প্রকাশ : ২৮ মার্চ ২০২৩, ২১:৫৩
ইউএনওর কাছে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ
কালিরবাজারে ভিজিডির কার্ড নিয়ে সংঘর্ষ, ইউপি সদস্যসহ আহত ৬
ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদে ভিজিডি কার্ড নিয়ে অনিয়মের ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। এতে ইউপি সদস্যসহ বেশ কজন আহত হয়েছেন। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মঙ্গলবার ২৮ মার্চ সকালে উপজেলার ১৪নং ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদে এই ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম, যুবলীগ নেতা হেলাল উদ্দিন রাসেল ও আজাদ ফরিদগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এই বিষয়ে ফরিদগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
|আরো খবর
জানা গেছে, পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে আসা ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নে ১০৩টি ভিজিডি কার্ড বিতরণে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনিয়মের কথা উল্লেখ করে গত ২৭ মার্চ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর ওই ইউনিয়নের ৯ জন ইউপি সদস্য লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগে বলা হয়, ওই ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন রিপন মাসিক সমন্বয় সভা না করে নিজেই ভিজিডি কার্ডের নাম অন্তর্ভুক্ত করেন। এমনকি তালিকা করা কার্ড তাদের না দিয়ে নিজে বিতরণ করার পরিকল্পনা করছেন। তারা নিজেরা তালিকা জমা দিলেও তা অন্তর্ভুক্ত করেন নি। এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি মহিলা অধিদপ্তর নাম কেটে দেয় বলে আমাদের অজুহাত দেখান। তাই তারা চাল বিতরণ বন্ধ রাখার জন্য আবেদন জানান। আবেদনে ৬ জন ইউপি সদস্য ও ৩ জন সংরক্ষিত আসনের সদস্য স্বাক্ষর করেন।
গতকাল ২৮ মার্চ মঙ্গলবার ওই ইউনিয়নে এসব কার্ডের বিপরীতে চাল বিতরণের কথা ছিল। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইউএনও চাল বিতরণ কর্মসূচি আপাতত স্থগিত করেন। কিন্তু মঙ্গলবার সকালে চাল বিতরণ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেনের অনুসারী ও ইউপি সদস্যদের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় ইউপি সচিবের কার্যালয়ের চেয়ার টেবিল ভাংচুর ও কাগজপত্র তচনছের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে ইউপি সদস্য ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম, যুবলীগ নেতা হেলাল উদ্দিন রাসেল, আজাদ হোসেনসহ অন্তত ৬-৭ জন আহত হন।
হামলায় আহত যুবলীগ নেতা হেলাল উদ্দিন রাসেল বলেন, মঙ্গলবার সকালে আমি ভিজিডির চাল নিতে আসলে ইউপি সচিব বিতরণ বন্ধ জানায়। বিষয়টি চেয়ারম্যানকে জানাই। চেয়ারম্যান সাহেব সচিবকে চাল বিতরণের নির্দেশনা দিলেও সচিব চেয়ারম্যানকে এসে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন। এই বিষয় নিয়ে ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলামের সাথে কথাকাটির এক পর্যায়ে তিনিসহ লোকজন আমার উপর হামলা করে।
ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম বলেন, ভিজিডি নিয়ে অনিয়মের ব্যাপারে অভিযোগ করায় ইউএনও চাল বিতরণ বন্ধ রাখেন। কিন্তু চেয়ারম্যান তার লোকজন দিয়ে জোরপূর্বক চাল বিতরণ করতে গেলে আমরা বাধা দিই। এ সময় চেয়ারম্যানের অনুসারীরা আমাদের উপর হামলা করে। এতে সংঘর্ষ হয়। এ সময় আমিও হামলার শিকার হই।
ইউপি সচিব আমির হোসেন বলেন, ইউএনওর নির্দেশে ভিজিডির চাল বিতরণ বন্ধ রাখি। সকালে চেয়ারম্যানের লোকজন চাল বিতরণ শুরু করতে চাইলে আমি ইউএনওর নিদের্শনা জানাই। এরই জের ধরে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এসময় আমার অফিস ভাংচুরের শিকার হয়।
ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন রিপন জানান, ইউনিয়ন পরিষদে সৃষ্ট মারামারির ঘটনার পর ইউএনও আমাকে ডেকেছেন। এই বিষয়ে আমি পরে জানাবো।
ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আঃ মান্নান জানান, সংঘর্ষের সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।
উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা তাসলিমুন নেছা জানান, ভিজিডি বিষয়ে ইউপি সদস্যদের লিখিত অভিযোগ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। মঙ্গলবার চাল বিতরণ বন্ধ রাখতে নির্দেশনা দিই। সংঘর্ষের ঘটনাটি জেনেছি। তবে বুধবার (২৯ মার্চ) পুলিশ ও প্রশাসনের লোকজনের উপস্থিতিতে ভিজিডির চাল বিতরণ করা হবে।