প্রকাশ : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৪:৪৮
ফরিদগঞ্জে দলিল লেখকের কান্ড!
সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে জমি রেজিস্ট্রি
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে একুশ লক্ষ টাকা মূল্যের ক্রয়কৃত জমি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে দুই লক্ষ টাকা মূল্য দেখিয়ে রেজিস্ট্রি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে এক দলিল লিখকের বিরুদ্ধে। জমি ক্রেতা একুশ লক্ষ টাকা মূল্য নির্ধারন করে দলিল লিখকের কাছে সরকারি রাজস্ব জমা দিলেও ঐ দলিল লিখক প্রতারনা করে দুই লক্ষ টাকা মূল্য দেখিয়ে সমপরিমান রাজস্ব জমা দিয়ে রেজিস্ট্রি করেন। বছর দুয়েক পর মুল দলিল গ্রহণ করার পর জমি ক্রেতার কাছে বিষয়টি ধরা পড়ে। ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে। এব্যাপারে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
|আরো খবর
সরকারকে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে রেজিস্ট্রিকৃত ওই দলিল ও ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার ৫ নং গুপ্টি পূর্ব ইউনিয়নের সৌদি প্রবাসী মো.ফখরুল ইসলামের স্ত্রী ববিতা বেগম ফরিদগঞ্জ পৌর এলাকার আল-কায়েত গংদের থেকে পৌর এলাকার কেরোয়া মৌজায় ৩ শতক জমি ২১ লক্ষ টাকা মূল্যে ৫৯২৫/১৬ নং দলিল মূলে খরিদ করেন। ওই জমির দলিল করার জন্য ক্রেতা ববিতা বেগম তার পাশ্ববর্তী এলাকার দলিল লেখক আরিফ হোসেনকে দায়িত্ব দেন, এসময় ববিতা বেগম একুশ লক্ষ টাকা মূল্যের সমপরিমান রাজস্ব সহ সর্বমমোট দুই লক্ষ ৭০ হাজার টাকা দলিল লেখক আরিফ হোসেনকে বুঝিয়ে দেন। কিন্তু আরিফ হোসেন দলিলটি একুশ লক্ষ টাকা দেখিয়ে নকল হিসেবে একটি কম্পোজ কপি ববিতা বেগমকে দিয়ে কৌশলে বাড়ীতে পাঠিয়ে দেন। ববিতার অনুপস্থিতিতে ওই দলিলের উপর পাতায় একুশ লক্ষ টাকার স্থানে ২ লক্ষ টাকা দেখিয়ে সরকারকে মোটা অংকের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে দলিলটি রেজিস্ট্রি করেন। পরবর্তিতে ববিতা বেগমের হাতে মূল দলিলটি আসলে তিনি বুঝতে পারেন তার সাথে প্রতারণা করা হয়েছে। বিষয়টি জানতে পেরে ভুক্তভোগী ববিতা বেগম দলিল লেখক আরিফের সাথে যোগাযোগ করলে এর সমাধান করে দিবেন বলে ভুক্তভোগীদের আশ্বাস প্রদান করে বিভিন্ন হয়রানী করে আসছেন। এই দিকে এই দলিল দিয়ে অফিসিয়াল বিভিন্ন কাজ করতে গিয়ে অনেক হয়রানীর শিকার হয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন বলে জানা যায়।
বিষয়টি নিয়ে ভুক্তভোগী ববিতা বেগম বলেন, আমি একুশ লক্ষ টাকা দিয়ে পৌরসভায় ৩ শতাংশ সম্পত্তি কিনেছি। ওই সম্পত্তির রেজিস্ট্রি খরচ বাবদ দলিল লেখক আরিফ হোসেনকে দুই লক্ষ ৭০ হাজার টাকা দিয়েছি। আরিফ হোসেন আমার অজান্তে প্রতারনা পূর্বক সরকারী রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে একুশ লক্ষ টাকা মূল্যে দিয়ে রেজিস্ট্রি করার কথা থাকলেও ২ লক্ষ টাকা দেখিয়ে রেজিস্টি করে। মূল দলিল আসলে আমি জানতে পারি সে সরকারী রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আমার এত বড় ক্ষতি করেছে,আমি সরকারের কাছে বিচার চাই।
অভিযুক্ত দলিল লেখক আরিফ হোসেন’র সাথে কথা হলে তিনি জানান, ববিতা বেগমকে বলেন, সে পারলে আমার নামে মামলা করতে। এদিকে দলিল লেখক সমিতির সভাপতি হাসান রাজা পাটওয়ারীর সাথে কথা বলতে গেলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
বিষয়টি নিয়ে ফরিদগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রার আশ্রাফুল ইসলাম বলেন, দলিলটি ২ লক্ষ টাকা মূল্যে রেজিস্ট্রি হয়েছে। ভুক্তভোগীর অভিযোগের বিষয়টি আমি জেনেছি, দলিল লেখক সমিতির নেতৃবৃন্দ ঘটনাটির মীমাংসার চেষ্টা করছেন। তবে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একুশ লক্ষ টাকা মূল্যে জমিটি রেজিস্ট্রি হলে মোটা অংকের রাজস্ব সরকারী কোষাগারে জমা পড়তো।