বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪  |   ১৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   সৌদি প্রবাসীদের অনলাইন প্রতারণা থেকে সতর্ক করলো বাংলাদেশ দূতাবাস
  •   বরিশালে কৃষক দলের হামলায় জাতীয় নাগরিক কমিটির কর্মসূচি পণ্ড
  •   শ্রীনগরে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদযাপন
  •   গুমের ভয়াবহ চিত্র: তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে চাঞ্চল্যকর তথ্য
  •   চাঁপাইনবাবগঞ্জে দেয়ালে ‘জয় বাংলা’ লেখা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গ্রেপ্তা

প্রকাশ : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮:৪৯

টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে সংঘর্ষ: নিহত বেড়ে ৩, আহত অর্ধশতাধিক

অনলাইন ডেস্ক
টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে সংঘর্ষ: নিহত বেড়ে ৩, আহত অর্ধশতাধিক

টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে সংঘর্ষ: নিহত বেড়ে ৩, আহত অর্ধশতাধিক

প্রতিবেদক : মোঃ জাহিদুল ইসলাম সুমন খন্দকার, চাঁদপুর কন্ঠ

গাজীপুরের টঙ্গী ইজতেমা মাঠে মাওলানা জুবায়ের ও মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে তিনজনে দাঁড়িয়েছে। আজ বুধবার (তারিখ) সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বিল্লাল হোসেন (৬০)। এ নিয়ে সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত তিনজন নিহত এবং অর্ধশতাধিক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

নিহতদের পরিচয় আজ সকালে মারা যাওয়া বিল্লাল হোসেন ফরিদপুর সদর উপজেলার কুঠিবাড়ি কমলাপুর এলাকার বাসিন্দা। তিনি ঢাকার বাড্ডা বেরাইতে থাকতেন এবং পেশায় তৈরি পোশাক ব্যবসায়ী ছিলেন। তাঁর ছেলে আবদুল্লাহ আল জুবায়ের জানান, তাঁর বাবা কোনো পক্ষের অনুসারী ছিলেন না। সংঘর্ষে আহত হলে তাঁকে ভোরে ঢাকা মেডিকেলে আনা হয়, কিন্তু সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

অন্যদিকে, গাজীপুর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে পাওয়া যায় মো. আমিরুল ইসলাম বাচ্চু (৭০) নামের এক ব্যক্তির মরদেহ। তিনি কিশোরগঞ্জের বাসিন্দা। এছাড়া মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীদের গণমাধ্যম সমন্বয়ক মো. সায়েম জানিয়েছেন, সংঘর্ষে বগুড়ার বাসিন্দা তাইজুল ইসলাম নামের আরেক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।

আহতদের অবস্থা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, সংঘর্ষে আহত হয়ে অন্তত ৩৫ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে সাতজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ভর্তি রাখা হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সংঘর্ষের সময় হাসপাতালে দুই পক্ষের অনুসারীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও আনসার মোতায়েন করা হয়।

সংঘর্ষের কারণ গাজীপুর পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী শুক্রবার থেকে টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে পাঁচ দিনব্যাপী ইজতেমার আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন মাওলানা সাদের অনুসারীরা। তবে মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা তাঁদের মাঠ ব্যবহারে বাধা দেন। এর জেরে কয়েকদিন ধরে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল।

গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে মাওলানা সাদের অনুসারীরা মাঠে প্রবেশের চেষ্টা করলে জুবায়ের অনুসারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে লাঠিসোঁটা ও ইটপাটকেল ব্যবহার করা হয়। কয়েক ঘণ্টার তীব্র সংঘর্ষের পর জুবায়ের অনুসারীরা মাঠ ছেড়ে দিতে বাধ্য হন।

পুলিশের বক্তব্য গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (ডিসি-টঙ্গী বিভাগ) এন এম নাসিরুদ্দিন বলেন, “এ পর্যন্ত সংঘর্ষে তিনজন নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে দুই পক্ষের আরও অনেকেই আহত হয়েছেন, যাঁদের বেশিরভাগই স্থানীয় ও ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছে।”

ইজতেমা মাঠের বর্তমান পরিস্থিতি সংঘর্ষের পর ইজতেমা মাঠে উত্তেজনা বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে মাঠ ও আশপাশের এলাকায় মোতায়েন রয়েছে। ঘটনাস্থল ঘিরে রাখা হয়েছে, যাতে দুই পক্ষের আবার কোনো সংঘর্ষ না হয়।

স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া স্থানীয় বাসিন্দারা এ সংঘর্ষে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা বলেন, তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের কারণে দীর্ঘদিন ধরে ইজতেমা মাঠে অশান্তি বিরাজ করছে। “মুসলমানদের এই একতাভঙ্গের ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক,” বলেন টঙ্গীর স্থানীয় বাসিন্দা আলতাফ হোসেন।

পরবর্তী পদক্ষেপ গাজীপুর প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। তবে সংঘর্ষের ঘটনায় কোনো পক্ষের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে কিনা, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

ইজতেমা মাঠে সংঘর্ষের এই ঘটনা দেশজুড়ে আলোচনার সৃষ্টি করেছে। স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়