প্রকাশ : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০:৩৬
রায়পুরে শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে জখম, দুই মাদরাসা শিক্ষক বরখাস্ত

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে প্রফেসর কাজী ফারুকী কল্যাণ ট্রাস্টের পরিচালিত কাজী হাছানুজ্জামান অজিউল্লাহ মাদরাসায় বুধবার দুপুরে এক শিশু ছাত্রকে পিটিয়ে জখমের ঘটনায় অভিযুক্ত দুই শিক্ষক আতাউর ও শরীফ হোসেনকে বরখাস্ত করেছেন কর্তৃপক্ষ ।
|আরো খবর
এ ঘটনার পর বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫) দুপুরে আহত শিক্ষার্থী মাহমুদ হাসানকে রায়পুর সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় শিশু আইনে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিয়েছেন শিশুর মামা ফিরোজ আলম।।
আহত ছাত্রের মামা ফিরোজ আলম বলেন, ওই প্রতিষ্ঠানের হেফজ বিভাগের ছাত্র মাহমুদ হাসান পড় না পারার কারনে বুধবার সকালে শিক্ষক বেত্রাঘাত করে। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় আবার একই কারণ দেখিয়ে মাদরাসা হেফজ বিভাগের প্রধান আতাউর রহমান ১২টি বেত্রাঘাত করে। এ সময় মাহমুদ অচেতন হয়ে পড়লে তার মা শাহিনুর বেগমকে ডেকে এনে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন কর্তৃপক্ষ।
আহত মাহমুদ হাসান রায়পুরের উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের খাসেরহাট এলাকার সৌদি প্রবাসী মিজানুর রাহমান ও গৃহিনী মা শাহিনুর বেগমের ছেলে। আহত মাহমুদুর রহমানকে বৃহস্পতিবার দুপুরে (১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫) রায়পুর সরকারি হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে শিশু ছাত্র আহতের
ঘটনায় অভিযুক্ত সিলেটের জামালগন্জ ও রামগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা দুই শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়। সাংবাদিক ও পুলিশ মাদরাসায় যাওয়ার আগেই পালিয়ে যায় দুই শিক্ষক।
ঘটনার পর আহত শিক্ষার্থী মাহমুদুর রহমান জানায়, বুধবার কোরআন ভুল পড়ার কারণে শিক্ষক শরীফ হোসেন ৬টি বেত্রাঘাত করেন। একই কারণে বৃহস্পতিবার সকালে শিক্ষক আতাউর রহমান ১২টি বেত্রাঘাত করেছেন। বিষয়টি আমি আমার মাকে জানাই।। মারধরের পর দুই শিক্ষক হুমকি দিয়েছেন— ঘটনাটি পরিবারকে জানালে তাকে জবাই করে টুকরো টুকরো করে ফেলা হবে অথবা মাদরাসার ছাদ থেকে ফেলে হত্যা করা হবে।
ঘটনার পর ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মাহমুদের মা শাহিনুর জানান, আমি বাড়িতে কাজ করছিলাম। বড়ো হুজুর ফোন করে জানান, আপনার ছেলে অসুস্থ। বাড়িতে নিয়ে যান। ছেলে বলেছে, কোরআন পড়া না পারায় দু শিক্ষক পৃথকভাবে নির্মমভাবে মারধর করেছেন। জামা খুলে দেখি, পুরো শরীরে আঘাতের দাগ। আমার সন্তান অন্যায় করলে আমাদের বলতে পারতেন, এভাবে মারধর করা মানবিক নয়। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।। এর আগেও এই শিক্ষকরা এক শিক্ষার্থীকে মারধর করেছিলেন।
এ বিষয়ে শিক্ষক শরীফ হোসেন ও আতাউর রহমান পলাতক থাকায় বক্তব্য নেয়া যায়নি। মাদরাসা মোহতামিম ফারুখ হোসেন বলেন, শিশু ছাত্র মাহমুদের ওপর অন্যায়ের শাস্তি হিসেবে দুই শিক্ষকে বরখাস্ত করা হয়েছে। আমরা হাসপাতাল গিয়ে সমবেদনা জানিয়েছি।
বৃহস্পতিবার বিকেলে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. পিযুস চন্দ্র দাস জানান, মাদরাসার আহত শিশু শিক্ষার্থী মারাত্মকভাবে জখম হয়েছে। শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসার পর সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি রাখা হয়।