প্রকাশ : ২৬ জুন ২০২১, ২২:১৭
হাজীগঞ্জ কচুয়া সড়কের ৬ কিলোমিটার : অতিবাঁক অতিগতি প্রতিনিয়ত হচ্ছে মানুষের ক্ষতি !
হাজীগঞ্জ কচুয়া গৌরিপুর সড়কের হাজীগঞ্জ কচুয়া অংশে অতিরিক্ত বাঁক আর এ অংশে অতিরিক্ত গতি নিয়ে গাড়ী চলাচলের কারনে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। এ সকল দুর্ঘটনার কারনে যাত্রী সাধারণের মৃত্যূ আর পঙ্গুর পরিমাণ নেহাত কম নয়। প্রায় দিনই মুখোমুখি সংঘর্ষ, গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে কিংবা পুকুর পড়ে যাওয়া কিংবা পথচারীকে চাপা দেয়ার ঘটনা এ সড়কের ঘটে চলছে।
উক্ত সড়কের শুধু হাজীগঞ্জ অংশে ৩০ দিনে কমপক্ষে ১৫টি দুর্ঘটনা ঘটে বলে চাঁদপুর কন্ঠকে নিশ্চিত করেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন লিটু। তবে সড়কের বাকি অংশটুকুর কাজ করা ছাড়া প্রাথমিকভাবে নতুন চিন্তা নেই হাজীগঞ্জ উপ-সড়ক বিভাগের।
সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা যায়. হাজীগঞ্জ-কচুয়া-গৌরিপুর সড়কটি ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে সংস্কার ও বাঁক সরলীকরণ করা হয়। যার কারনে নোয়াখালী জেলার একাংশ মিলিয়ে লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর-রামগঞ্জসহ চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ- কঢ়ুয়া-সাচার-গৌরিপুর হয়ে ঢাকা কুমিল্লা মহাসড়ক ধরে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের যে কোন অঞ্চলে যাতায়াত অনেক সহজ হয়ে পড়েছে। হাজীগঞ্জ-কচুয়া-গেীরিপুরের ৩২ কিলোমিটার চাঁদপুর সড়ক বিভাগের আওতায় থাকলে ও হাজীগঞ্জ কচুয়া অংশের দুরত্ব ৬ কিলোমিটার। হাজীগঞ্জ কচুয়া সড়কের ১৪ কিলোমিটারের মধ্যে ইতিমধ্যে ৬ কিলোমিটারের কাজ শেষ করা হয়েছে, বাকী ৮ কিলোমিটার ম্যান্টেনেইস্ এর কাজ করে সড়কে যান চলাচল ঠিক রাখা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রামগঞ্জ-হাজীগঞ্জ-কচুয়া অংশের কাজ শেষ হওয়ার পর উক্ত সড়ক দিয়ে গাড়ি চলাচলের পরিমাণ কয়েকগুন বৃদ্ধি পেয়ে যায়। বিশেষ করে এ সড়ক ধরে হাজীগঞ্জ-ঢাকা রুটে বিআরটিসি বাসসহ বেসরকারি বেশ কয়েকটি গণপরিবহন চলাচল শুরু করেছে। এ ছাড়া ও লক্ষীপুর থেকে ঢাকা বিটিআরসি বাস,রামগঞ্জ থেকে আল আরাফাহ মিলিয়ে বেশ কয়েকটি রুটের বাস চলাচল করছে উক্ত সড়কে। এছাড়াও প্রতিদিন কমপক্ষে শতাধিক মাইক্রোবাসহ রোগীবহনকারী এ্যাম্বুলেন্স এমনকি হাজীগঞ্জ থেকে কমপক্ষে অর্ধশত বালুবাহী ট্রাক কচুয়ায় চলাচল করছে।
স্থানীয়ভাবে সিএনজি স্কুটার,অটোরিক্সার চলাচল আছেই। উক্ত সড়কের হাজীগঞ্জ অংশ ভালো থাকার কারনে উপরোক্ত সকল পরিবহন বেপরোয়া হয়ে পড়ে সেই সাথে অতিরিক্ত বাঁকের কারনে দুর্ঘটনার পরিমান স্বাভাবিক ভাবেই বেড়ে গেছে। বাঁকগুলো সরলীকরন করা হলেও পর্যাপ্ত বাঁক সরালীকরণ না কারনকে অনেকে দুর্ঘটনার কারন হিসেবে দেখছে।
এদিকে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, সড়কটির কচুয়া উপজেলার ডুমুরিয়া গ্রামের নিলাম পাড়া ব্রীজ, দীঘির পাড়, তেতিয়া গাছা ব্রীজ, ডুমুরিয়া গাউছিয়া ছোবহানিয়া আলীম মাদ্রাসা সংলগ্ন এলাকা, কালচোঁ বাজারের কালভার্ট মোড় ও কালচোঁ বাজার এলাকা, হাজীগঞ্জ উপজেলার পাতানিশ বারেকের ব্রীজ, পাতানিশ বাজার ও কাঁঠালি বাজার সংলগ্ন এলাকা, হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন বদরপুর ও হাজীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের কাজীরগাঁও ব্রীজ সংলগ্নস্থানে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটছে।
কালচোঁ বাজারের ব্যবসায়ী সুলতান স্টোরের মালিক ডুমুরিয়া গ্রামের বাসিন্ধা দিদার হোসেন, হাজীগঞ্জ উপজেলার পাতানিশ গ্রামের সালেহা বেগম ও পৌরসভাধীন বদরপুর গ্রামের জসিম উদ্দিনের জানান প্রায় দিনই দুর্ঘটনার খবর পাই কিংবা কিছু কিছু দুর্ঘটনা আমরা নিজেরা প্রত্যক্ষদর্শী হয়ে যাই।
এ স্থানীয়রা জানান, যে সবস্থানে দুর্ঘটনা বেশি ঘটে, সেই স্থানগুলোতে গতিরোধক, সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড, সড়কের দু' পাশের বিশেষ করে বাঁকের ঝোঁপ-ঝাঁড়গুলো পরিস্কার করে রাখলে দুর্ঘটনা অনেকটাই কমে আসবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
কচুয়া প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন জানান, কচুয়া থেকে হাজীগঞ্জ পর্যন্ত উক্ত সড়কে সপ্তাহে ৪/৫ টা দুর্ঘটনা ঘটেই ঘটে। মূলত এই দুর্ঘটনা ঘটে অতিরিক্ত গতি নিয়ে গাড়ি চলাচল আর বেশী বাঁকের কারনে। হাজীগঞ্জ সড়ক উপ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (সওজ) আতাউর রহমান বলেন, আমরা হাজীগঞ্জের ৬ কিলোমিটার কাজ করে ফেলেছি। এখন বরাদ্ধ পেয়ে কচুয়া এলাকার ৮ কিলোমিটারের কাজ শেষ করলে, আশা করি এসড়কে আর কাজ থাকবে না।
এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের চাঁদপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আতিকুল্লাহ্ ভূঞা মুঠোফোনে জানান, হাজীগঞ্জ-কচুয়া সড়কে কোন সমস্যা নেই। বিভিন্নস্থানে সাইন-সিগনালও রয়েছে। আমাদের ১৪ কিলোমিটারের মধ্যে ৮ কিলোমিটারের কাজ বাকি আছে। বর্তমানে এ ৮ কিলোমিটার মেইনটেনেন্স করে ঠিক রাখা হচ্ছে।