শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৩ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ৩১ মার্চ ২০২২, ২১:৫৫

লেংটার মেলা নেশাখোরদের যেনো মাদকের স্বর্গরাজ্য

মাহবুব আলম লাভলু
লেংটার মেলা নেশাখোরদের যেনো মাদকের স্বর্গরাজ্য

মতলব উত্তর উপজেলার বদরপুর (বেলতলী) শাহসূফী সোলেমান লেংটার মাজারে চলছে ১০৩তম ওরস। ৩১ মার্চ থেকে শুরু হয়েছে। চলবে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত। মেলায় চলছে অশ্লীল নৃত্য, মাদকের রমরমা আসর, ধর্মীয় গান ও মজমা। মেলায় মাদকের রয়েছে ৫ শতাধিক দোকান। তবে প্রকাশ্যে মাদকের রামরমা হাটের বিষয়টি চোখে পড়ার মতো। নেশাখোরদের দেখলেই মনে হয় যেনো এটা যেনো মাদকের স্বর্গরাজ্য।

প্রতিদিন অশ্লীল নৃত্যের তালে তালে ছিটানো হচ্ছে টাকা। স্থানে স্থানে পাগলের ভক্তরা গাঁজার আসর বসিয়ে গাঁজা সেবন করছেন। মাদক সেবনে জোগ দিচ্ছেন দেশের বিভিন্নস্থান থেকে আসা যুবকরা। তারা মনে করেন লেংটার মেলায় এসেছেন আর গাঁজা খাবেন না তা কি করে হয়? সব মিলিয়ে এ যেনো ওরশের নামে মাদকসেবীদের মহামিলন।

সোলেমান লেংটা উপমহাদেশের একজন খ্যাতিমান আউলিয়ার দাবিদার। বাংলা ১২৩০ সালে কুমিল্লা জেলার মেঘনা উপজেলার গোবিনাদপুর ইউনিয়নের আলীপুর নামক গ্রামের এক দরিদ্র পরিবারে শাহ্ সুফি সোলেমান লেংটা জন্মগ্রহণ করেন। তার জীবনের অধিকাংশ সময়ই কাটিয়েছেন মতলবের বিভিন্ন অঞ্চলে। সোলেমান লেংটার বোনের বাড়ি বদরপুরে মাজারটি অবস্থিত।

১৩২৫ বাংলা সনের ১৭ চৈত্র শাহ্ সুফি সোলেমান লেংটা তার বোনের বাড়ি বদরপুর গ্রামে মৃত্যুবরণ করলে সেখানে কবর দিয়ে মাজার স্থাপন করা হয়। প্রতি বছর চৈত্র মাসের ১৭ তারিখে তার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ৭ দিনব্যাপী ওরশ এবং মেলা বসে সেখানে। ৭ দিনের এ মেলায় আসা প্রতিটি দোকান থেকে ৫, ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত নেয়া হয়। মাজারে মানত মানতে দেয়া হচ্ছে গরু, ছাগল, নগদ অর্থ, আগরবাতি ও মোমবাতি। প্রতিদিন উঠছে কোটি টাকা। সবমিলিয়ে এখানে বাণিজ্য হচ্ছে কয়েক কোটি টাকা। এ টাকার কোনো রাজস্ব পাচ্ছে না সরকার। অনেকেই আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যাচ্ছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, মেলায় মাদকসেবীরা মাজারের পশ্চিম অঞ্চলের পুকুরের পাড় ও পুকুর সংলগ্ন কাঠের বাগান এলাকা, ধনাগোদা বেড়িবাঁধ লাগোয়া বাঁধের ভিতর-বাহির, নদীরপাড়সহ বিস্তৃর্ণ এলাকাজুড়ে প্রায় ৫ শতাধিক মাদক বিক্রি ও সেবনের আস্তানা গেরে বসেছে। সকল প্রকার মাদক দ্রব্যই পাওয়া যায় এ মেলায়। আর প্রতিদিন বিকেল থেকেই জমতে থাকে এইসব মাদকের দোকান। চলে সারারাত। মেলা প্রাঙ্গণ যেন নেশার স্বর্গরাজ্য ও নিরাপদ স্থান। দলে দলে আস্তানায় চলছে মাদক সেবন। মেলা প্রাঙ্গণের বাতাসে বইছে গাঁজার গন্ধ।

উপজেলার চরকালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ধর্মীয় শিক্ষক মাওলানা আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ইসলামে মাদকের কোনো সুযোগ নেই। আর বদরপুর মেলায় যদি মাদকের আস্তানা বসে থাকে তা ইসলাম কোনভাবেই সমর্থন করে না।

মেলার আইন শৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা মতলব উত্তর থানার ওসি (তদন্ত) মাসুদ জানান, মেলায় লাখ লাখ লোকের সমাগম হয়। মেলায় অনেক পাগল লোক আসে। মাদক বিক্রি ও সেবনের সময় আমরা সামনে গেলে তারা দৌঁড়িয়ে পালিয়ে যায়। আর এভাবে আমরা কতজনকে আটক করবো?

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়