প্রকাশ : ০৭ জুন ২০২৩, ১৬:৫৫
ফরিদগঞ্জে ৪৫ মণ ওজনের ‘কালামানিক’! প্রস্তুত কোরবানির জন্য
প্রায় ৪৫ মণ ওজনের ‘কালামানিককে’ এবারও কোরবানির ঈদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।অস্ট্রেলিয়ান ফ্রিজিয়াম জাতের ষাঁড় গরুটি লম্বায় ১০ ফুট; বয়স ৫ বছর।
তবে ‘কালামানিককে’ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার ২নং বালিথুবা ইউনিয়নের পাটোয়ারী বাজারের সেন্টু মিয়া। গত দুই কোরবানির ঈদে এ ষাঁড় গরুটি বিক্রি করতে না পারায় এবার তাকে নিয়ে বড়ই দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তিনি। কারন এবার কোরবানির ঈদে ‘কালামানিকই’ হয়তো সারা দেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় গরু বলে দাবি করেন সেন্টু মিয়া। তাই, এত বড় গরু, এত দামে কোথায় বিক্রি করবেন সেই চিন্তাই তার সারাক্ষণ।
জানা যায়, প্রায় ৩ বছর আগে সেন্টু মিয়া ‘কালামানিককে তার মায়ের দোয়া হালিমা ডেইরি ফার্মে সংগ্রহ করে আনেন । এরপর থেকে তাকে কোনো প্রকার ক্ষতিকর ওষুধ ছাড়াই দেশীয় খাবার খাইয়ে লালন-পালন করে আসছেন। বর্তমানে কালামানিকের ওজন ১৮০০ কেজি বা (৪৫ মন)।
এদিকে, এ ‘কালামানিককে’ দেখতে বিভিন্ন এলাকার মানুষ এসে ভিড় করছেন।
গরুর মালিক সেন্টু মিয়া বলেন, ষাঁড়টি দেখতে কালো, তাই নাম রেখেছি ‘কালা মানিক’। সে খুবই শান্ত প্রকৃতির। উপজেলা প্রাণিসম্পদ দফতরের পরামর্শক্রমে কোনো প্রকার ক্ষতিকর ওষুধ ব্যবহার ছাড়াই দেশীয় খাবার খাইয়ে গরুটিকে লালন-পালন করেছি। সেন্টাু মিয়া বলেন, গত কোরবানিতে গরুটিকে ঢাকার একটি হাঁটে উঠানো হয়েছিল। তখন গরুটির ওজন ছিল প্রায় ৪০ মণ। আশানুরূপ দাম না পাওয়ায় গত বছর ষাঁড়টি বিক্রি করিনি। এবার গরুটির ওজন হয়েছে প্রায় ৪৫ মণ।
এ ‘কালা মানিককে’ লালন পালন করতে এ পর্যন্ত আমার লাখ-লাখ টাকা খরচ হয়েছে। গত বছর বিক্রি করতে না পারায় এবার দুশ্চিন্তায় আছি। বাজারে এত বড় গরুর চাহিদা কম থাকায় ক্রেতারা গরুটির দাম শুনে সরে দাঁড়ায়।
গত বছর গরুটির দাম ১২ লাখ টাকা বলেছিলো। এবার গরুটির দাম আরও বেশি বিক্রি করতে না পারলে অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন বলে জানান সেন্টু মিয়া।
গরুটি দেখবালের দায়িত্বে থাকা রেজাউল করিম বলেন, গরুটি দেখ বালের দায়িত্বে আমি গত তিন বছর নিয়োজিত। গরুটি কি আমি সব সময় দেশীয় জাতের খাদ্য খাওয়াই যাচ্ছি। কোনরকম ফরমালিন জাতীয় জিনিস এবং কোন কেমিক্যাল জাতীয় জিনিস খাওয়াই না। গতবছর ঢাকার একটি বাজারে গরুটি ১২ লক্ষ টাকা বলেছিলো, বিক্রি করি না। এবছর গরুটির ওজন আরো পাঁচ মনের মত বেড়ে গেছে। তার টার্গেট গরুটি ২০ লক্ষ টাকা বিক্রি করবেন। তিনি আরো বলেন, এত বড় গরু তিনি আর কখনো দেখেননি। কোন ব্যক্তি গরুটি কিনতে চাইলে আমাদের নাম্বারে যোগাযোগ করলে আমরা সরাসরি পৌঁছিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করব।
গরুটি একনজর দেখার জন্য প্রতিদিন বিভিন্ন জায়গা থেকে উৎসক জনতা পাটোয়ারী বাজার মায়ের দোয়া হালিমা ডেইরি প্রামে বিড় জমায়। উৎসক জনতার একাধিক ব্যক্তি বলেন, বিভিন্ন স্থানে এবং টেলিভিশন ও ইউটিউবে আমরা অনেক বড় বড় গরু দেখি। কিন্তু সেন্টু মিয়ার কালো মানিকের মত এত বড় গরু এখনো পর্যন্ত দেখি নাই। তারা বলেন, আমাদের বিশ্বাস গরুটির দাম ২০ লাখ টাকার বেশি বিক্রি করা যাবে।
গরুটির ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডাক্তার নাছির বলেন, গরুটিকে সম্পূর্ণ দেশীয় প্রজাতির খাদ্য খাবিয়ে তৈরি করা হয়েছে এবং সম্পূর্ণ রূপেই ১০০% হালাল খাবার খাওয়ানো হয়েছে। তিনি দাবি করেন দেশের বিত্তবান ব্যক্তিরা এই গরুটি কিনলে ঠকবেন না।