প্রকাশ : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৮:৪৭
নদীভাঙ্গণ প্রতিরোধ সংগ্রাম কমিটির সভায় বক্তাগণ
শহর রক্ষা বাঁধ রক্ষায় নদীতে ড্রেজিংসহ স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করতে হবে
ঐতিহাসিক বাণিজ্য বন্দর চাঁদপুর শহর রক্ষায় প্রয়োজনীয় ড্রেজিংসহ স্থায়ীবাঁধ নির্মাণের জোড়ালো দাবি জানিয়েছেন নদী ভাঙ্গণ প্রতিরোধ সংগ্রাম কমিটির দক্ষিণাঞ্চল শাখার নেতৃবৃন্দ। ক'দিন পরপর থোক বরাদ্দ আর বালু ভর্তি জিউ ট্যাক্মের ব্যাগ নদীতে ফেলে প্রমত্তা মেঘনার ভাঙ্গণরোধ করা যাবে না বলেও নেতৃবৃন্দ অভিমত ব্যাক্ত করেন।
|আরো খবর
৫ সেপ্টেম্বর রোববার সকাল ১১ টায় চাঁদপুর শহরের পুরানবাজার ১নং ওয়ার্ডস্থ নতুন রাস্তায় দক্ষিণাঞ্চল নদী ভাঙ্গণ প্রতিরোধ সংগ্রাম কমিটির ১নং ওয়ার্ড কমিটির আয়োজনে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তারা বলেন, আমরা দীর্ঘদিন যাবত দাবী জানিয়ে আসছি চাঁদপুর শহর রক্ষায় স্থায়ীবাঁধ নির্মাণের। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ড তা' গ্রাহ্য না করে যখন ভাঙ্গন প্রক্রিয়া শুরু হয়, তখন তড়িঘড়ি করে বালুভর্তি জিউ ট্যাক্মের বস্তা নদীতে ফেলে ভাঙ্গণ প্রতিরোধের চেস্টা করেন।
তারা বলেন, নদীর পানি চলাচলের স্বাভাবিক গতিপথ অবরুদ্ধ করে, নদীর পাড়ে বস্তা ফেলে, নদীর তীর রক্ষা করা যাবে না। এজন্য সঠিক সার্ভের মাধ্যমে নদীর চলাচল স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে মেঘনার বুকে জেগে থাকা অদৃশ্যমান ডুবো চর ড্রেজিং-এর মাধ্যমে কেঠে দিতে হবে। যা পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মোঃ শামসুল আলম সাহেব অনুভব করেছেন।
আমরা মাননীয় প্রতিমন্ত্রী মহোদয়কে ধন্যবাদ জানাই। তিনি অনুভব করতে পেরেছেন নদীর তীর রক্ষা করতে হলে প্রয়োজন নদীতে জরুরীভাবে ড্রেজিং করা। অথচ বছরের পর বছর মেঘনার বুকে জেগে উঠেছে অসংখ্য ডুবো চর। কিন্তু তা' ড্রেজিং করার মতো কোনো ব্যবস্থাই পানি উন্নয়ন বোর্ড করতে পারেনি। যদি সময়মত নদীর স্বাভাবিক চলাচল অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে নদীতে ড্রেজিং করা হতো, ডুবো চর কেটে দেওয়া যেত, তাহলে হয়তো চাঁদপুর শহর ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে ক্রমশঃ ছোট হয়ে আসতো না, আর বাপ দাদার ভিটে মাঠি হারিয়ে কাউকে অন্যত্র সরে যাওয়ার প্রয়োজন দেখা দিত না।
বক্তাগণ শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপুমনির প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন যখনই শহর রক্ষাবাঁধে ভাঙ্গণ দেখা দিয়েছে, শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপুমনি এমপি তড়িৎগতিতে ব্যবস্থা নিয়েছেন, প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা ছুটে এসেছেন। তাদের তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার ফলে হয়তো ভাঙ্গণ কিছুটা রোধ হয়েছে কিন্তু স্থায়ীভাবে তা' রোধ করা যায়নি। তাই চাঁদপুরবাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবী চাঁদপুর শহর রক্ষায় অনতি বিলম্বে স্থায়ী বাঁধ দিতে হবে। নতুবা শহর রক্ষা বাঁধ রক্ষা করা যাবে না। আমরা চাঁদপুরের সুযোগ্য দুইজন মন্ত্রীর কাছে এই সভার মাধ্যমে অকুতি জানিয়ে বলতে চাই, দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনার নামে সময় দীর্ঘ করবেন না, নদীসিকিস্তি মানুষসহ ব্যবসায়িক প্রাণকেন্দ্র চাঁদপুর শহর রক্ষায় জরুরীভাবে স্থায়ীবাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা দ্রুত কার্যকর করুন। পদ্মা, মেঘনার তিন নদীর মোহনা থেকে হাইমচর পর্যন্ত যে ডুবো চর রয়েছে, সেগুলো কেঠে ড্রেজিং-এর মাধ্যমে নদীর চলাচল স্বাভাবিকরণসহ নদীর নাবব্যতা ফিরিয়ে আনতে অনতিবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা নিন।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন দক্ষিণাঞ্চল নদীভাঙ্গণ প্রতিরোধ সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফয়েজ আহম্মদ ভূঁইয়া। নদীভাঙ্গন প্রতিরোধ সংগ্রাম কমিটির ১নং ওয়ার্ডের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন মন্টু গাজীর সভা প্রধানে ও দক্ষিণাঞ্চল নদীভাঙ্গন প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ব্যাংকার মজিবুর রহমানের পরিচালনায় আরো বক্তব্য রাখেন দক্ষিণাঞ্চল নদীভাঙ্গন প্রতিরোধ সংগ্রাম কমিটির সহসভাপতি রোটারিয়ান গোপাল সাহা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন মানিক, সদস্য কার্তিক সরকার, ১নং ওয়ার্ড কমিটির সহসভাপতি মোহাম্মদ আলী কুট্রি, ২নং ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি সহদেব দেবনাথ, সহসভাপতি প্রদীপ দেবনাথসহ নদীভাঙ্গন প্রতিরোধ সংগ্রাম কমিটির নেতৃবৃন্দ।