প্রকাশ : ০৩ এপ্রিল ২০২৪, ২২:৫৭
গৃহস্থের বিচার চেয়ে থানায় অভিযোগ চোরের
গৃহস্থের বিচার চেয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে চোর চক্রের এক সদস্য। চুরির ঘটনায় উল্টো অভিযুক্ত হয়ে আতংকিত গৃহস্থসহ আশপাশের লোকজন। যদিও ওই গৃহস্থের পক্ষেও থানায় লিখিত অভিযোগ হয়েছে। পুলিশ উভয় ঘটনায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার চরদু:খিয়া পূর্ব ইউনিয়নের পশ্চিম আলোনিয়া গ্রামের ঘটনা এটি।
জানা গেছে, পশ্চিম আলোনিয়াসহ আশপাশের এলাকায় গত কয়েক মাস ধরে অনবরত চুরির ঘটনা ঘটছে। স্থানীয়দের অভিযোগ একটি সংঘবদ্ধ চক্র চুরি ঘটনা ঘটালেও হিন্দু সম্প্রদায় অধ্যুষিত ওই এলাকার লোকজন ভয়ে তাদেরকে কিছু বলতে পারছে না। এক মানসিক প্রতিবন্ধীকে এই কাজে ব্যবহার করতো এই চোর চক্র। ফলে বাধ্য হয়ে ওই মানসিক প্রতিবন্ধীর মা স্বেচ্ছায় তা ছেলেকে থানায় সোর্পদ করে। এসব চোরের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানিরও অভিযোগ রয়েছে।
থানায় লিখিত অভিযোগ ও সরেজমিনে জানা যায়, ওই গ্রামের কবির হোসেন (৪০), দুলাল ছৈয়াল (৪৫), বিকাশ চন্দ্র দাস (২৫)সহ একটি চক্র দীর্ঘদিন যাবত গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটাচ্ছে। এতদিন তাদের ভয়ে লোকজন কিছু না বললেও সর্বশেষ গত শুক্রবার রাতে কয়েকটি নারিকেল গাছ থেকে নারিকেল চুরি ঘটনা ঘটে। চুরির মালামালসহ ওই চোরদের শনাক্ত করে স্থানীয় ইউপি সদস্য মো: ইউছুপ। চোরের দলের এক সদস্য বিকাশ দাস চোরের দলের বাকী সদস্যদের নামও স্বীকার করে। ওই সময়েই বিকাশ দাস চুরির ঘটনার সাথে কবির হোসেন জড়িত বলায় ইউপি সদস্যের সামনেই কবির হোসেন বিকাশকে মারধর করে। পরে স্থানীয় ভাবে বিষয়টি মিমাংসার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু বিকাশ থানায় গিয়ে উল্টো চুরির শিকার লোকজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করে। পরবর্তীতে চুরির ঘটনার বিষয়ে রাশেদ আলমও বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করে।
স্থানীয় রাসেল, রশিদ আহমদ, আ: রশিদ, অর্চনা, দিপালীসহ লোকজন জানান, কবির হোসেন, বিকাশ দাসসহ এলাকার চিহ্নিত চক্র দীর্ঘদিন ধরেই চুরির ঘটনার সাথে জড়িত। আমাদের গ্রামে গত এক মাসে প্রায় ২০/২৫টি চুরির ঘটনা ঘটেছে। সম্প্রতি আবারও ছাগল, স্বর্ণের গহনা, ফলজ গাছের ফলসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র চুরি হয়ে আসছে। রাশেদ আলম জানায়, গত শুক্রবার তার বাগানের নারিকেল গাছের নারিকেল চুরি হলে চুরিকৃত মালামাল উদ্ধার ও চোরদের শনাক্ত করা হয়। চোরদের অপরাধ স্বীকারের পর স্থানীয় ইউপি সদস্যের হাতে তাদের হস্তান্তরও করা হয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. ইউসুফ বলেন, চুরিকৃত মালামালসহ স্থানীয়রা বিকাশ নামের ওই চোরকে ধরে এনে আমার কাছে সোপর্দ করে। পরে খোঁজখবর নিয়ে দেখি কবিরসহ আরো অনেকের নাম বেরিয়ে আসছে চুরির সাথে সম্পৃক্ত থাকার তথ্য। অপরাধীদের অপরাধ স্বীকারের তাদের পরিবারের আকুতির কারণে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে শালিসি বৈঠকের দিন ধার্যকরা হয়। কিন্তু ধার্যকৃত তারিখে অভিযুক্তরা আত্মগোপনে থেকে উল্টো গৃহস্থের নামে থানায় অভিযোগ দিয়েছে।
এদিকে বিকাশ দাসের অভিযোগের ঘটনার তদন্তকারী কর্মকর্তা এএসআই আমজাদ বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ঘটনা যাই হোক কেউ নিজের হাতে আইন তুলে নিতে পারে না। এটি সমাধানের চেষ্টা করছি।
অন্যদিকে রাশেদ আলমের অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা এএসআই নুরুন্নবী জানান, মঙ্গলবার রাতে অভিযোগ দেয়ার পর বুধবার (৩ এপ্রিল) ঘটনাস্থলে গিয়েছি। অভিযুক্ত কবির হোসেনের সাথে কথা বলার চেষ্টার সময় সে পালিয়ে যায়। এলাকায় তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে।