বুধবার, ২১ মে, ২০২৫  |   ২৫ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   ঢাকা থেকে উড্ডয়নের পরপরই তার্কিশ এয়ারলাইন্সের ইঞ্জিনে আগুন

প্রকাশ : ২০ মে ২০২৫, ১৫:০৮

কোরবানির হাট কাঁপাবে দেড়টন ওজনের ‘ভুঁইয়া রাজ’

অনলাইন ডেস্ক
কোরবানির হাট কাঁপাবে দেড়টন ওজনের ‘ভুঁইয়া রাজ’

হানিফ ভুঁইয়া ৩৫ হাজার টাকায় একটি গাভী কিনে শুরু করেন প্রান্তিক খামার। সেই গাভীর দেয়া ৬টি বাছুরের মধ্যে ‘ভুঁইয়া রাজ’ একটি। চার বছর আগে জন্ম নেয়া বাছুরটির শারীরিক গঠন দেখেই বংশের সাথে মিল রেখে নাম রাখা হয় ‘ভুঁইয়া রাজ’।

গেলো বছর চাঁদপুর ও হাজীগঞ্জ বাজারের কোরবানির হাটে দাম উঠে ৫ লাখ টাকা। ন্যায্য দাম না পাওয়ায় এবার আট লাখ টাকায় বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেয় তার পরিবার।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. জুম্মন খান বলেন, ভুঁইয়া রাজ’র মতো এতো বড় গরু আমাদের এলাকাতে আর দেখিনি। চার বছর ধরে এই গরুটা হানিফ লালন-পালন করছে। ঘরের সবচেয়ে বড়ো গরু এটি। তাই এর নাম দিয়েছে ‘ভুঁইয়া রাজ’।

মো. সোহাগ তফদার নামের আরেকজন বলেন, আসলে এলাকায় অনেক বলাবলি হচ্ছে, এই বাড়িতে একটা বড়ো গরু আছে। আমি আইসা আজকে দেখলাম সরাসরি। আসলে গরুটা দেখে অনেক মায়া লাগতেছে। এলাকার মানুষও বলে, এতো বড়ো গরু আর কখনও দেখেনি। গরুটি বিক্রয় হয়ে গেলে মায়া লাগবে।

গরুর মালিক হানিফ ভূঁইয়ার বাবা মো. শহিদ ভূঁইয়া বলেন, শখ কইরা ‘ভুঁইয়া রাজ’ নাম রাখছে। গত বছর ৫ লাখ মূল্য কইছে। এ বছর আট লাখ টাকা হলে বিক্রি করুম। যেখানে চার বছর পাললাম। এটার মায়া লাগবে না?

গরুটি নিজের সন্তানের মতো লালন-পালন করেন হানিফ ভুঁইয়া। বিক্রির কথা শুনলেই জল আসে চোখে। এবার আট লাখ টাকায় গরুটি বিক্রি করতে পারবে বলে আশাবাদী। গরুটির পেছনে খাবারের জন্যে দৈনিক ১ থেকে দেড় হাজার টাকা ব্যয় করতে হয় এই খামারীর।

গরুর মালিক হানিফ ভুঁইয়া বলেন, এই গরুটা আমি নিজে লালন পালন করেছি। তারপর ২০২৪ সালে বিক্রি করতে পারি নাই, কিন্তু ২০২৫-এ বিক্রি করবো আশা আছে। দাম চাইতেছি আমি ৮ লাখ টাকা। গরুটির জন্ম এই জায়গা আর আমরা ভূঁইয়া বংশের মানুষ। ওই হিসাবে এটার ‘ভুঁইয়া রাজ’ নামকরণ করা হয়েছে। চাঁদপুর আমি যত জায়গায় গরু দেখেছি, ইনশাআল্লাহ আমার গরুর চেয়ে বড়ো গরু নাই। এই গরুটা আমি চাঁদপুরের সেরা মনে করি।

তিনি আরো বলেন, আমার তিনটা সন্তান আছে। তিনটা সন্তান যেমন লালন-পালন করছি, ঠিক আমার এই গরুটা তেমন করে পালন করছি। আমি মনে করি, আমার এই তিনটা সন্তানের সাথে সাথে এটাও একটা সন্তান। এটা চলে গেলে আমার মনে অনেক কষ্ট লাগবে। আমার অনেক দিন কষ্ট ভোগ করতে হবে। তারপরও ছেড়ে দিতে হবে। কারণ গরুর ছয়টা দাঁত উঠছে। আমার দৈনিক প্রায় এক দেড় হাজার টাকা ব্যয় হয়। যেমন ১০ কেজি চিকন মোটা ভুসি যায়। তারপর আমার সয়াবিন ভুসি যায়। ডালের ভুসি, খইল, ভুট্টা, চালের গুড়া এগুলা মিলে ১৫শ টাকার মতো খরচ হয়। যেমন এক বছরে হিসাব করছি প্রায় ২ লাখ টাকার মতো খরচ হইছে নিজের শ্রম ছাড়া।

তিন বছর ধরে ভুঁইয়া রাজের স্বাস্থ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন পার্শ্ববর্তী এলাকার পশু চিকিৎসক আহমেদ শরীফ। তিনি খামারের সবক'টি গরুর দেখাশোনা করলেও এই গরুটির প্রতি বিশেষ দৃষ্টি রাখেন।

চাঁদপুর সদর উপজেলার ৫নং রামপুর ইউনিয়ন পরিষদের পশু চিকিৎসা কর্মী আহমেদ শরীফ বলেন, আমি নিয়মিত উনার খামার দেখাশোনা করি। গরুর বয়স প্রায় ৪ বছর, আজকে তিন বছর এই গরুটাকে দেখাশোনা করতেছি। উনার খামারে যতগুলো গরু আছে, সবগুলোর জন্যে পরামর্শ দেই। যাতে স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের মাধ্যমে গরুটাকে লালন পালন করতে পারে। গরুটার ওজন আনুমানিক দেড়টনের ওপরে । আর বাজার মূল্য চেয়েছে আট লাখ টাকা।

‘ভুঁইয়া রাজ’ অস্ট্রেলিয়ার ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড় গরু। এটি চাঁদপুর জেলার শাহতলী ইউনিয়নের ভাটেরগাঁও গ্রামের ভুঁইয়া খামারে লালন-পালন হচ্ছে। এবার খামারে রেখে বিক্রি না হলে ঢাকার গাবতলী অথবা চট্টগ্রামে গরুর হাটে তোলা হবে বলে জানান গরুর মালিক।

সূত্র : বার্তা২৪.কম।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়