প্রকাশ : ০৭ আগস্ট ২০২১, ২২:৩১
র্যাবের অভিযানে পাচার চক্রের অর্থের যোগানদাতা আটক
আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারীদের অর্থ যোগানদাতা মতলবের একজনকে আটক করেছে র্যাব-১১। আজ শনিবার ৭ই আগস্ট চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার বেলুতি গ্রাম থেকে তাকে আটক করা হয়। আটককৃতের নাম মো. লিটন। তিনি ওমান প্রবাসী। কিছুদিন আগে তিনি দেশে ফিরেছেন। র্যাব-১১ এর কোম্পানী কমান্ডার (উপ-পরিচালক) মোহাম্মদ সাকিব হোসেন এ তথ্য জানান।
|আরো খবর
র্যাব-১১ সূত্র জানিয়েছে, গত ৪ আগস্ট মোছাঃ পারুল বেগম (স্বামী ফারুক খান, সাং- গোহাইল বাড়ি, থানা- আশুলিয়া, জেলা- ঢাকা) একটি লিখিত অভিযোগ র্যাব-১১, সিপিসি-২ কুমিল্লা বরাবর প্রদান করেন।
অভিযোগে তিনি জানান, তার আপন ভাই মোঃ জনি (২৮) বিগত দের বছর যাবত ওমান কর্মরত। ওমানে থাকা অবস্থায় ওমান প্রবাসী (বাংলাদেশি) মোঃ তাহের মিয়া ওরফে তুষার তার ভাইকে উন্নত জীবনযাপনের প্রলোভন দেখিয়ে তুরস্কে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করে।
সেখান থেকে তার ভাই তুষারের মাধ্যমে তুরস্কে যাবার কথা বলে তুরস্কের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। কিছু দিন পরে অজ্ঞাত ব্যক্তি তার ভাইকে আটকে রেখে মারধর করে তার কাছে ভিডিও কল দেয়। তাদের কাছে ৭ লাখ টাকা দাবি করে, না দিলে তার ভাই কে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।
অজ্ঞাত ব্যক্তিরা টাকা দেওয়ার জন্য তার কাছে একটি ব্যাংক একাউন্ট ও একটি বিকাশ নাম্বার দেয়। তাদের কথা মতো বিকাশে ২৫ হাজার টাকা এবং ব্যাংক একাউন্টে ৬০ হাজার টাকা ট্রান্সফার করে। তারা আরো টাকার জন্য তাকে চাপ প্রয়োগ করে এবং অবশিষ্ট টাকার জন্য তার ভাইকে ব্যাপক শারীরিক নির্যাতন শুরু করে। খোঁজ নিয়ে তারা জানতে পারে যে, ব্যাংক একাউন্টটি চাঁদপুরের তাই কুমিল্লা র্যাব অফিসে অভিযোগ করে।
ওই অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লা অভিযোগকারীর দেওয়া ব্যাংক একাউন্টের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করে এবং ব্যাংক একাউন্ট থেকে নাম ঠিকানা সংগ্রহ করে শনিবার (৭ আগস্ট) ব্যাংক একাউন্টের মালিক মোঃ লিটনকে, পিতা- আজমত উল্লাহ, সাং- বেলুতি, থানা-মতলব দক্ষিণ, জেলা- চাঁদপুর কে আটক করে।
আটক লিটন ওমান প্রবাসী। সে গত ২৬ জুন বাংলাদেশে ছুটিতে এসেছে এবং পুনরায় ২৫ আগস্ট চলে যাওয়ার কথা।ওমানে সে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের কাজ করে এবং এই চক্রের টাকা আদান-প্রদানের সাথে সে জড়িত। আটক লিটনের দেওয়া তথ্যমতে র্যাব জানতে পারে, ভিকটিম ওমানে থাকা অবস্থায় মোঃ তাহের মিয়া ওরফে তুষার নামের এক দালালের পরিচয় হয়।
তুষার ভিকটিমকে প্রথমে ইরানে পাঠায়। ইরানে সুমন নামে অন্য একজন দালাল ভিকটিম জনিকে রিসিভ করে। ইরান থেকে দালাল সুমন কর্তৃক তুরস্কে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। দালাল সুমন ভিকটিমকে তুরস্কে প্রেরণ করলে তুরস্কের দালাল সাইফুল এবং রানা ভিকটিমকে রিসিভ করে। এভাবে ওমান থেকে তুরস্কে পাঠানো হয়।
ওই সংঘবদ্ধ চক্রটি মধ্যপ্রাচ্যের প্রবাসী বাংলাদেশীদের উন্নত জীবনের প্রলোভন দেখিয়ে ইউরোপসহ বিভিন্ন উন্নত দেশে প্রেরণ করে এবং মাঝখানে তাদের জিম্মি/আটক করে মারধর করে তাদের পরিবারের নিকট থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে।
এ বিষয়ে গ্রেফতারকৃত ও পলাতক আসামীদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন বলে র্যাব সূত্রে জানা গেছে।