বুধবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৪  |   ২৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুরে রাজনৈতিক মামলায় আসামীদের আটক অভিযান অব্যাহত। যুবলীগ, কৃষকলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের ৫ নেতা-কর্মী আটক
  •   ছেঁড়া তারে প্রাণ গেল যুবকের
  •   চাঁদপুরে গণঅধিকার পরিষদের ৩য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন
  •   রাজধানীতে কচুয়ার কৃতী সন্তানদের সংবর্ধনা
  •   সম্প্রীতির চমৎকার নিদর্শন আমাদের বাংলাদেশ --------------জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন

প্রকাশ : ৩০ জুন ২০২১, ১৪:১১

মহামায়া বাজারের গুটি কয়েক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে সিএন্ডবি খাল ভরাটের অভিযোগ

গোলাম মোস্তফা
মহামায়া বাজারের গুটি কয়েক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে সিএন্ডবি খাল ভরাটের অভিযোগ

চাঁদপুর সদর উপজেলার দৈনিক ও সাপ্তাহিক বাজারগুলোর মধ্যে মহামায়া বাজারের ঐতিহ্য দীর্ঘ দিনের। এটিকে এক সময় বলা হতো কয়েকটি উপজেলার জংশন। নানা কারনে বাজারটি সব সময় সরগরম থাকে। বাজারের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া সিএন্ডবি খাল দিয়ে এক সময়ে মালামাল নিয়ে ইন্জিনচালিত নৌকা চলাচল করলেও মহামায়া বাজারের কতিপয় ব্যবসায়ীর পরিকল্পিত পরিকল্পনা অনুযায়ী খালটি দখলের প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ময়লা আর্বজনা ফেলে মৃত খালে পরিনত করার চেষ্টা অপচেষ্টায় রয়েছেন।

সরজমিনে গিয়ে, মহামায়া বাজার ও খালের আশপাশের বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এই খালের পানিতে গোসলসহ গৃহস্থালি কাজসহ বিভিন্নভাবে ব্যবহার করতো। আর এখন মহামায়া বাজারের যে অংশ থেকে শুরু করে শেষ অংশ পর্যন্ত অথ্যাৎ বাজার এলাকায় খালের যতটুকু অংশ রয়েছে। খালটির ঐ অংশে গত ২/৩ বছর যাবত ময়লা আর্বজনা ফেলে খালটিকে মৃত খালে পরিণত করেছেন। ফলে বর্ষার ভরা যৌবনেও এখন এই খাল দিয়ে নৌকা চলাচল দুরের কথা, খালটি চেনা দায় হয়ে পড়েছে। আর শুল্ক মৌসুমে প্রতিনিয়ত অবৈধ দখলদারত্বের কারণে ধীরে ধীরে তা' বিলীন হওয়ার পথে। এই অবস্থায় খালের পানি ব্যবহারকারীরা যেমনি বেকায়দায় তার চেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে কৃষকরা। কারণ খালটি থাকার কারনে ঐ অঞ্চলে ইরি ধানের ব্যাপক চাষ হলেও, এখন সেটি ও বন্ধ রয়েছে।

দেখা যায়, খালটির পাশে গড়ে ওঠা বাজারের ব্যবসায়ীদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ময়লা ও বর্জ্য পালিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে এ সকল ময়লা আর্বজনার প্রচন্ড দুর্গন্ধে চলাফেরা যেমনি অসম্ভব, তেমনি পরিবেশের ও বিপর্যয় ঘটছে। মহামায়া বাজারটি মুলত জেলার চারটি উপজেলার যথাক্রমে চাঁদপুর সদর, হাজীগঞ্জ, মতলব দক্ষিণ ও ফরিদগঞ্জ উপজেলার জংশন বলা হয়। অপরদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সহ জনগুরুত্বপূর্ণ সরকারি ও বেসরকারিসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে এ বাজারে।

তাছাড়া বাজারকে কেন্দ্র করে বাজারের আশপাশে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে আবাসিক ভবনের। রয়েছে কওমী মাদ্রাসা, ব্যাংক-বীমা, এনজিও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সাপ্তাহিক দু''দিন বাজারটিতে হাট বসার কারণে দূরদূরান্ত থেকে বাজারে শত শত মানুষের আনাগোনা প্রতিনিয়ত। যে কারনে ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগমে সব সময় জমজমাট থাকে বাজারটি। এদিকে বাজারের ব্যবসায়ীদের ময়লা আর্বজনা পালানোর জন্য ডাস্টবিন না থাকায়, এই অজুহাত স্হানীয় একটি প্রভাবশালী বংশের গুটিকয়েক ব্যক্তির পরিকল্পিত পরিকল্পনা অনুযায়ী খালে ময়লা ফেলে খালটি দখলের প্রক্রিয়া চলছে। ইতিমধ্যে ঐ সকল ব্যক্তিরা খালের পাশে অবৈধ ভাবে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান গড়ে ব্যবসা করছে। বাজারের সব ময়লা-আবর্জনায় ময়লার স্তূপের শুষ্ক মৌসুমে দূগন্দ্বে বাজারে চলাফেরা করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। যা স্থানীয় মানুষদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বৃদ্ধি করছে।

স্হানীয় বাসিন্দারা জানান, ময়লা আর্বজনা পালানোর মধ্য দিয়ে মুলত সম্পওি দখলের পাঁয়তারার গোপনে রয়েছেন বাজারের দু' ব্যক্তি। তাঁরা হচ্ছেন দেলোয়ার হোসেন দুলু ও খোকা বেপারী। অপরদিকে বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারের ব্রীজ সংলগ্ন স্হানের পাশে বাজারের দোকানীদের বর্জ্য ও গরু জবাইয়ের স্থান হওয়ার কারণেও বাজারে আগতদের মারাত্মক সমস্যার সম্মুখিন হতে হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এদিকে খালে ময়লা আর্বজনা পালানোর বিষয়ে বাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন, নির্দিষ্ট কোন ডাস্টবিন না থাকায় ময়লা আবর্জনা ফালানোর স্থান হিসেবে খালটিকে বেছে নিয়েছেন। বাজারের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি দায়িত্বে থাকা ও উক্ত ৪ নং শাহমাহমুদপুর ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে কথা হলে, তিনি বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি শীঘ্রই ঘটনাস্থলে গিয়ে দ্রুত সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবো।

সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সাজেদা বেগম পলিন বলেন, খালের পাশ্বে বা জনসমাগম বা মানুষ চলাচলকারী রাস্তায় নিদিষ্ট স্থান ছাড়া ময়লা আর্বজনা পালানো ঠিক না। এতে শুধু মানুষ নয়, পরিবেশের মারাত্নক ঝুঁকি পড়ে। মানুষের শরীরে রোগের সম্ভাবনা থাকে বেশী । তাছাড়া বাজারের ময়লা আর্বজনা থেকে মানুষের রোগাক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।

এ বিষয়ে চাঁদপুরের পরিবেশ অধিদপ্তরের সাথে কথা হলে বলেন, মহামায়া বাজারের ব্যবসায়ীরা এমনটি করে থাকলে পরিবেশকে হুমকীর সন্মুখীন করছে। বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এবিষয়ে অভিযুক্ত ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন দেলুর সাথে মুঠো ফোনে কথা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন। অপর অভিযুক্ত ব্যবসায়ী খোকা বেপারীর মুঠো ফোনে বার বার ফোন দিয়ে ও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি বলে বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তাই উল্লেখিত বিষয়টির সমস্যা সমাধানে দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়