাসিন্দা আইয়ুব আলী শিকদারের বড়ো মেয়ের ঘরের নাতি ও মধ্য তরপুরচণ্ডী ওয়্যারলেস বাজার গাজী বাড়ির জনৈক আলী হোসেনের বড়ো ছেলে।

এ ঘটনায় নিহত রাব্বীর মা জেসমিন বেগম বাদী হয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় ১১জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরো ১৫-২০ জনকে আসামী করে এজাহার দায়ের করেন।

এ ঘটনায় এজাহার নামীয় দুজনসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে। অন্য আসামিদের ধরার জন্যে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে চাঁদপুর সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. বাহার মিয়া ও ঘটনার তদন্তকারী এসআই মো. মকবুল হোসেন জানিয়েছেন।

পুলিশ, নিহতের স্বজন ও এলাকা সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (১৪ মে ২০২৫) রাত দশটায় রাব্বীকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে বেদম মারধর করে ফেলে রাখে। ছেলেকে উদ্ধার করতে গিয়ে মা-বাবাসহ একই পরিবারের পাঁচজন সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হয়ে আহত হন।

খবর পেয়ে চাঁদপুর মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থল কয়লাঘাট এলাকার রেলওয়ে পানির ট্যাংকের নিচে জঙ্গল থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায়

আহত রাব্বীকে উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসে। হাসপাতালের কর্মরত চিকিৎসক রাব্বীর অবস্থা গুরুতর দেখে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। একদিন আইসিইউতে থাকার পর অবশেষে বুধবার বিকেলে রাব্বী মারা যান।

রেলওয়ে চৌদ্দ কোয়ার্টার এলাকার করিমের ছেলে বিপ্লব, বিল্লাল ঢালীর ছেলে শাকিল ঢালী, পুরাণবাজারের জাহাঙ্গীরের ছেলে রাব্বী ও তাদের দলবল রাব্বী হোসেন এবং তার বাবা মা, নানা ও মামার উপর হামলা চালায় বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।

হামলাকারীরা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। স্থানীয়ভাবে তাদের রাজনৈতিক গডফাদারও রয়েছে। মাদকের টাকার লেনদেন নিয়ে এই হামলা ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয় সূত্র জানায়।

নিহত রাব্বী হোসেনের মা জেসমিন বেগম জানান, ছেলে রাব্বী স্ত্রী নিয়ে পুরাণবাজারে বাসা ভাড়া করে থাকতো। কয়লাঘাট এলাকার মাদক ব্যবসায়ী রানার সাথে রাব্বীর পূর্বে দ্বন্দ্ব ছিলো। সেই ঘটনার জের ধরে রাব্বীকে পালবাজার ব্রিজের গোড়ায় সিএনজি স্ট্যান্ড থেকে তুলে নিয়ে কয়লাঘাট আটকে বেদম মারধর করে জঙ্গলে ফেলে দেয়। খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করার জন্যে কয়লাঘাট যাওয়ার পর ২০ থেকে ২৫ জন সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালিয়ে আমাদের পরিবারের পাঁচজনকে আহত করে। পুলিশ ঘটনাস্থলে আসার পর তারা পালিয়ে যায়। পরে ছেলেকে জঙ্গলের ভেতর থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। স্বামী সন্তানসহ পাঁচজন ঢাকায় চিকিৎসায় থাকার পর অবশেষে ছেলে রাব্বী প্রাণ হারান।

এ ঘটনার মূল হোতা বিপ্লব, শাকিল, জুম্মান, কাদির, করিম ও রানাসহ ২০-২৫ জন জড়িত ছিলো। তাদেরকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান পরিবারের স্বজনরা।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়