প্রকাশ : ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২০:০৯
ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায়
অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
ফরিদগঞ্জে গণমাধ্যমকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টা ও ছুরিকাঘাতের ঘটনায় ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠন নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। তারা দ্রুত অভিযুক্তদের শনাক্তসহ আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন। গত রোববার (২৪ নভেম্বর) দিবাগত রাত দুইটায় এ ঘটনা ঘটেছে ফরিদগঞ্জ পৌর এলাকাধীন পূর্ব বড়ালী গ্রামের দৈনিক আজকের পত্রিকা ও দৈনিক চাঁদপুর দর্পণ পত্রিকার ফরিদগঞ্জ প্রতিনিধি এবং নিউজ২১ বাংলা চ্যানেলের স্টাফ রিপোর্টার গাজী মমিনের বসতঘরে। এই ঘটনার পর মেয়ের চিকিৎসা শেষে মঙ্গলবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে ফরিদগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দেন তিনি।
|আরো খবর
এদিকে ন্যাক্কারজনক ঘটনায় স্তম্ভিত এবং ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ। প্রেসক্লাব সভাপতি মামুনুর রশিদ পাঠান ও সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম ফরহাদ যৌথ বিবৃতিতে এসব কিশোর গ্যাংকে সমূলে উৎপাটনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরো তৎপর হওয়ার আহ্বান জানান। একই সাথে সাংবাদিক গাজী মমিনের কন্যার ওপর হামলার সঠিক তদন্ত ও অভিযুক্তদের দ্রুত চিহ্নিত করে তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
এছাড়া গাজী মমিনের মেয়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পূর্ব বড়ালী শাহজাহান কবির উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, পরিচালনা পর্ষদ ও পূর্ব বড়ালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং পরিচালনা পর্ষদ, পূর্ব বড়ালী যুব উন্নয়ন সংঘসহ স্থানীয় সচেতন মহলের নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করছে।
উল্লেখ্য, গত রোববার গভীর রাতে গাজী মমিনের মাধ্যমিক পড়ুয়া কন্যাকে একটি চক্র ধারালো অস্ত্রের মুখে অপহরণের চেষ্টা করে। এ সময় ব্যর্থ হয়ে তাকে মারাত্মকভাবে আহত করে। ধারালো অস্ত্র দ্বারা তার হাতে, মুখে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করা হয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী জানিয়েছে, রাত আনুমানিক দুটার পর ঘুমন্ত কন্যাকে মাথায় হাত বুলিয়ে জাগিয়ে তোলা হয়। চোখ মেলতেই তার মুখ চেপে ধরে দুর্বৃত্তরা। তারা সংখ্যায় তিনজন যুবক বলে কন্যা জানিয়েছেন। এ সময় তাকে পাকা বসতঘরের বাইরে যাওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। ভুক্তভোগী মেয়েটি রাজি না হলে বেশ কিছু সময় তার সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। এক পর্যায়ে তারা বসতঘরের বাইরে নিয়ে যায়। ওই সময় পাশের বাড়িতে লোকজন ও পুলিশের উপস্থিতি দেখে অপহরণকারীদের দুজন আড়ালে চলে যায়। মুখ চেপে ধরে রাখা অপর একজনের হাতে সজোরে কামড় বসিয়ে দিলে ওই ব্যক্তি তাকে ছাড়তে বাধ্য হয়। ছাড়া পেয়ে তিনি ঘরে গিয়ে মাকে ডেকে তোলেন ও ঘটনা জানান। অপর কক্ষে ঘুমিয়ে থাকা বাবা গাজী মমিনকে ডেকে তুললে তিনি ছুটে গিয়ে বাড়ির অন্যদের ডেকে তুলে বাইরে খোঁজাখুঁজি করেন। কিন্তু কাউকে পাননি।
এরপর তিনি পুলিশকে জানালে এসআই আমজাদ ও খোকন চন্দ্র দাস সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে তার বাড়িতে যান ও ঘটনার বর্ণনা শোনেন। পরে গাজী মমিন তার কন্যাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে চিকিৎসা দেন।
গাজী মমিনের মেয়ে জানান, ওই চক্রটিকে দেখে সে চিৎকার দিতে চাইলে তার মুখ চেপে ধরে রাখা হয়। এই সময় তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে এবং তার মাথার চুল কেটে দেওয়া হয়। সে আরো জানায়, গত ক’দিন যাবত বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে দুজন যুবক তাকে নানা কটু কথা বলেছে। জানতে চাইলে তিনি বলেছেন, বাবা-মাকে লজ্জায় বলিনি। তবে রাতেই একটি কাগজে পথে উত্ত্যক্ত করার ঘটনা লিখে রেখেছি, সকালে মা-বাবার হাতে দেওয়ার জন্যে। কিন্তু তার আগেই আমার ওপর নির্যাতন চালানো হলো।
এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত) শাহআলম বলেন, আমরা প্রাথমিক তদন্ত করেছি ও খোঁজখবর নিচ্ছি। এছাড়া গাজী মমিন লিখিত অভিযোগ করেছেন।